বায়ু দূষণ: সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশ, জোড়-বেজোড় কার্যকর হতে পারে দিল্লিতে

বায়ুদূষণ(air pollution) ভয়াবহ আকার নিয়েছে দিল্লিতে এই পরিস্থিতিতে আগামী ৫ নভেম্বর থেকে দিল্লির সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল দিল্লির আম আদমি পার্টির(AAP) সরকার। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান-এর সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল(Arvind Kejriwal) বলেন, পঞ্চম শ্রেণির উপরে দিল্লিতে সমস্ত বহিরঙ্গন কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। দিল্লির দূষণের কথা বিবেচনা করে ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে জোড়-বেজোড় ফর্মুলা প্রয়োগের কথাও ভাবা হচ্ছে।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না শিশুদের কষ্ট হোক। একই সঙ্গে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলগুলোকেও বলা হয়েছে, যতদূর সম্ভব অনলাইনে ক্লাস চালানোর জন্য, যাতে শিক্ষার্থীদের স্কুলে না আসতে হয়। বায়ু দূষণের কারণে দিল্লিতে বৈদ্যুতিক এবং সিএনজি ট্রাক ছাড়া অন্য ট্রাকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাককে এর মধ্যে ছাড় দেওয়া হয়েছে। দিল্লি-রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর দূষণের বিষয়ে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, পাঞ্জাবের খড় পোড়ানোর জন্য আমরা দায়ী। এ বিষয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না। বাকি রাজ্যগুলির জন্য, কেন্দ্রীয় সরকার এগিয়ে আসুক। দিল্লির বাতাস খুব খারাপ হয়ে গেছে, মানুষের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এর অনেক দিক রয়েছে এবং এটি সমগ্র উত্তর ভারতের সমস্যা।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দিল্লি, চরখি দাদরি, জিন্দ, মানেসার, ফরিদাবাদ সব জায়গায় ভয়াবহ অবস্থা। এর জন্য আম আদমি পার্টি দায়ী নয়। এক রাজ্যের বাতাস এক রাজ্যে থাকে না। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। পাঞ্জাব ও দিল্লিতে আমাদের সরকার আছে। এটা আঙুল তোলা বা গালি দেওয়ার সময় নয়। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান খড় পোড়ানো ইস্যুতে বলেন, আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসেছে খুব কম দিন। তবে এই সমস্যা থেকে আমরা পালাবো না। আগামী ৩ বছরে আমরা এই সমস্যার সমাধান সম্ভব করে তুলবো। অন্যদিকে, দিল্লি-রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)। একই সঙ্গে দূষণ রোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এনএইচআরসি ১০ নভেম্বর পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লির মুখ্য সচিবদের তলব করেছে। ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে দাখিল করা একটি পিটিশনের শুনানি করতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

দেশের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত ও বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ এই বিষয়ে শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছে। বায়ু দূষণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী শশাঙ্ক শেখর ঝা।ক্রমবর্ধমান দূষণ এবং দৃশ্যমানতা হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা জেলা প্রশাসন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত স্কুলকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করার নির্দেশ জারি করেছে। ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে চিকিৎসকরা মানুষকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। দিল্লির হাসপাতালে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।বায়ু দূষণ মান নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (সিএকিউএম) আদেশে বলা হয়েছে যে রাজ্য সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, অ-জরুরি বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

Previous articleচন্দননগর ও চাঁপদানির মানুষের জন্য সুখবর শোনালেন পরিবহন মন্ত্রী
Next articleশিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়েই অ্যাপ ক্যাব চালাচ্ছেন মা, রিল নয় রিয়েল লাইফের আসল নায়িকা