ল’কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল মানিককে থামিয়ে ‘কোর্টের ডেকোরাম’ শেখালেন বিচারক

বিচারক শুভেন্দু সাহা বলেন, ‘আমরা সবাই আইনের ছাত্র। শুনেছি উনি ল’ কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। কোর্টের ডেকোরাম তো ওঁর জানা উচিত।’

ফের মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে সৌভিককে। বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য নিজে মুখে কিছু বলতে চেয়েছিলেন বিচারককে। কিন্তু তাঁকে থামিয়ে দেওয়া হয়। আদালতের তরফে তাঁকে বলে দেওয়া হয়, একবার আইনজীবী নিয়োগ করলে আবেদনকারী আর নিজে আদালতে কথা বলতে পারেন না। আর আইন কলেজের এক কালের অধ্যক্ষ মানিকের এই নিয়ম না জানার কথা নয়।
মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী এদিন বলেন, ‘আমার মক্কেল কিছু বলতে চান।’ বিচারক শুভেন্দু সাহা বলেন, ‘আমরা সবাই আইনের ছাত্র। শুনেছি উনি ল’ কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। কোর্টের ডেকোরাম তো ওঁর জানা উচিত।’
মানিকের জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘একজন ব্যক্তির উচিত তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে রক্ষা করা। ওঁর জন্য ওঁর স্ত্রী এবং ছেলে জেলে রয়েছেন। আমি জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করছি।’’
এরপরই মানিক ভট্টাচার্য সংবিধানের আর্টিকল ২১-এর কথা বলতেই বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘হাইকোর্টে চলে যান। আমি কি আপনাকে কিছু বলার অনুমতি দিয়েছি?‘ বিচারক মানিকের আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনার ল’ কলেজের প্রিন্সিপালকে বলে দিন আর্টিকল ২১-এর জন্য হাইকোর্টে যেতে।’

ইডি আরও জানিয়েছে, মানিকের একজন ভাই আছেন, হীরালাল ভট্টাচার্য। তাঁর নামে থাকা অনেক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করা হয়েছে। মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যর আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, একটি সমন পাঠানো হয়েছিল। সমন জারি হওয়ার পর সুযোগ ছিল সশরীরে হাজির হওয়ার কিংবা কোনও প্রতিনিধিকে হাজির করানোর। শতরূপা এই মামলায় একজন অভিযুক্ত নন। ৩০ দিন ধরে জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি, অথচ আইনজীবীর দাবি, নিয়ম মাফিক একদিনও জেল হেফাজতে থাকার কথা নয় তাঁর। এই বলে জামিনের আবেদন জানান তিনি।
ইডি-র পাল্টা দাবি, শতরূপা এই দুর্নীতির টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিদেশ যাওয়া-আসার খরচের হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। মানিকের ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী দাবি করেন, একমাস জেল হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও তাঁর মক্কেলকে একদিনের জন্যেও জেলে গিয়ে জেরা হয়নি। তদন্তে সৌভিক সবসময় সহযোগিতা করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।মানিকের মামলার শুনানিতে অয়ন শীলকে গ্রেফতার করার কথাও উল্লেখ করেছে ইডি। অভিযোগের গভীরভাবে বিচার করা দরকার বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

 

Previous articleবাতিল হবে ফাঁ*সি ! বিকল্প ভাবছে শীর্ষ আদালত
Next articleনিশীথ মামলায় আদালতে তুমুল বাকবিতণ্ডা রাজ্য ও কেন্দ্রের আইনজীবীর