লটারিতে জেতা ২৮ কোটি টাকার বাড়ি ৪০ কোটিতে বিক্রি করতে বাধ্য হলেন দম্পতি!

শুধু বাড়ি জিতলেই তো হল না, নতুন পাড়ায় পাকাপোক্ত ভাবে থাকা শুরু করতে সময় লাগে।সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিস্তর খরচ।

কপাল জোরে একটি বাড়ির মালিকানা পেয়েছিলেন। তাও যে সে বাড়ি নয়, ২৮ কোটির বাড়ি ! লটারিতে বাড়িটি জিতেছিলেন এক দম্পতি।সেলেবদের পাড়ায় রীতিমতো টক্কর দেওয়ার মতো বাড়িতে পুরো ২ মাসও কাটাতে পারলেন না তারা।২৮ কোটির বাড়ি ৪০ কোটিতে বিক্রি করে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।

গত ১২ অগাস্ট লটারিতে তাদের ভাগ্য ঘুরে গিয়েছিল। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই উত্তম বলেছিলেন, ‘‘এখনও নিজেকে চিমটি কেটে দেখতে ইচ্ছে করছে, ঘুমিয়ে আছি কি না। কারণ কর্নওয়ালের এই এলাকায় বাড়ি করা আমার বহুদিনের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হবে ভাবতে পারিনি।’’

শুধু বাড়ি জিতলেই তো হল না, নতুন পাড়ায় পাকাপোক্ত ভাবে থাকা শুরু করতে সময় লাগে।সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিস্তর খরচ।শুধুমাত্র এই কারণে উত্তমকে অতিরিক্ত ৪৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল লটারি সংস্থার তরফে।কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না।লটারিতে জেতা বিলাসবহুল বাড়িটি আট সপ্তাহের মধ্যেই  বিক্রির জন্য একটি অনলাইন সাইটে বিজ্ঞাপন দেন উত্তম।পরিবেশবান্ধব বাড়িটির ছাদ থেকে শুরু করে দেওয়াল সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিশেষত্ব।বাড়িটির দেওয়াল তৈরি হয়েছে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করা খবরের কাগজ দিয়ে। ছাদ ঘাস, শ্যাওলা আর ফুলের কেয়ারি দিয়ে ঢাকা।মানান সই  তার অন্দরসজ্জা। ছেলে আরন এবং স্ত্রী রাকিকে নিয়ে তিন সদস্যের ছোট পরিবার উত্তমের। চার বেডরুমের বাড়িটি তাঁদের পক্ষে যথেষ্ট বড়।

নিশ্চয়ই ভাবছেন, আর কী রয়েছে বাড়িটিতে? জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে রয়েছে বড় হল ঘর, বসার ঘর, খাবার ঘর এমনকি ছোট একটি স্টাডি রুমও। পরিবেশবান্ধব ওই বাড়িটি যেমন দেখতে সুন্দর, তেমনই চোখ জুড়িয়ে যাবে তার চারপাশের নৈসর্গিক দৃশ্যের দিকে তাকালে। বাড়িটির লাগোয়া প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জমি রয়েছে। বাড়ির সামনে অনেকচা অংশ জুড়ে শুধুই সবুজের সমারহো। সেই এলাকা পেরোলেই দেখা যাচ্ছে বয়ে যাচ্ছে ক্যামেল নদী। বাড়ির উঠোনে আরামকেদারায় বসে নদীর দিকে তাকিয়েই কেটে যবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

বাড়ির উল্টো দিকেই থাকেন বিখ্যাত শেফ গর্ডন রামস। আশপাশে আছে বেশ কিছু হলিউড তারকার অবসরযাপনের রসদ।পড়শি হিসাবে তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ পাওয়াও খুব সহজ। কিন্তু তার পরও সেই বাড়ি ছেড়ে সপরিবারে সম্প্রতি লেস্টারশায়ারে ফিরে এসেছেন উত্তম। পুরনো জায়গায় ফিরে জানিয়েছেন, হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন তিনি।

৫৮ বছরের উত্তম এবং তাঁর স্ত্রী রাকি জানিয়েছেন, অভিজাত পাড়ায়, দামি বাড়িতে থাকার জন্য যে টাকা প্রয়েজন সেই খরচ জোগানোর ক্ষমতা নেই তাদের। উত্তম জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বার হলেই হাতের নাগালে তারকারা। কিন্তু তার মতো একজন সাধারণ মানুষের এই পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া মোটেই সহজ নয়।সেটা দুদিনেই বুঝতে তাদের অসুবিধা হয়নি।দম্পতি স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁরা ওই বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখলেন ওই এলাকায় ওই বাড়িতে থাকার জন্য যে খরচ হবে এবং বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা তাঁদের ওপর ভবিষ্যতে বোঝা হয়ে উঠবে।অনেকে বলছেন, বাড়িটি তারা স্রেফ ছুটি কাটানোর জন্যও  রেখে দিতে পারতেন। কিন্তু  বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ জোগানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

 

Previous articleDengu : বাংলাদেশের মহিলাদের আক্রান্তের হার বেশি
Next articleভারতীয় দলে যোগ দিয়ে আবেগপ্রবণ শামি, প্রস্তুতি ম‍্যাচে অজিদের বিরুদ্ধে নিলেন তিন উইকেট