‘লাল পাহাড়ির দেশ’ ছেড়ে অনন্তে সঙ্গীতশিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

পুত্র অর্পণ জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের সমস্যায় ভুগছিলেন বাবা। ক্যান*সারের একদম শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কলকাতার একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও শেষরক্ষা হল না।

থেমে গেল সুর। প্রয়াত ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’, ‘মড়ক পরবে’, ‘বাঁকুড়া মাটিকে পেণাম’ সহ একাধিক জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা বাঁকুড়ার বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী (Folk Artist Subhas Chakraborty)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শনিবার বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, এদিন বিকেল থেকে রবীন্দ্রসদনে (Rabindra Sadan) শায়িত থাকবে তাঁর মৃতদেহ। সেখানেই অনুরাগীরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। এরপর সেখান থেকে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে সঙ্গীতশিল্পীর মরদেহ। রবিবার কলকাতার কেওড়াতলা মহশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এদিন বিশিষ্ট শিল্পীর মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিশ্চিত জানিয়েছেন পুত্র অর্পণ চক্রবর্তী (Arpan Chakraborty)।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী শোকবার্তায় লেখেন, বিশিষ্ট লোকসংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। শনিবার তিনি কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষবাবু ঐতিহ্যময় লোকসংগীতকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর সৃষ্ট কিছু অবিস্মরণীয় লোকগান আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তাঁর প্রয়াণে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের  আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার
তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
নবান্ন
৩২৫, শরৎ চ্যাটার্জি রোড
হাওড়া- ৭১১১০২

স্মারক সংখ্যা:
৫৬/আইসিএ/এনবি
তারিখ: ২৫/২/২০২৩

মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা

বিশিষ্ট লোকসংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষবাবু ঐতিহ্যময় লোকসংগীতকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর সৃষ্ট কিছু অবিস্মরণীয় লোকগান আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

তাঁর প্রয়াণে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।

আমি সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

পুত্র অর্পণ জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের সমস্যায় ভুগছিলেন বাবা। ক্যানসারের একদম শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কলকাতার একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও শেষরক্ষা হল না। গত কয়েকদিন ধরেই ভেন্টিলেশন সাপোর্টে ছিলেন তিনি। অপর্ণ জানান, আমার কাছে এটা ব্যক্তিগত ক্ষতি তো বটেই, তবে লোকসঙ্গীত নিয়ে যারা কাজ করে তাঁদের সবার জন্য এটা বড় ক্ষতি।

উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে জন্ম বিশিষ্ট ঝুমুর শিল্পীর। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা। এরপরে সত্তরের দশকে লোকগানের দুনিয়ার উঠতি শিল্পী ছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী। তবে এই বহুল প্রচলিত লোকগানের শিল্পী আজীবন থেকে গিয়েছেন প্রচারের আড়ালেই। লাল মাটির দেশ ছেড়ে কোনওদিনই কলকাতায় এসে সঙ্গীতের জগতে নিজের পরিচিত গড়ার চেষ্টা করেননি সুভাষ চক্রবর্তী। প্রচারবিমুখ হওয়ার জেরেই ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’, ‘মরক পরবে’-র মতো গানগুলো জনপ্রিয়তা পেলেও অন্তরালেই থেকে গিয়েছেন তিনি। তবে বাবার পদচিহ্ন অনুসরণ করে সুভাষ চক্রবর্তীর দুই সন্তানই লোকসঙ্গীতকেই বেছে নিয়েছেন। বাংলার রিয়েলিটি শোতে প্রসংশা কুড়িয়েছেন সুভাষ কন্যা অর্পিতা। ছেলে অর্পণও বাংলা গানের জগতে পরিচিত নাম।

 

 

Previous articleমাধ্যমিকে ইংরাজি প্রশ্নপত্র ”ফাঁস”-এ নাটের গুরু সুকান্তই, তদন্তের আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর
Next articleফের এআইএফএফ-কে একহাত নিলেন বাইচুং