হিজাব না পরায় সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিলেন না ইরানের প্রেসিডেন্ট

হিজাব বিতর্কে উত্তাল মুসলিম রাষ্ট্র ইরান। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে চুল কেটে হিজাব পুড়িয়ে আন্দোলন করছেন সেখানকার মহিলারা। আন্দোলন থামাতে পাল্টা পুলিশের হামলায় শহিদ হয়েছেন তিরিশেরও বেশি মহিলা। হিজাব বিতর্ক যখন গোটা বিশ্বে গুরুতর আকার নিয়েছে ঠিক সেই সময় বিতর্ক আরো উসকে দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। হিজাব পরতে অস্বীকার করায় সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিলেন না তিনি। তাঁর এহেন সিদ্ধান্ত কার্যত স্পষ্ট করে দিল হিজাব আন্দোলনের বিষয়ে ইরান সরকারের অবস্থা।

বুধবার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম CNN-এর সঞ্চালিকা ক্রিস্টিয়ানে আমানপউরের সঙ্গে নিজের পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎকার বাতিল করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এদিন নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি আমানপউরকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা ছিল রাইসির। জানা গিয়েছে, সাক্ষাৎকার শুরু হওয়ার আগে আমানপউরকে প্রেসিডেন্টের এক সঙ্গী জানান, সাক্ষাৎকার চলাকালীন তাঁকে হিজাব পরার অনুরোধ জানিয়েছেন রাইসি (Ebrahim Raisi)। আর এতেই চটে যান সঞ্চালিকা। নম্র কিন্তু দৃঢ়ভাবে তিনি জানান, এই অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়। তারপরই রাইসি জানান, তিনি সাক্ষাৎকার দেবেন না।

এই বিষয়ে আমানপউর জানান, সাংবাদিক হিসেবে ইরানে গেলে তাঁকে হিজাব পরতে হয়। কারণ, এটাই সে দেশের নিয়ম। এর অন্যথায় সেখানে কাজ করতে দেওয়া হয় না। তবে যে দেশে হিজাব বাধ্যতামূলক নয়, সেখানে ইরানের কোনও আধিকারিকের সাক্ষাৎকার নিতে হিজাব পরবেন না তিনি। টুইটারে আমানপউর লেখেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইরানের (Iran) প্রেসিডেন্টের এটা প্রথম সাক্ষাৎকার হতে চলেছিল। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় অংশ নিতে নিউ ইয়র্কে আছেন৷ প্রায় এক সপ্তাহের পরিকল্পনা এবং ৮ ঘণ্টা ধরে স্টুডিওয় প্রস্তুতির পর আমরা সাক্ষাৎকারের জন্য তৈরি ছিলাম। কিন্তু, প্রেসিডেন্ট রাইসির কোনও পাত্তা পাওয়া যায়নি।” উল্লেখ্য, ইরানের রাজধানি তেহরানে নিজের শৈশব কাটিয়েছেন আমানপউর। ফার্সি ভাষায় তাঁর দখল যথেষ্ট।

উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। সেই হিজাব ঠিকমতো না পারার অপরাধে বছর বাইশের মাহসা আমিনিকে গত শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় পুরুষের তরফ। অভিযোগ, মাহসাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয়। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি তরুণীকে মারধর করা হয়নি। তবে গ্রেফতারের পরেই অসুস্থ হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর কোমায় চলে যান। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

Previous articleKurmi agitation: ১০০ ঘণ্টা পর রেল অবরোধ প্রত্যাহার করল কুড়মি সম্প্রদায়
Next articleফের সুন্দরবনে বাঘের হামলা! কাঁকড়া ধরতে যাওয়াই কাল মৎস্যজীবীর