ভুয়ো জব কার্ড! পরিসংখ্যান দিয়ে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূল নেতৃত্বের

ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ধুয়ে দিল তৃণমূল (TMC)। রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলি উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাটে তথাকথিত ভুয়ো জব কার্ডের তালিকা বাংলার তুলনায় অনেক লম্বা। তাহলে উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাটের টাকা কেন আটকে রাখছে না দিল্লি! প্রশ্ন রাজ্যের শাসকদলের।

পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া পাওনা নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। সেই প্রশ্নের লিখিত জবাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সেখানে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি বাংলার টাকা আটকে রেখেছে দিল্লির সরকার। গত আর্থিক বছর আর চলতি বছর মিলিয়ে প্রকল্পে সামগ্রী খরচ বাবদ ২৬৮৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। দুই আর্থিক বছরে মজুরি বাবদ বকেয়া রয়েছে ২৭৪৮ কোটি টাকা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সংসদের ওই উত্তর টুইট করার পর, তাঁকে মেনশন করে বিরোধী দলনেতা পাল্টা টুইট করেন। তিনি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের একটি বিবৃতি টুইট করে দাবি করেছেন, ৪ লক্ষ ভুয়ো কার্ড বাতিল করা হয়েছে বাংলায়। এই ভুয়ো জব কার্ড দেখিয়েই একশো দিনের কাজে বাংলায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার চুরি হয়েছে।

এখানে প্রশ্ন হল, শুভেন্দু রাজ্যের শাসকদলের যে স্টেটমেন্ট টুইট করেছেন, তাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, কেন ওই ৪ লক্ষ জব কার্ড বাতিল হয়েছে। এমন নয় যে সবই ভুয়ো। কোনও মজুর কোনও পঞ্চায়েত এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে, ডুপ্লিকেট জব কার্ড থাকলে, জব কার্ডে ভুল থাকলে, কোনও গ্রামীণ এলাকার চরিত্র বদলে শহর হয়ে গেলে এবং কেউ কাজ করে না চাইলে তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। সুতরাং চার লক্ষ জব কার্ডের সবটাই যে ভুয়ো, তা কেন্দ্রও বলছে না।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ধুয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)। শশী পাঁজা টুইটে পালটা বলেন, শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই ৭৫ লক্ষেরও বেশি ভুয়ো জব কার্ড বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, আধার কার্ডের সঙ্গে জব কার্ড লিংক না হওয়ার সংখ্যাও বাংলা থেকে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি অনেক এগিয়ে রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে সেই সংখ্যাটি হল প্রায় ৮০ লক্ষ, মধ্যপ্রদেশে ৭৯ লক্ষ, গুজরাতে ৩৩ লক্ষেরও বেশি। সেখানে বাংলায় এই সংখ্যাটা ২৭ লক্ষের আশপাশে রয়েছে। তারপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, এমনটা হলে উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাতের টাকা কেন আটকে রাখছে না দিল্লির সরকার?

একইভাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) টুইট করে এদিন কিছু পরিসংখ্যান দিয়েছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের থেকে অনেক বেশি মজুরের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বাদ গেছে প্রায় ১৪ লক্ষ, মধ্যপ্রদেশে ৭ লক্ষের বেশি নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে জব কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তি করতে পারেনি বাংলার থেকে অনেক বেশি মানুষ। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে সেই সংখ্যা যথাক্রমে ৮০ লক্ষ ও ৭৯ লক্ষ মতো। গুজরাতে ৩৩ লক্ষ। আর বাংলায় ২৭ লক্ষ।

আরও পড়ুন:কম্বলকাণ্ডের তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে চৈতালিকে! জিতেন্দ্র জায়াকে রক্ষাকবচ হাইকোর্টের

 

 

Previous articleশনিবার বাগানের সামনে নর্থইস্ট ইউনাইটেড, প্রতিপক্ষকে সমীহ জুয়ানের
Next articleবাংলাদেশি ‘সান্টু’র প্রেমে মাতলো এপার বাংলাও