গঙ্গাসাগরে রেকর্ড জনসমাগমের সম্ভাবনা: এক টিকিটেই যাতায়াত, পুণ্যস্নানের দিনক্ষণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে একদিনের জন্য যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।

করোনা কাল কাটিয়ে দুবছর পরে এবার জমে উঠবে গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela)। ৩০ লক্ষ জন সমাগম হতে পারে। তার জন্য প্রস্তুত রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। বুধবার, নবান্নে সব দফতর এবং সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পরে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। ছিলেন সেনা, NDRF, টেলিকমের আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এক টিকিটেই যাতায়াত করা যাবে গঙ্গাসাগরে। জানিয়ে দেন পুণ্যস্নানের দিনক্ষণও। প্রতিবারের মতো এবারও গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে একদিনের জন্য পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান মমতা।

এবছর ৮ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। পুণ্যস্নানের সময় ১৪ জানুয়ারি সন্ধে ৬টা ৫৩ থেকে ২৪ ঘণ্টা। জনসমাগম বেশি হতে পারে এই সম্ভাবনায় এবার নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। গঙ্গাসাগর মেলায় কর তুলে দেওয়া হয়েছে। এবারও প্লাস্টিক মুক্ত গঙ্গাসাগর মেলা হবে।

একনজরে গঙ্গাসাগর মেলার পরিবহন-

•পুণ্যার্থীদের জন্য ২ হাজার ২৫০টি সরকারি বাস
•৫০০ বেসরকারি বাস
•৪টি বার্জ
•৩২টি ভেসেল
• ১০০টি লঞ্চ
• এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স, ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স-সহ পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা
• ২১ টি জেটি থাকছে গঙ্গাসাগরে

অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাবিনা ইয়াসমিন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য মন্ত্রী, বিধায়ক এবং রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ৮ নম্বর লট, জেটি, কচুবেড়িয়া এবং গঙ্গাসাগরের দায়িত্ব ভাগ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যাত্রীদের সুবিধার জন্য উপস্থিত থাকবেন সাগরবন্ধুরা। মেলার সময় হাওড়া, শিয়ালদহ, নামখানায় অতিরিক্ত রেল চালানোর জন্য রেলওয়ের কাছে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

একনজরে গঙ্গাসাগরের ব্যবস্থাপনা-

• মেলা প্রাঙ্গণে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য মেগা কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হচ্ছে।
• নজরদারিতে থাকবে ১১৫০ টি CC ক্যামেরা ও ড্রোন।
• GPS ড্রোনের মাধ্যমে চালানো হবে নজরদারি।
• ২১০০ জন সিভিল ডিফেন্স ও অন্যান্য ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হবে।
• ১০টি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশনে ২৫টি দমকল ইঞ্জিনের ব্যবস্থা থাকছে।
•১০ হাজারের বেশি শৌচালয় তৈরি করা হবে।

নিরাপত্তা থেকে বিশেষ নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কোনভাবেই তাঁবুর মধ্যে আগুন জালানো বা রান্না করা যাবে না।

রাতে স্নানের সময় বিশেষ আলোর ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় মাইকিং করতে হবে। যেহেতু সারা দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা উপস্থিত হন গঙ্গাসাগরে, সেহেতু বাংলা, হিন্দি, ইংরেজির পাশাপাশি আরও বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষায় ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেউ হারিয়ে গেলে তাঁকে খুঁজে বার করার জন্য ‘কিউ আর কোড’ যুক্ত রিস্ট ব্যন্ডের ব্যবস্থা থাকছে গঙ্গাসাগরে। ১৩, ১৪, ১৫-৩ দিন সাগর আরতি হবে গঙ্গাসাগরে।

সবার পক্ষে হয়তো গঙ্গাসাগর যাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনেও বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়া যাবে। কপিল মুনি আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দেখতে পারবেন ভক্তরা। অনলাইনে পৌঁছে দেওয়া হবে প্রসাদ। ‘ই স্নান’-এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হবে গঙ্গাসাগরের জল।

 

 

Previous articleশিক্ষামূলক ভ্রমণে বেরিয়ে খাদে স্কুলবাস, মৃ*ত কমপক্ষে ১৫ 
Next articleবিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বরণ করতে বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় ৫০ লক্ষ মানুষ, হেলিকপ্টারে মেসিরা