কলকাতার প্রান্ত সীমায় পানিহাটি গ্রাম। পানিহাটির ভূমিপুত্র ড: অরুময় বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার হাতে গড়া ‘শৈলূষ’ বাচিক শিল্পে এক অগ্রগণ্য পথের পথিক।
শৈলূষের আয়োজনে শারদ উৎসব উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গল্প পাঠ, আবৃত্তি , শ্রুতি নাটক মন ভরিয়ে দিল সবার। এরই পাশাপাশি বাড়তি পাওনা ছিল অরুময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বই প্রকাশ। যে বই শুধুমাত্র পৃষ্ঠার অক্ষরে আবদ্ধ নেই। একটি মানুষের লড়াই , জীবন যন্ত্রণা এবং মানুষ থেকে বাচিক শিল্পী হয়ে ওঠার দলিল গাঁথা।
আরও পড়ুনঃ SSC-তে ১৪হাজারের বেশি শূন্য পদে নিয়োগে উদ্যোগের জন্য মমতাকে ধন্যবাদ অভিষেকের
এই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি হিসেবে আসেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ সত্যম রায়চৌধুরী । ছিলেন বিশিষ্ট লেখক নবকুমার বসু। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষাল এবং তরুণ গোস্বামী। আর ছিলেন প্রযোজক সপ্তর্ষী প্রকাশনার পক্ষে সৌরভ মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ কাজ করলে ভুল হয়: ত্রিধারা থেকে ৪০০-র বেশি পুজোর উদ্বোধন করে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
অরুময় বন্দ্যোপাধ্যায় আশৈশব আবৃত্তি চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার গড়ে ওঠা বেড়ে ওঠা আকাশবাণী এবং দূরদর্শনের আঙিনায়। কর্মসূত্রে তিনি আকাশবাণী এবং দূরদর্শনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘকাল দূরদর্শনের সফল প্রযোজক হিসেবে নিজের মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন, জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এমনকি খুব সম্প্রতি অবসর গ্রহণের পরও বাচিক শিল্পর-সঙ্গে কিন্তু তার গাঁটছড়া আজও অটুট।
আরও পড়ুনঃ অবশেষে স্বস্তি: পরিবহনমন্ত্রীর আশ্বাসে ৭দিন পর উঠল SBSTC-র অস্থায়ী বাসকর্মীদের ধর্মঘট
অরুময় ছোটবেলা থেকেই আবৃত্তি চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। রবীন্দ্রভারতী থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন নাটক নিয়ে। নাটক এবং আবৃত্তি চর্চা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করেছেন তিনি। তার গবেষণার ফসল হিসেবে নানান কাজ ইতিমধ্যেই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও সমাদৃত। আর তাকে যিনি সঙ্গত দিয়েছেন তার সহধর্মিনী স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ও আকাশবাণী ও দূরদর্শনের প্রতিষ্ঠিত শিল্পী।
অরুময়ের প্রথম বই ‘আবৃত্তির সহজ পাঠ’ যা বাংলাদেশের বাংলা প্রকাশ থেকে প্রকাশিত। এবং সবচেয়ে বড় কথা পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হওয়া প্রথম নাট্য বিদ্যালয় গোবরডাঙ্গা শিল্পায়ন তাদের নাট্য বিদ্যালয়ে এই বইটি পাঠ্যপুস্তক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। তার লেখা দ্বিতীয় বইটি ‘না ভাঙ্গা আয়না’ মধ্যবিত্ত সমাজের একটি প্রতিফলন। একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণ তুর্কি অরুময় কিভাবে লড়াই করে জীবন যুদ্ধে সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তারই প্রতিফলন এই বইটি। শুধুমাত্র বাচিক শিল্প নয় , বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারে তার দীর্ঘদিন ধরে নিরলস পরিশ্রম আজও অব্যাহত। তার আত্মজীবনীমূলক একটি দলিল বলা যেতে পারে এই ‘না ভাঙ্গা আয়না’।
আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টের ধাক্কা খেলো ঠাকরে গোষ্ঠী, শিবসেনা কার? সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন
শৈলূষের শিল্পীদের গল্প পাঠ, শ্রুতি নাটক, আবৃত্তির মধ্য দিয়ে জমজমাট ছিল সন্ধ্যা। শুধুমাত্র তাই নয় সংস্থার এক সদস্য ম্যাজিক দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় । সংগীত পরিবেশন করে শৈলূষের এক সদস্যা। সবমিলিয়ে পুজোর প্রাক্কালে জমজমাট একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করল পানিহাটির শৈলূষ। বাচিক শিল্পের প্রচার ও প্রসারে শৈলূষের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।