দীপাবলির প্রাক্কালে বিষ ছড়াল দিল্লির বাতাসে, কৃষকদের খড় পোড়ানো নিয়ে বাড়ছে সমস্যা

রাজধানীতে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে পাঞ্জাবের কৃষি জমিতে খড় পোড়ানোকে। পাঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড় থেকে কিছুটা দূরে মোহালির মাঠে খড় পোড়ানো শুরু করেছে কৃষকরা।

রাজধানীর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে বিষ। দিল্লি (Delhi) নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। বাতাসের গুণমান নিয়ে চিন্তায় সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (Central Pollution Control Board)। সিস্টেম অফ এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড ওয়েদার ফোরকাস্টিং অ্যান্ড রিসার্চ (System of Air Quality and Weather forecasting and research) অনুসারে, দিল্লিতে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (Air Quality Index) হল ২৬২, যা মোটেই সন্তোষজনক নয়।

সামনেই দীপাবলি (Diwali), আলোর উৎসবে থাকে আতশবাজির রোশনাই যা থেকে পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা বাড়ে। আর দিল্লিতে এমনিতেই বায়ু দূষণের(Air pollution) সমস্যা বেশি তাই দীপাবলীর প্রাক্কালেই এই নিয়ে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়। গত ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড করা গড় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স হল ২৬২৷ শুক্রবার দিল্লির অনেক এলাকায় বাতাসের মান খুব খারাপ স্তরে ছিল বলে পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (Pollution Control Board) সূত্রে জানা যায়। বাতাসের গুণগত মানের তথ্য সহ, এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন বুধবার আধিকারিকদের গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান (GRP) -এর দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং খোলা খাবারের দোকানগুলোতে তন্দুরে কয়লা এবং কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ। প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি ছাড়া ডিজেল জেনারেটর ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।জিআরএপি-এর দ্বিতীয় ধাপে বলা হয়েছে নিয়ম করে প্রত্যেকদিন রাস্তা পরিষ্কার এবং রাস্তায় জল দেওয়া আবশ্যক। যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল আটকাতে এবার পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য বাতাসের গুণগত মান নানা রিডিং এর উপর নির্ভর করে বোঝা যায়। যেমন শূন্য থেকে থেকে ৫০ এর মধ্যে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ‘ভাল’ বলে বিবেচিত হয়।

কোয়ালিটি ইনডেক্স চার্ট

৫১ থেকে ১০০ – সন্তোষজনক অবস্থা
১০১ থেকে ২০০ – মাঝারি অবস্থা
২০১ থেকে ৩০০ – খারাপ অবস্থা
৩০১ থেকে ৪০০ – অত্যন্ত খারাপ অবস্থা
৪০১ থেকে ৫০০ -গুরুতর অবস্থা

এখানেই শেষ নয় রাজধানীতে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে পাঞ্জাবের কৃষি জমিতে খড় পোড়ানোকে। পাঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড় থেকে কিছুটা দূরে মোহালির মাঠে খড় পোড়ানো শুরু করেছে কৃষকরা। তবে, পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টি সরকার বলছে যে তারা খড় পোড়ানো বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পুরোপুরি বন্ধ না করা গেলেও অন্ততপক্ষে ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি করা হয়েছে। কৃষকদের খড় পোড়াতে বাধা দেওয়ার জন্য, একটি ওয়ার রুমও স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খড় পোড়ানো পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং তারপরে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানানো হয়। এরপর প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কৃষকদের আগুন জ্বালাতে বাধা দেয়। তবে অনেক জায়গায় এই দলগুলো পৌঁছায় না। গত আট থেকে নয় দিনে পাঞ্জাবে খড় পোড়ানোর ঘটনা বহুগুণ বেড়েছে। এখনও ৮৫ শতাংশ কৃষক তাদের ক্ষেত থেকে খড় সরাননি। এমন পরিস্থিতিতে খড় পোড়ানোর ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে । খালি দীপাবলীর সময় বায়ু দূষণের মাত্রা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে তা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা।

 

Previous articleশুরুতেই ধাক্কা, ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুখ থুবড়ে পড়ল অস্ট্রেলিয়া
Next articleবাংলা নয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে