বিতর্ক উড়িয়ে কলকাতার রাজপথে বসে জমিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন শতাব্দী, সঙ্গে কুণাল

ডেকার্স লেনে খেতে খেতে শতাব্দী জানান, ”গতকাল আমি ওঁদের ঘরে বসেই খেয়েছি। আমি যখন মাটির ঘরে বসে খাচ্ছিলাম, তখন সাংবাদিকরাও সিমেন্টের ঘরে বসে খাচ্ছিলেন। কাজেই যা দেখানো হয়েছে, আমি খাইনি বলে, তা একেবারেই ঠিক নয়।

শুক্রবারই ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় (Shatabdi Roy)। বিষ্ণুপুর এলাকার তেঁতুলিয়া গ্রামে তৃণমূলের (TMC) এক কর্মীর বাড়ির উঠোনে দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। অভিযোগ, তিনি নাকি দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে খেতে বসেও না খেয়ে উঠে গিয়েছেন। এই অভিযোগ উড়িয়ে শনিবার, কলকাতার রাজপথে বসে জমিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন তৃণমূল সাংসদ। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এদিন শতাব্দী সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি শুক্রবার ওই দলীয় কর্মীর বাড়িতে খেয়েছিলেন। যা যা মেনু ছিল, সেই ভাত ডাল, মাছ ভাজা, মাটন- সবই খান। তবে, সেটা ঘরের ভিতরে বসে। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকরাও। সেই কারণে সেই সময় তাঁরা সাংসদের খাওয়ার ছবি তুলতে পারেননি।

পরে ফের ছবি তোলার জন্য সাংবাদিকরা শতাব্দীকে অনুরোধ করলে তিনি ওখানে বসে শুধু ছবি তোলেন। কিন্তু এটা নিয়ে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নামে বিরোধীরা। মিথ্যে অপপ্রচার করা হয়, যে তিনি দলীয় কর্মীর বাড়িতে খাননি। এর উত্তরে শতাব্দী এদিন বলেন, বীরভূম তাঁর ঘর-বাড়ি। সেখানে তিনি দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই খান। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, শতাব্দী তিনবারের সাংসদ। ওই অঞ্চলের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বিজেপি এই ধরনের মিথ্যা, সস্তা, কুৎসিত অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ কুণালের।

স্ট্রিট ফুডের জন্য বিখ্যাত কলকাতার ডেকার্স লেনের ফুটপাথ। সেখানে বসেই মধ্যাহ্নভোজ সারলেন শতাব্দী-কুণাল। ‘ক্লাসিক ফাস্ট ফুড সেন্টার’-এ সামনে ফুটপাথে একটি চেয়ার নিয়ে বসে বাসন্তী পোলাও, লেমন ফিশ (Lemon Fish) খান দুজনে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মূল মন্ত্রই নিবিড় জনসংযোগ। সেই মতোই সাধারণ মানুষের দরজায় যাচ্ছেন দিদির দূতরা। সেখানে মানুষের সঙ্গে মিশে সুখ-দুঃখের কথা শুনছেন। আর সেটা দেখেই ভয় পাচ্ছে বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। ফলে বিভিন্ন ছুতোয় এই কর্মসূচিকে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিন ডেকার্স লেনে খেতে খেতে শতাব্দী জানান, ”গতকাল আমি ওঁদের ঘরে বসেই খেয়েছি। আমি যখন মাটির ঘরে বসে খাচ্ছিলাম, তখন সাংবাদিকরাও সিমেন্টের ঘরে বসে খাচ্ছিলেন। কাজেই যা দেখানো হয়েছে, আমি খাইনি বলে, তা একেবারেই ঠিক নয়। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের আরও দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি।”

কুণাল ঘোষ বলেন, শতাব্দী তিনবারের সাংসদ। তিনি এতদিন ধরে দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই খান। বিজেপি মনে রাখা উচিত, শতাব্দী শুধু জনপ্রতিনিধিই নন, তিনি নায়িকা-অভিনেত্রী। গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে তাঁকে শুটিং করতে হয়েছে। এইগুলি শুধু সস্তা, কুৎসিত, অপপ্রচার। শতাব্দীর সহাস্য প্রশ্ন, এতদিন কী আমি না খেয়ে ছিলাম? এরপরেই সাংসদ সংবাদমাধ্যমকে পাল্টা প্রস্তাব দেন, দিদি-র দূত হিসেবে তিনি গেলে, সাংবাদিকরা যেন একদিন সারাক্ষণ তাঁর সঙ্গে থাকেন। তাহলেই তিনি বুঝতে পারবেন শতাব্দী কোথায় যান, কী খান!

পাশাপাশি, দিদির দূতরা বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন বলে, যে কথা রটছে, তাও সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন সাংসদ শতাব্দী। তিনি বলেন, বিক্ষোভ মানে কী? যাখন বহু মানুষ জড়ো হয়ে কোনও দাবি বা প্রতিবাদ জানান। কিন্তু এক্ষেত্রে সেসব কিছুই হচ্ছে না। শুধু মাত্র, এক-দুজন কিছু না পেলে, সেটা জানাচ্ছেন। আর বেশিরভাগ মানুষই রাজ্য সরকারি পরিষেবায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন বলে মত শতাব্দীর।

এদিন, খাদ্যমন্ত্রীর সামনে তৃণমূল কর্মী চড় মারার ঘটনা নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, এটা হওয়া উচিত ছিল না। কিন্তু বিজেপি ষড়যন্ত্র করে ওখানে দলীয় নেতা পাঠিয়ে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন রথীন ঘোষ।

 

 

Previous articleদীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে নেই সুযোগ, বিসিসিআই-কে একহাত নিলেন বিজয়
Next articleদুই ভাই যু*দ্ধের ময়দানে, শান্তির বার্তা নিয়ে মস্কো থেকে গঙ্গাসাগরে রুশ সন্ন্যাসী