BSF-এর পাশাপাশি সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যেরও, পূর্বাঞ্চল পরিষদের বৈঠকে বার্তা শাহর

বিএসএফের(BSF) পাশাপাশি সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকেও। শনিবার নবান্নে(Nabanna) পূর্বাঞ্চল পরিষদের বৈঠকে সিমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে এই বার্তাই দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। এদিন নবান্নে পশ্চিমবঙ্গ এবং পূর্ব ভারতের অন্য তিন রাজ্য বিহার(Bihar), ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হন অমিত শাহ। সেখানে সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করা হল শাহের তরফে। এছাড়া আর একাধিক বিষয় নিয়ে এদিন আলোচনা হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাজ্যের প্রতিনিধিদের মধ্যে।

বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তীব্র আকার ধারন করেছিল। সেই ইস্যুতে এদিনের বৈঠকে শাহ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রেখেই সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর কথায়, “সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব যতটা থাকবে বিএসএফের উপর, ঠিক ততটা রাজ্যের হাতেও রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। আগের সরকারের কাজে বহু ক্ষেত্রে খামতি ছিল। আমরা তা অনেকটা পূরণ করেছি। আরও উন্নয়নের জন্য এগোচ্ছি।” পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সীমান্ত ব্যবহার করে পাচার এবং বিএসএফ ও স্থানীয় পুলিশের মধ্যে মনমালিন্যের বিষয়টিও উঠে আসে এই বৈঠকে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহানির্দেশক জানান, রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নতুন সীমান্ত চৌকি গড়তে রাজ্যের কাছে জমি চাওয়া হয়েছিল যা এখনও মেলেনি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, সীমান্ত চৌকি গড়তে রাজ্যের কাছে যে পরিমান জমি চাওয়া হয়েছিল তা কোনওভাবেই দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর অমিত শাহ এই আলোচনায় হস্তক্ষেপ করে পারস্পারিক সমন্নয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেন। এছাড়াও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বাংলা বিহার ও ঝাড়খণ্ড এই ৩ রাজ্যের মধ্যে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীর জল বণ্টন নিয়ে প্রায়শই চাপানউতোর চলে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। যেখানে তিন রাজ্যের মধ্যে সমন্নয়ের জন্য কমিটি গড়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আন্তঃরাজ্য সীমান্তে পরিবহন, নিরাপত্তা, ব্যবসা বাণিজ্য, আইনশৃঙ্খলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে কোনও সমস্যার বিষয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। রাজ্যের প্রাপ্য ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা, আমফানের ক্ষতিপূরণ, জিএসটির বকেয়া অর্থ নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার, মহিলাদের ওপর নির্যাতনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, আবাস যোজনা প্রকল্পের অগ্রগতি, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং টেলিকম পরিষেবার ঘাটতি, বিহার ও ঝাড়খন্ডের সরকারি কর্মীদের বেতন বৈষম্য সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বিহার থেকে ছিলেন উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওডিশা থেকে সেখানকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়াও চার রাজ্যেরই মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। এ রাজ্য থেকে মুখ্যসচিব এইচকে দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা ছাড়াও ছিলেন সেচসচিব প্রভাত মিশ্র ও বিএসএফের শীর্ষ আধিকারিকরা।

Previous articleকাছের মানুষকে হারালেন দেব, সাংসদ-অভিনেতার পরিবারে শোকের ছায়া
Next articleশুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃ*তদের বাড়িতে রবিবার যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল