পঞ্চায়েত দখল নিয়ে দলীয় বিধায়কের মন্তব্যে অসন্তুষ্ট অভিষেক জানালেন অশান্তি পাকালে কড়া ব্যবস্থা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিতেই হবে। কোনও দলকেই অশান্তি পাকাতে দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন

রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের মতো প্রস্তুতি শুরু করলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে ঠিক কবে হতে চলেছে পঞ্চায়েত ভোট, তার কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তবে কমিশনের তরফেও তৎপরতা শুরু হয়েছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ইতিমধ্যেই একাধিক কর্মসূচি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, যে কোনও সময় ভোট ঘোষণা হলো তাঁরা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

এদিকে, পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার আগেই “দখলদারির দাওয়াই”! প্রকাশ্য সভা থেকে শাসক দলের এক বিধায়ক কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “প্রতিবার যেভাবে পঞ্চায়েত দখল করেছি, এবারও সেভাবেই দখল করব। কে কী বলল, কে কী করল দেখার দরকার নেই।” ভাইরাল মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর সেই বার্তা। এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস হবে বলে চড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস হলে ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেবেন।”

যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিতেই হবে। কোনও দলকেই অশান্তি পাকাতে দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, পঞ্চায়েতে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করা হলে রাজনীতির রং না দেখে কড়া হাতে দমন করা হবে। দলের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর নাম না করে অভিষেকের হুঁশিয়ারি, হিম্মত থাকলে কেউ পঞ্চায়েতে গণ্ডগোল করুক। যে দলেরই হোক তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্যের সমস্ত দলের কাছেই অ্যাসিড টেস্ট। গ্রামবাংলার এই ভোটকে সামনে রেখে প্রতিটি দল লোকসভার আগে নিজেদের শক্তি যাচাইয়ের সুযোগ পাবে। ২০১৮ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক সতর্ক। পঞ্চায়েতের আগে টিকিট বণ্টনকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন গোষ্ঠীদ্বন্দ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেদিকে নজর, অন্যদিকে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ ভোট করে লোকসভার আগে নিজেদের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখারও তাগিদ রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। তাই অনেক আগে থেকেই প্রতিটি জেলা নেতৃত্বর সঙ্গে বৈঠক করে অভিষেক স্পট বার্তা, পঞ্চায়েত ভোটে কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। মানুষের কাছে গিয়ে জনসংযোগ বাড়িয়ে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে জিততে হবে। গা-জোয়ারি চলবে না।

এদিন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী চয়নের বিষয়টিও স্পষ্ট করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, শুধু স্বচ্ছভাবমূর্তি হলেই চলবে না, তার পাশাপাশি কাজ করার দক্ষতা, সারাবছর মানুষের পাশে থাকার মানসিকতা আছে এমন লোকেদেরই এবার পঞ্চায়েতে টিকিট দেবে তৃণমূল।

আরও পড়ুন- বাড়ির সামনে শাসক দলের জমায়েত, সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে শুভেন্দু

 

 

 

Previous articleবাড়ির সামনে শাসক দলের জমায়েত, সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে শুভেন্দু
Next articleফ্রিজে মৃ*ত শ্রদ্ধা, শয্যায় মাতামাতি অভিযুক্ত আফতাবের !