দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স: নয়া ভবনের ভিতপুজোর পর দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেন অভিষেক

ইংরেজি বছরে প্রথম দিন। তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবস। আর এইদিনই তপসিয়ার নতুন ভবনের ভিতপুজোয় মন্ত্র পড়ে, নতুন ভবনের প্রথম ইট রাখলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। এরপরই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। স্পষ্ট জানালেন, দুর্নীতির বিষয়ে তাঁরা জিরো টলারেন্স (Zero Tolerance) নীতি মেনে চলবেন। একইসঙ্গে আবাস যোজনায় দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে পরোক্ষে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)-সহ বিজেপিকে তুলোধনা করেন অভিষেক।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস- দুর্নীতির প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে। দলের কারও যদি কোন দুর্নীতিতে নাম জড়ায়, সেক্ষেত্রে ঘটনা বিচার করে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে দল। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগের তালিকায় থাকা ব্যক্তিকে দলে নিয়ে বড় পদে বসিয়েছেন বিজেপি। এর পরেই আবাস যোজনায় নামের তালিকা নিয়ে অভিষেককে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তার উত্তরে অভিষেক জানান, সবচেয়ে বেশি আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। যে তালিকা তৈরি হয়েছে তা হয়েছে ২০১৯-এর আগে। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুরে (East Midnapur) সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী-সহ অধিকারী পরিবারকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, “আমরা স্বীকার করেছি দল কোনও একজনকে বিশ্বাস করে বড় ভুল করেছিল।” কাঁথির সভা থেকেও সে বিষয়ে তিনি মেদিনীপুরের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান অভিষেক।

বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, বিজেপি (BJP) সরকার মুখে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও তারা দুর্নীতিগ্রস্তদের মুখ্যমন্ত্রীর পদে পর্যন্ত বসায়। বিভিন্ন রাজ্যে তার উদাহরণ রয়েছে। তবে তৃণমূল এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। তার ফলে কারও নাম দুর্নীতিতে জড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করছে তৃণমূল। দলীয় কার্যালয়ের ভিত পুজোর দিনই ফের একবার দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

সেইসঙ্গে রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোট হবে বলেও জানান অভিষেক। তিনি কড়া বার্তা দেন, পঞ্চায়েত ভোটে কেউ অশান্তি তৈরি সৃষ্টি করলে ফল ভালো হবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করার বিষয়ে তিনি জানান, ২০২১-এর নির্বাচনে বেনজির ভাবে রাজ্যে আট দফায় ভোট হয়েছিল। যেখানে অন্যান্য রাজ্যে অনেক কম দফাতেই ভোট করা হয়। শয়ে শয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন ছিল প্রত্যেক দফার ভোটে। আর তারপরে বিপুল আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। যেদিন পঞ্চায়েত ভোট করা হবে সেদিনই প্রস্তুত আছে তৃণমূল- জানান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, সর্বশক্তি দিয়ে মানুষের কাছে দলের বার্তা পৌঁছানোই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য।

তপসিয়ায় যেখানে নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হল, সেখানেই তৃণমূলের পুরনো কার্যালয় ছিল। অভিষেক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেই পুরনো ভবন ভেঙে নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরেই ভাঙার কাজ শুরু হয়। সেই কাজ শেষ হওয়ার পরেই ঠিক হয়, দলের প্রতিষ্ঠাদিবসে নতুন ভবনের ভিতপুজো হবে।

 

 

 

Previous articleনাসিকের কারখানায় বিধ্বং*সী আগু*ন! ভিতরে শ্রমিকদের আটকে থাকার আশঙ্কা  
Next articleমমতার মধ্যে ভগবান রামকে দেখতে পায়: “জয় শ্রীরাম” নিয়ে বিজেপিকে তীব্র খোঁচা অভিষেকের