বুধবারই জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির (Naushad Siddiqui)। তাঁকে ফের জেল হেফাজতেই পাঠানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে নওশাদের দুটি মোবাইল ফোন (Mobile) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেই মোবাইল ফোন থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশের হাতে উঠে এসেছে। ইতিমধ্যে দুটি মোবাইল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (Forensic Science Laboratory) পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নওশাদের মোবাইল ফোন থেকে কথোপকথনের যে তথ্য উঠে এসে তাতে পরিষ্কার জানা যাচ্ছে, ২০২১ সালের আগে ভিন রাজ্যের রাজনীতিবিদ যিনি বাংলায় এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে নওশাদ সিদ্দিকির ফোনে এবং হোয়াটস অ্যাপে একাধিক বার্তালাপ হয়। আর সেই বার্তালাপে বিভিন্ন রকমের আর্থিক লেনদেন এবং একাধিক অভিযোগপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একাধিক বিষয় উঠে আসে। পাশাপাশি টাকার লেনদেনের বিষয়টিও পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। তবে কীভাবে এবং কেন এই কথোপকথন হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (Vinit Goyal) জানিয়েছেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। সময় মতো সবকিছুর উত্তর পাওয়া যাবে। এখনই এই বিষয় নিয়ে বলার সময় আসেনি। গোটা বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।
এদিকে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) প্রশ্ন তোলেন, যারা বিধানসভা ভোটে নওশাদ সিদ্দিকির আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট করে লড়াই করেছিল, সেই বাম-কংগ্রেসকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? একদিকে কংগ্রেস- সিপিআইএমের (Congress CPIM) সঙ্গে জোট এবং অন্যদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতার (BJP Leader) সঙ্গে যোগাযোগ। যে বিষয়গুলি নওশাদ সম্পর্কে শোনা যাচ্ছে সেগুলি নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। বিষয়টি প্রমাণিত হলে আইন আইনের পথে চলবে। আমরা প্রতিটি ধর্মের ধর্মগুরুদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। কিন্তু ধর্মগুরুরা যদি রাজনীতিতে নাম লেখায়, তখন আর তাঁরা ধর্মগুরু থাকেন না, রাজনৈতিক নেতা হয়ে যান।
পাশাপাশি থানায় গোলমালের অভিযোগে বারুইপুর আদালতে নওশাদকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ (Leather Complex Police Station)। উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় পুলিশের সঙ্গে চূড়ান্ত অসভ্যতামির পরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি সহ আরও ১৮ আইএসএফ কর্মী-সমর্থককে। পরে তাঁদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে প্রথমে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বুধবার ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আদালতে সরকারি আইনজীবীর দাবি, নওশাদের মোবাইল চ্যাট থেকে হাওয়ালা যোগের খোঁজ মিলেছে। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে টাকার অঙ্ক নিয়ে এবং নির্বাচন কমিশনের কাকে কোথায় সরাতে হবে, তা নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছিল।