Sunday, May 18, 2025

সোমনাথ বিশ্বাস, হলদিয়া

সকালে হলদিয়ায় চায়ের আড্ডা থেকে স্থানীয় যুবকদের কাছে বঞ্চনার কথা শুনে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ছুটে গিয়েছিলেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বের এই ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুরে বিদ্যুতের খুঁটি ঢোকেনি। স্বাধীনতার এতবছর পরেও অন্ধকারে ডুবে গ্রামবাসীরা। দেখে অবাকই হলেন কুণাল। গ্রামে দাঁড়িয়েই কুণাল সংশ্লিষ্ট দফতরের শীর্ষ বিভাগের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। ব্যাস, ম্যাজিকের মতো কাজ। কয়েক ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গ্রামে এসেও কথা বলে যান সংশ্লিষ্ট দফতরের দুই আধিকারিক। শুধু তাই নয়, ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রামে ইন্সপেকশনও করা হবে বলেও জানান ওই দুই আধিকারিক। তাঁদের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ দায়িত্ব পাওয়ার পর কলকাতা থেকে জেলায় কার্যত “ডেইলি প্যাসেঞ্জার” হয়েছেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ। জেলার শিল্পনগর হলদিয়া টাউনশিপের ওপর একটি ঘরও নিয়েছেন তিনি। গতকাল কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা শেষে হলদিয়াতে সেই ঘরেই রাত কাটান কুণাল। এরপর সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন প্রাতঃভ্রমনে।

রবিবার ছুটিরদিন সকালে হলদিয়া টাউনশিপের উপর মাখনবাবুর বাজারে একটি দোকানে চা খেতে ঢোকেন কুণাল। তখনই কিছু স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা হয়। চায়ের আড্ডাতেই তাঁরা কুণালকে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগ করেন। পুরসভা এলাকার অনুন্নয়নের ছবি তুলে ধরেন।

স্থানীয় ওই যুবকদের অভিযোগ, হলদিয়া শিল্পতালুক হলেও
পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ এখনও বিদ্যুতের আলো দেখেননি। স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে কোথাও মাটির কাঁচা রাস্তা, কোথাও আবার আবার অবহেলায় পড়ে রয়েছে অর্ধনির্মিত কংক্রিটের রাস্তা। ভোট আসলেই রাজনৈতিক নেতাদের শুধু প্রতিশ্রুতির বন্যা। এমন অনুন্নয়ন বঞ্চনা এবং অবহেলার জন্য স্থানীয় মানুষজন সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে পুরসভার এই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অনুন্নয়নের জন্য পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদকের দিকেও আঙুল তুলেছেন তাঁরা।

এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই নিজের ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেই
ওই যুবকদের সঙ্গে হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর গ্রামে যান কুণাল। এই গ্রামের প্রান্তেই হলদিয়া বন্দর। সাতসকালে কুণালকে হাতের কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা বলতে থাকেন, “দাদা এবার কিছু একটু করুন, আমরা খুব কষ্টে আছি। শুধু ভোটের সময় নেতারা আসে, প্রতিশ্রুতি দেয়। আর ভোট চলে গেলে কেউ ফিরেও তাকায় না।”

কুণাল গ্রামের ভিতর হাঁটতে হাঁটতে সেই দুর্দশার ছবি দেখেন। এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে দাঁড়িয়েই বিদ্যুতের জন্য সংশ্লিষ্ট শীর্ষ বিভাগের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বিষয়টি অবিলম্বে দেখার অনুরোধ জানান। এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য বলেন।

শুভেন্দু অধিকারীর জন্য গোটা পূর্ব মেদনীপুর এবং এই হলদিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল যে ঘুঘুরবাসা হয়েছিল, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। ফেসবুক পোস্টে কুণাল লেখেন, “ভাবা যায়? দুটি গ্রাম। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও যাদের বিদ্যুৎ আসেনি। হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর। দীর্ঘ বামজমানা এবং পরবর্তীকালে অধিকারীরাজ, বারবার আবেদন নিষ্ফলা।
কাল সন্ধেয় কাঁথি থেকে হলদিয়া চলে এসেছি। সকালে মাখনবাবুর বাজার মোড়ে বসে চা খাচ্ছিলাম। নাগরিকদের সঙ্গে কথোপকথন। সেই সময়ই অভিযোগ, দুই গ্রামে বিদ্যুত নেই। রাস্তাও খারাপ। শুভেন্দু এবং শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ। অতঃপর তাঁদের অনুরোধে তাঁদের গ্রামে গেলাম। বন্দরের জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা আছে শুনলাম, কিন্তু তাতেও অন্যত্র বিদ্যুত আছে। সবুজ গ্রাম, একাধিক পুকুর, শান্ত সুন্দর লাগল। সকলের অনুরোধ, যুগে যুগে সবাই শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবার তৃণমূল বিদ্যুত আনতে সক্রিয় হোক। দেখলাম। শুনলাম। দেখা যাক কী করা যায়।”

 

Related articles

হায়দরাবাদের চারমিনারের সামনে অগ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে দমকলের ১১ ইঞ্জিন!

রবিবাসরীয় সকালে হায়দরাবাদের চারমিনারের সামনে গুলজার হাউসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Massive fire near Hyderabads Charminar)। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের ১১টি...

কলকাতার রানিকুঠিতে যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু, রানিদিঘি থেকে উদ্ধার দেহ!

রবিবাসরীয় সকালে কলকাতার রানিকুঠি এলাকায় এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতের নাম অভিক দে (Avik Dey),...

মৌসুমী বায়ু- ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ইনিংস, সপ্তাহ জুড়ে ঝড়বৃষ্টির দুর্যোগ জেলায় জেলায় 

কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়া আর কয়েক পশলা বৃষ্টিতে শনিবার রাত থেকে তাপমাত্রার পারদ সামান্য কমেছে। রবিবাসরীয় সকালে দক্ষিণবঙ্গের (South...

‘à§­ – à§©à§® – à§«à§«’, উৎপল সিনহার কলম 

মনের নাম মধুমতী আর চোখের নাম আয়না আমি দুহাতে চোখ ঢেকে রাখি মন যেন জানা যায় না ...চোখ দেখলেই নাকি মনের ভাব...
Exit mobile version