উনি সাক্ষী হোন, বইমেলায় প্রকাশ হোক “অভিজিৎ রচনাবলী”, বিচারপতিকে বেনজির আ*ক্রমণ কুণালের

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, "জগদীপ ধনকড় রাজ্যপালের দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যে ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়"।

ফের তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) নিশা*নায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। এবার আকার-ইঙ্গিতে নয়, সরাসরি নাম করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্র**মণ কুণাল ঘোষের। নিয়োগ দুর্নী*তি মামলায় এবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কেই ”সাক্ষী” করা দাবি তুললেন তৃণমূল নেতা। একইসঙ্গে বিচারপতির ”১৬৪” অর্থাৎ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ”গোপন জবানবন্দি” নেওয়ারও দাবি জানান তৃণমূল (TMC)মুখপাত্র।

আজ, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “জগদীপ ধনকড় রাজ্যপালের দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যে ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জগদীপ ধনকড় যখন রাজ্যপাল ছিলেন, তখন রোজ সকালে উঠে সরকার বিরোধী টুইট করতেন। এখন তাঁর ফাঁকা, সেটা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।”

কুণালের আরও সংযোজন, “জাস্টিস গাঙ্গুলির কথাবার্তা যা শুনি তাতে মনে হয় ওনার জ্ঞান প্রবল। উনি কিন্তু অত্যন্ত সচেতন এবং গোটা সাবজেক্টটায় ওনার একটা স্পষ্ট ধারণা আছে। উনি মাথা কে জানেন, উনি ধেড়ে ইঁদুর কী জিনিস জানেন। তার কারণ উনি দীর্ঘদিন এই এসএসসির আইনি ব্যবস্থার সঙ্গে পেশাগতভাবে জড়িত ছিলেন, ফলে অহেতুক রাজ্য সরকার, রাজ্য পুলিশ, তাদের হাত থেকে চলে গেল সিবিআইতে, সিবিআই বা ইডি, তারাও নাকি পারছে না। এর একমাত্র সলিউশান হচ্ছে, জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি গোটা বিষয়টা জানেন, তাঁকে এই মামলায় জাজ হিসেবে রাখলে সময় নষ্ট হবে, ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সিগুলো কাঠগড়ায় উঠবে, তাদের সময় নষ্ট হবে। ফলে তাঁকে সরাসরি উইটনেস হিসেবে ট্রিট করে, তাঁর ১৬৪ করা হোক কোর্টে, উনি বলে দিন কে মাথা, কে লেজ, কে কাকে কী করেছে, আকারে ইঙ্গিতে অহেতুক সময় নষ্ট হচ্ছে। উনি সাক্ষী হলে তদন্তকারীদের কাজ করতে সুবিধা হবে। তদন্ত তদন্তের পথে চলবে, কোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণ করবে। সিবিআই যদি খারাপ হয়, তাহলে তাদের হাতে তদন্তভার দেওয়া হল কেন? এখন সিবিআইকে খারাপ বলছে, অফিসারদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসেব চাইছে। ওনাকে সাক্ষী করলে তদন্তের গতি বাড়বে।”

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতির মুখে এক অভিনেত্রীর কথা শোনা যায়। তিনি বলেন, “শুনেছি এক অভিনেত্রী ৩টি ফ্ল্যাট ভেঙে একটি বড় ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এই অভিনেত্রীকে দেখতে চাই, তাঁর সিনেমাও দেখতে চাই। জানতে চাই তিনি কে”? একইসঙ্গে ইডিকে হলফনামা পেশের নির্দেশও দেন মাননীয় বিচারপতি। তারপরেই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ।

এখানেই শেষ নয়, এদিন বিচারপতিকে কটাক্ষ করে কুণাল আরও বলেন, “উনি বিচার করুন, কিন্তু তার বাইরে যে মনিমানিক্য ছড়াচ্ছেন, তা নিয়ে একটি বই রচনা হতে পারে। বইয়ের নাম দেওয়া যেতে পারে “অভিজিৎ রচনাবলী”! যা পরের বইমেলায় প্রকাশিত হতে পারে। সেই বই উনি উৎসর্গ করুন বিকাশ ভট্টাচার্যকে।” প্রধানমন্ত্রীকে নাকি চিঠি লিখবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গ টেনেও বিচারপতিকে কটাক্ষ করেন কুণাল। তাঁর কথায়, “ভাগ্যিস চিঠি লিখছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনেক সৌভাগ্য যে তাঁকে বিকেল ৫টার মধ্যে কোর্টে ডেকে পাঠাননি। শুধু চিঠির উপর ছেড়ে দিচ্ছেন।”

শুধু অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নয়, হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকেও তোপ দাগেন কুণাল। অভিনেতা তথা বিজেপি সাংসদ পরেশ রাওয়াল বাঙালির মাছ খাওয়া নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক ছড়িয়ে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পরেশ রাওয়ালকে রক্ষাকবচ দেন। এরপরই কুণাল বলেন,
“ওই বিচারপতি বিজেপি নেতাদের রক্ষাকবচ দেন আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষকে সুরক্ষাকবচ দেন।”

প্রসঙ্গত, এই আগে নাম না করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন কুণাল ঘোষ। সেই সময় বিচারপতিকে ‘AG’ বা ‘অরণ্যদেব গাঙ্গুলী’ নামে কটা**ক্ষ করেন তিনি। এবার সরাসরি নাম নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নজিরবিহীনভাবে আক্রম**ণ করলেন কুণাল।

Previous articleকেন্দ্রের দেওয়া চ্যালেঞ্জের মোক্ষম জবাব! আবাস যোজনায় বড় সাফল্য বাংলার
Next articleরঞ্জি ট্রফির তৃতীয় দিনের শেষে বোলারদের দাপটে চালকের আসনে বাংলা