ব্যর্থ নোটবন্দি: বাজারে নগদ বেড়েছে ৭১ শতাংশ বেশি, বর্ষপূর্তিতে মোদিকে তোপ বিরোধীদের

মোদি সরকারের(Modi Govt) নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ৬ বছর পূর্তি হল মঙ্গলবার। ২০১৬ সালের আজকের দিনে রাতারাতি বাতিল হয়ে যায় ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট। এই সিদ্ধান্তের পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য ছিল অর্থনীতিতে(Economy) দুর্নীতি ও কালো টাকা ও সন্ত্রাসে লাগাম টানা। সেই সঙ্গে, ভারতীয় অর্থনীতিতে নগদের ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেনের(Digital Transaction) পরিমাণ বাড়ানোর। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, কোনও উদ্দেশ্যই সফল হয়নি বরং নোটবন্দির সময় থেকে বাজারে নগদ বেড়েছে ৭১ শতাংশের বেশি।

আরবিআই-এর প্রকাশিত অর্থ সরবরাহের পাক্ষিক তথ্য অনুসারে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিকদের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নোট বাতিল করার সময়ে, ভারতীয় বাজারে যে নগদ অর্থ চালু ছিল তার তুলনায় প্রায় ৭১.৮৪ শতাংশ বেশি। নিশ্চিতভাবে মোদি সরকারের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক তথ্য। রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর বাজারে ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকার নগদ মুদ্রা প্রচলিত ছিল। বর্তমানে সেই টাকার অংকটা দাঁড়িয়েছে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি! অর্থাৎ, সেই সময়ের তুলনায় বর্তমানে ভারতের জনসাধারণের লেনদেন, পণ্য ও পরিষেবা কেনাকাটার জন্য ব্যবহৃত ৭১.৮৪ শতাংশ বেশি নোট এবং কয়েন ব্যবহার করেন।

এদিকে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি মোটেও সুবিধাজনক নয়। ডলার প্রতি টাকার দাম বাড়ছে প্রতিদিন। অন্যদিকে আকাশ ছিয়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে প্রতিদিন। বিরোধীরা প্রত্যেকেই জানিয়েছে দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দেওয়ার প্রথম ধাপ ছিল নোটবন্দী। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “নোটবাতিলের মধ্যে দিয়ে বিজেপি-র এত লাভ হয়েছে, সারা পৃথিবীতে একজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্য দিয়ে একটি দল মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ঝরিয়ে, দেশের একশো শতাংশ মানুষকে চার ঘণ্টার নোটিশে লাইনে দাঁড় করিয়ে নিজেদের দলের সম্পত্তি বাড়ানোর যে প্রক্রিয়া, এর থেকে সফল আর কিছু হতে পারে নাকি?”

রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “নরেন্দ্র মোদির আরেকটি মিথ্যাচার ছিল নোটবন্দি। ছ’বছর পর আরো স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশা। নোটবন্দি ছিল একটি অপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। কালো টাকা উদ্ধার হয়নি বরং এই সময় তা আরো বেড়েছে, জাল নোটে লাগাম টানা যায়নি রিপোর্ট বলছে আগের তুলনায় জাল নোট অনেক বেড়ে গিয়েছে দেশে। ক্যাশলেস ইকোনমির যে গল্প দেশবাসীকে শোনানো হয়েছিল সেটাও দেখা যাচ্ছে ভাঁওতা।”

পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ট্যুইট করে লিখেছন, “নোটবন্দী ‘PayPM’-এর একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ ছিল যাতে তার ধনকুবের বন্ধুদের মধ্যে ২-৩ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা ধ্বংস করে ভারতের অর্থনীতিকে একচেটিয়া আধিপত্য করতে পারে।” সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মোদি যা যা ঘোষণা করেছেন তাঁর কোনটাই মেলেনি। তিনি আরও বলেন যে বাজারে নগদের ট্রানজাকশন বেড়েছে। ডিজিটাল লেনদেন বাড়েনি, কাউন্টারফিট কারেন্সি কমেনি, কালো টাকাও ফেরেনি। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা জুমলা।”

Previous articleভারতীয়দের কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ গায়ক নোবেলের
Next articleসানিয়া-শোয়েবের দাম্পত্য জীবনে ভাঙন? সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’জনের পোস্ট ঘিরে জল্পনা