বাজেটে ‘জনস্বাস্থ্য’ খাতে মিলল না কিছুই! বরাদ্দ ও বাস্তবের ফারাক স্পষ্ট করে কটাক্ষ চন্দ্রিমার  

স্বাস্থ্যখাতে (Health Sector) মধ্যবিত্ত এমনকী খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বড় কোনও সুখবর শোনাতে পারলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Shitaraman)। তবে এদিন ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে নতুন নার্সিং কলেজ (Nursing College) তৈরির ঘোষণা করলেন নির্মলা। ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশ থেকে সিকল সেল অ্যানিমিয়া দূর করার মিশন কার্যকর করবে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি গবেষণা ক্ষেত্রে আইসিএমআর (ICMR) গবেষণাগারে প্রাইভেট এবং পাবলিক মেডিকেল কলেজগুলি গবেষণার সুযোগসুবিধা পাবে। পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল অর্থাৎ ওষুধ উৎপাদন এবং গবেষণার জন্য সরকার নতুন প্রকল্প কার্যকরী বলে ভাষণে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের এই বাজেটে বড়সড় কিছুই চমক দিতে পারলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যেখানে চব্বিশের নির্বাচনের আগে একাধিক ক্ষেত্রে বড় চমক দেওয়ার চেষ্টা করলেও দেশবাসীর সবথেকে বড় সমস্যা সেই স্বাস্থ্য নিয়ে একেবারেই উদাসীন কেন্দ্র। শুধুমাত্র কয়েকটি কলেজ এবং গবেষণাগারের সুযোগসুবিধা দিলেও দেশের আমজনতার জন্য স্বাস্থ্য বাজেটে বরাদ্দ একেবারেই শূন্য।

এদিন অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, দেশ জুড়ে তৈরি হবে ১৫৭টি নতুন নার্সিং কলেজ। পাশাপাশি ১০২ কোটি মানুষকে এখনও পর্যন্ত কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যেই সিকল-সেল অ্যানিমিয়া রোগ দূর করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় সদ্যোজাত থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ৭ কোটি মানুষের স্ক্রিনিং করা হবে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, এই রোগ দূর করতেই সরকার এমন মিশন নিয়েছে। পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চ বা ওষুধ প্রস্তুত সংক্রান্ত গবেষণার জন্য একটি নতুন প্রোগ্রাম আনা হবে। আর এই ক্ষেত্রে গবেষণার উপর আরও জোর দেওয়া হবে। তবে গরীব বা শ্রমিক শ্রেণীর মানুষদের জন্য এই বাজেটে স্বাস্থ্যখাত সহ অন্যান্য খাতে যে কিছুই বরাদ্দ হয় নি তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। পাশাপাশি দেশজুড়ে কলেজ তৈরির কথা ঘোষণা করা হলেও ছাত্রছাত্রীদের ফি ও পরিকাঠামোগত বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট বিষয় বাজেটে উঠে আসেনি।

উল্লেখ্য, গত বছর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেছিলেন যে, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের (Ayushman Bharat Digital Mission)  অধীনে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ ইকোসিস্টেমের জন্য একটি মুক্ত প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ন্যাশনাল টেলি মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সেই বিষয়েও এদিন অর্থমন্ত্রীর কথায় সেই সংক্রান্ত কোনও বক্তব্যই উঠে আসেনি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জীবন বিমা সংক্রান্ত কোনও ইস্যুই এদিন বাজেটে উঠে আসেনি।

তবে এদিন বাজেট পেশের পর রাজ্যের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bharracharya) কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, শুধু বরাদ্দ বাড়লেই তো লাভের লাভ হবে না। সেটাকে তো খরচে আনতে হবে। আমাদের রাজ্যই তো কিছু পায়নি। তবে বরাদ্দ আর বাস্তবে টাকা দেওয়ার মধ্যে ফারাক আছে। বাংলার জন্য আর বিজেপির শাসিত রাজ্যের মধ্যে ওরা ফারাক করে। চন্দ্রিমার আরও অভিযোগ, আদিবাসী ভোট প্রধান লক্ষ্য। তাই বাজেটে এই সব ঘোষণা করা হয়েছে। পয়সা হাতে আসলে তো মানুষ খরচ করবে। সঞ্চয় করার মতো তো পয়সা নেই। মহিলাদের হাতে টাকা তো আগে দিতে হবে।

 

 

Previous articleক*রোনাকালের খরা কাটাতে নেই কোনও ছাড়-মজুরি বৃদ্ধি, বাজেটে বঞ্চিত কৃষক-শ্রমিক !
Next articleরঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় দিনের শেষে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে চালকের আসনে বাংলা