কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবি মানল রাজ্য, এখনও চলছে অবরোধ

আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত করার দাবিতে টানা চারদিন ধরে কুড়মি (Kurmi) সম্প্রদায়ের আন্দোলনে তোলপাড় জঙ্গল মহলের একটা বড় অংশ। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে রেল ও সড়ক পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ। টানা চারদিন আন্দোলনের পর তাঁদের দাবি মেনে কেন্দ্রকে পাঠানো CRI রিপোর্টের প্রতিলিপি আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দিল রাজ্য প্রশাসন। তবে তারপরও আন্দোলন প্রত্যাহার করা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল। কুড়মিদের ওই আন্দোলনের জেরে ক্ষতির মুখে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে নজর দিতে অনুরোধ জানাল ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস্ অ্যাসোসিয়েশন।

আন্দোলনের প্রধান নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো জানালেন, ওই চিঠি কুড়মি সমাজের বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে পড়ানো হবে। একইসঙ্গে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের সচিব সঞ্জয় বনসলকে আলোচনায় ডাকা হয়েছে। নিজেদের বৈঠকের পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় যদি বোঝা যায় যে সরকার তাঁদের সমস্ত দাবি মেনে নিয়েছে, তাহলেই সরকারকে ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ভাবা হবে।

চারদিন ধরে টানা অবরোধ কর্মসূচি চালাচ্ছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। অবশেষে তাঁদের দাবি মেনে বহু প্রতীক্ষিত সিআরআই রিপোর্টের প্রতিলিপি হাতে পেলেন কুড়মি জনজাতির আন্দোলনকারীরা। তাতে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রের কাছে সংশোধিত সিআরআই (CRI) রিপোর্টটি রাজ্য সরকার বৃহস্পতিবার পাঠিয়েছিল। তারপর শুক্রবার বিকালে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি অবরোধকারীদের হাতে আসে। রাজ্যের তরফে ছিলেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম সওকত, পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের বিডিও দেবজিৎ রায়, পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) পিনাকী দত্ত।

তবে তাতেও এই মুহূর্তে রেল অবরোধ বা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে না। কুড়মি সমাজের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের পরামর্শদাতা কমিটি ও বিশিষ্ট জনেদের সঙ্গে বসে সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি খতিয়ে দেখা হবে। যদি তাদের পক্ষে যায় তবেই তারা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাবেন, অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়ে কুশতাঁড় স্টেশন থেকে টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে ঝাড়গ্রামের খেমাশুলিতে অংশ নেওয়া নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে কুড়মিদের বিক্ষোভের জেরে রাস্তা বন্ধ থাকায় টানা কয়েক দিন ধরে আটকে রয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। ওষুধ, সবজি, ফল বোঝাই লরি ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে জাতীয় সড়কে। রাস্তায় অবরোধ থাকায় ওড়িশা, ঝাড়খান্ড থেকেও পণ্যবাহী লরি এরাজ্যে আসতে পারছে না। জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

Previous articleফরওয়ার্ড ব্লক ছাড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলম সাইরানি
Next articleত্রিপুরা বিজেপিতে ফের ভাঙন, বিধায়ক পদ ও অনুগামীদের নিয়ে দল ছাড়লেন বুরবা মোহন ত্রিপুরা