সিদ্দিকুল্লার নেতৃত্বে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ময়নাতদন্তে চার সদস্যের কমিটি তৃণমূলের

সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই আসনে জয় পায় বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। শাসক দল হওয়া সত্ত্বেও উপনির্বাচনে দ্বিতীয় হয় তৃণমূল। হাতছাড়া হয়ে সাগরদিঘি

সেই ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের সময় থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি আসনটি ছিল তৃণমূলের দখলে। টানা তিনবার সেখান থেকে জয়ী হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রয়াত সুব্রত সাহা। এবং প্রতিবারই তাঁর জয়ের মার্জিন বেড়েছে। সুব্রতবাবুর মৃত্যুর পর সদ্য উপনির্বাচন হওয়া এই আসনটি চলে যায় কংগ্রেসের দখলে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই আসনে জয় পায় বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। শাসক দল হওয়া সত্ত্বেও উপনির্বাচনে দ্বিতীয় হয় তৃণমূল। হাতছাড়া হয়ে সাগরদিঘি।

আর এই হারের পর থেকেই ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে শুরু হয়ে যায় ফলাফল নিয়ে কাটাছেঁড়া। তৃণমূলের অনেক নেতাই হারের জন্য অন্তর্ঘাতকেই দায়ী করেছেন। অনেকে বলছেন সংখ্যালঘুরা মুখ ফেরাচ্ছেন তৃণমূল থেকে। কারও ধারণা প্রার্থী চয়ন সঠিক হয়নি। কেউ বলছেন বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপিও। কারও মতে, “দুর্নীতি”র প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সে। কিন্তু কোন কারণটি প্রকৃত অর্থে হারের জন্য দায়ী, তার অনুসন্ধান করতেই বিশেষ একটি টিম বানিয়ে সাগরদিঘিতে দলের এমন ফলাফলের কারণ জানতে চেয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সাগরদিঘি উপনির্বাচনে ভরাডুবির জেরে ফের সংখ্যালঘু এলাকায় বিশেষ নজর দিচ্ছে শাসক দল। দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী সিদিকুল্লা চৌধুরী, জাভেদ খান, গোলাম রাব্বানি, সাবিনা ইয়াসমিনরা। পর্যালোচনা করে তাঁরা রিপোর্ট দেবেন। রাজ্যের কোথায় কোথায় কী ইস্যুতে ক্ষোভ, তা নিয়ে পর্যালোচনা করে রিপোর্ট করবেন তাঁরা।

সূত্রের খবর, গত ৬ মার্চ ক্যাবিনেট বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী ঘরোয়াভাবে উপনির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। একাধিক মন্ত্রী জানিয়েছেন, সাগরদিঘি শব্দটা উচ্চারণ করেননি মমতা। তবে তাঁর কথায় উদ্বেগ সুর স্পষ্ট ছিল। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে জানতে চান, গত ১২ বছরে তিনি ও তাঁর সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তাহলে এমন একটা ফলাফল হল কেন? রাজ্যজুড়ে কোথাও কোনও ক্ষোভ রয়েছে কিনা বিষয়টা দেখতে বলেন বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা-মন্ত্রীকে।

এরপর আজ, বৃহস্পতিবার চার সদস্যের কমিটি করে দেন তৃণমূল নেত্রী। যেখানে রয়েছেন সিদিকুল্লা চৌধুরী, জাভেদ খান, গোলাম রাব্বানি এবং সাবিনা ইয়াসমিন। সাগরদিঘির বুথওয়ারি উপনির্বাচনের ফলাফলের তালিকা তাঁরা ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন বলে জানান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি জানান, সাগরদিঘির ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যালঘু ভোটাররা কেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাঁরা বিচার, বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা করে সেই রিপোর্ট নেত্রীকে দেবেন। প্রয়োজনে সাগরদিঘির গিয়ে সেখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবে এই সদস্যের কমিটি।