অমিতাভকে ‘জাতীয় আইকন’ বললেন শত্রুঘ্ন, বাংলা-হিন্দি গানে মঞ্চ মাতালেন অরিজিৎ

একজন কাঁপিয়েছেন ৯০ এর দশক , গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। অন্যজন এই মুহূর্তে ভারতীয় সংগীত জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তারকা।

‘খামোশ’ শব্দ দিয়ে বক্তব্য শুরু করতে পারেন একজনই। ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও (28th Kolkata International Film Festival) তার ব্যতিক্রম হল না। মঞ্চে তখন তারকার মেলা। কানায় কানায় পূর্ণ নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম (Netaji Indoor Stadium)। সেসবের মাঝেই ভারতীয় সিনেমার (Indian Cinema) মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনকে (Amitabh Bachchan) ন্যাশনাল আইকন সম্বোধন করলেন শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha)। এখানেই শেষ নয় বর্ষীয়ান অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার প্রতিটি কথাতে ছিল বড় চমক ।

চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে শত্রুঘ্ন বলেন, “জনপ্রিয়তার নিরিখে শাহরুখের মতো তারকাকে এবার থেকে ন্যাশনাল হিরো বলে ডাকা উচিত।” তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্নের গলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বন্দনা তো ছিলই তবে বিশেষভাবে তিনি উল্লেখ করেন বাংলার ধন্যি মেয়ের কথা। কারণ সিনেমা জগতে আসার আগে থেকেই জয়ার (Jaya Bachchan) সঙ্গে পরিচয় শত্রুঘ্ন সিনহার। সেকথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি। ‘বিয়ের ফুল’ ছবির নায়িকাকে উত্তরীয় দিয়ে আগেই বরণ করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়(Prosenjit Chatterjee) । এবার রানি মুখোপাধ্যায়ের (Rani Mukherjee) উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শোনা যায় শত্রুঘ্নের মুখে। মঞ্চে উপস্থিত সঙ্গীত জগতের দুই মহাতারকা। একজন কাঁপিয়েছেন ৯০ এর দশক , গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। অন্যজন এই মুহূর্তে ভারতীয় সংগীত জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তারকা। গান গাওয়ার অনুরোধ গেল দুজনের কাছেই। বলিউড বাদশা কিং খানের উপস্থিতিতেই যখন কুমার শানু (Kumar Sanu) গাইলেন ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সনম’ , তখন আপামর দর্শক ফিরে গেছেন ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’র নস্টালজিয়ায়। মৃদু হাসি শাহরুখের (Shahrukh Khan) চোখে মুখেও খুশি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কুমার শানু তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বলে দেন এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রচেষ্টা আর বিনোদন জগতের সেলিব্রেশনের উদ্যোগ। ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের(KIFF) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ততক্ষণে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে গেছে। অনুষ্ঠান শুরু হওয়া থেকেই বারবার চোখ যাচ্ছিল মুর্শিদাবাদের ছেলেটার দিকে। যাঁর লাইভ স্টেজ পারফরম্যান্স দেখার জন্য লক্ষাধিক টাকায় টিকিট বিক্রি হয়, তাঁকে কি আর শুধু কথায় ছেড়ে দেওয়া যায়? এই বছরের চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী তখন মঞ্চে উপস্থিত। অরিজিৎ (Arijit Singh) ধরলেন রাজ পরিচালিত ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ছবির টাইটেল ট্র্যাক। দরদী কন্ঠ যেন ছুঁয়ে গেল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তকে। কিং অফ রোমান্স শাহরুখ খান থাকলে ভালোবাসার রং যে একটু বেশি গাঢ় হবে সে তো নতুন করে আর বলার নেই। সাম্প্রতিককালে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অরিজিতের কন্ঠ আর শাহরুখের অনবদ্য এক্সপ্রেশন তৈরি করেছে ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া’, চলচ্চিত্র উৎসবে সেই সুরের ঝলক মিলল বটে। ছবির মত একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দর্শকের মনে অনেকটা আশা জাগিয়ে তুলল। শুধুমাত্র মঞ্চে উপস্থিত শিল্পীরাই নন বিনোদন জগতের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রত্যেকেই কুর্নিশ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগকে। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার থেকে কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে শতাধিক ছায়াছবি। রুপালি সিনেমা শহরে দিল পা , বিশ্বের সিনেমা এবার সিনেমার পৃথিবীতে।

 

Previous articleবাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে ভারত
Next articleনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের আদালতে মুখ পুড়ল সিবিআই-এর