নজরে পড়ুয়াদের ‘স্বাস্থ্য’! মিড ডে মিল প্রকল্পে বড় পদক্ষেপ রাজ্যের

সাফল্য পর্যালোচনার পরই পরবর্তী পর্যায়ে সমস্ত স্কুলেই একই ব্যবস্থা চালু হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অধীনে মহাসঙ্ঘগুলি যাতে আরও দ্রুত তৈরি করা যায় সে বিষয়েও সম্প্রতি জেলাগুলিকে মুখ্যসচিব বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।

মিড ডে মিল (Mid Day Meal) প্রকল্প নিয়ে এবার বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য। মিড ডে মিল প্রকল্প দুর্নীতি (corruption) ও জটিলতা মুক্ত করতেই এমন বিশেষ পদক্ষেপ। ইতিমধ্যে প্রকল্পের আর্থিক পরিচালনা সংক্রান্ত দ্বায়িত্বভার স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত মহাসঙ্ঘের (Maha Sangha) ওপর ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী মাস থেকেই বিভিন্ন জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্লকে নতুন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, সাফল্য পর্যালোচনার পরই পরবর্তী পর্যায়ে সমস্ত স্কুলেই একই ব্যবস্থা চালু হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অধীনে মহাসঙ্ঘগুলি যাতে আরও দ্রুত তৈরি করা যায় সে বিষয়েও সম্প্রতি জেলাগুলিকে মুখ্যসচিব বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।

উল্লেখ্য, স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরাই এতদিন মিড ডে মিল প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন। কিন্তু কর্মীদের অভাব, অভিযোগ সহ নানা কারণে একাধিক স্কুল এই প্রকল্প পরিচালনা নিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়ছে বলে শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়। পাশাপাশি অনেক জায়গা থেকেই মিড ডে মিল প্রকল্প পরিচালনায় আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ ওঠে। তাই এবার মিড ডে মিল প্রকল্পের দৈনন্দিন আয়-ব্যয়ের হিসাব থেকে শুরু করে বাজার সহ সমস্ত দায়িত্ব ব্লক স্তরের স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহাসঙ্ঘ গঠন করে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। খুব শীঘ্রই বিদ্যালয়গুলির কাছে শিক্ষা দফতর এব্যপারে গাইডলাইন পাঠিয়ে দেবে বলে জানা গিয়েছে।

পাশাপাশি মিড ডে মিল প্রকল্পে শিশুদের পুষ্টিকর খাবারের যোগান বাড়াতে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সমস্ত স্কুলেই পুষ্টি বাগান তৈরির কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের উদ্যানপালন দফতর এবং বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর যৌথভাবে এই কাজ করবে। রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন শুক্রবার সমস্ত জেলার স্কুল পরিদর্শকদের চিঠি দিয়ে জেলার উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয়ের মধ্যে দিয়ে স্কুলে এই ধরনের বাগান তৈরির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নির্দেশ দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন উদ্যানপালন দফতরের তরফে স্কুলে রোপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর আনাজ ও ফলের গাছের চারা এবং বীজ সরবরাহ করা হবে। জেলা স্কুল পরিদর্শকরা তাদের কাছ থেকে ওই চারা ও বীজ সংগ্রহ করে স্কুলে তা বিতরণ করবেন। মিড ডে মিলের মাধ্যমে স্কুল পড়ুয়াদের সুষম ও পুষ্টিকর শাক শবজির যোগানের বিষয়ে স্কুলগুলোকে স্বনির্ভর করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেজন্য সমস্ত সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পুষ্টিকর সবজি ও ফলের বাগান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, স্কুল চত্বরে নামি-দামি গাছ লাগানাে ও শাক-সবজি চাষ প্রকল্পে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্যও চাওয়া হয়েছে।

রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে প্রায় ৮৪ হাজার স্কুল আছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি স্কুলেই সবজি বাগান গড়ে তােলার চেষ্টা করছে স্কুল শিক্ষা দফতর। মুর্শিদাবাদে ২৩৪৮টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ২৩৬৪টি ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৬১৩টি স্কুলে সবজি বাগান বা কিচেন গার্ডেন তৈরি করা হয়েছে। বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, ও পুরুলিয়ার স্কুলগুলিতে কিচেন গার্ডেন প্রকল্পে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।

 

 

Previous articleEntertainment : বসন্তে ‘সাদা কালা’ ছন্দে চঞ্চল নচি !
Next articleচতুর্থ টেস্টের আগে মধ্যপ্রদেশের মহাকাল উজ্জয়ীনি মন্দিরে পুজো দিলেন বিরাট-অনুষ্কা