পরিবারের স্বচ্ছলতার কথা ভেবে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর যুবক। গুজরাটেই সোনা-রুপোর কাজ শিখেছিলেন। রবিবার ছুটির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে মোরবির মচ্ছু নদীর উপরের কেবল ব্রিজ দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা দেখতে যাওয়াই কাল হল বর্ধমানের ওই যুবকের। যাওয়ার সময়েও কেউ টের পাননি এমন বিপদ আসতে চলেছে। রবিবার সন্ধ্যায় হুড়মুড়িয়ে আচমকাই ভেঙে পড়ল ঝুলন্ত সেতু । আর তাতেই প্রাণ গেল বঙ্গসন্তানের।
আরও পড়ুন:ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই খুলে দেওয়া হয় সেতু, গুজরাত বিপর্যয়ে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টায় বিজেপি সরকার
জানা গেছে, নিহত হাবিবুল শেখ, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েত কেশববাটি এলাকার বাসিন্দা। ছোট থেকে বেশ মেধাবী।তবে অভাব প্রতি মুহূর্তে স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মেধাবী ছাত্র হাবিবুলকে একাদশ শ্রেণির পরই পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়। পরিবার সূত্রে খবর, প্রায় মাস দশেক আগে কাজের সূত্রে গুজরাটে যায় হাবিবুল। সেখানে সোনা-রুপোর কারিগরের কাজ পেয়েছিলেন তিনি। আগে থেকেই সেখানে কাজ করতেন হাবিবুলের কাকা। তাঁর কাছেই থাকতেন সেতু বিপর্যয়ে নিহত যুবক। রবিবার ছুটি ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন গুজরাটের মোরবির মচ্ছু নদীর উপরের ব্রিজে। আর তখনই ভেঙে পড়ে সেতু। আর পাঁচজনের মতো মচ্ছু নদীতে তলিয়ে যান হাবিবুল। বেশ কিছুক্ষণ নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হয় হাবিবুলের নিথর দেহ।এরপর গভীর রাতে তাঁর কাকাই বাড়িতে ফোন করে বর্ধমানের বাড়িতে দুঃসংবাদ জানান।যা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে হাবিবুলের পরিবার।

নিহত হাবিবুলের বাবা মহিবুল শেখ বলেন, “ছেলে সোনার কাজের জন্য গুজরাটে গিয়েছিল। সেখানেই কাকার কাছে থাকত। রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে কেবল ব্রিজ দেখতে গিয়েছিল। তারপরেই জানতে পারলাম ও আর নেই।” ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হাবিবুলের বাবা। চোখের জল বাঁধ মানছে না তাঁর। পরিবারের অন্যান্যদের চোখেও জল। আপাতত দেহ গ্রামে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কেশববাটির বাসিন্দারা।
এদিকে নিহত হাবিবুলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন পূর্বস্থলীর আইসি। সবরকম প্রয়োজনে হাবিবুলের পরিবারের পাশে থাকবে রাজ্য সরকার বলেও জানানো হয়েছে। আজ একটি টুইটে একথা জানান তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।

IC Purbasthali andPolice officials have visited his Residence and Govt of WB is providing full necessary cooperation to them. pic.twitter.com/Vih91fuUds
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 31, 2022