আদানি ইস্যুতে সংসদে অভিনব প্রতি*বাদ তৃণমূলের

আদানি ইস্যুতে প্রতিবাদের ঝাঁঝ বাড়াতে অভিনব পন্থা তৃণমূলের (TMC)। সংসদের দুই কক্ষ ছাড়াও করিডরে প্রতিবাদ মিছিল করলেন তৃণমূলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সংসদরা (MP)। প্রতিবাদের সাক্ষী থাকলেও স্মরণীয় অতীতে এইরকম প্রতিবাদ দেখেনি সংসদ (Parliament)।

মঙ্গলবার, প্রথমে সংসদের করিডরে বিক্ষোভ প্রদর্শন। পরে সংসদের বাইরে থেকে বিজয় চক পর্যন্ত পোস্টার নিয়ে মিছিল করেন তৃণমূল সাংসদেরা। তৃণমূল-সহ বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায় লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন। এরপর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় সংসদের উচ্চকক্ষের নেতাদের তাঁর চেম্বারে দেখা করতে বলেন। তিনি জানান, রাজ্যসভার অন্যান্য বিষয় ছেড়ে আদানি গ্রুপ নিয়ে আলোচনার জন্য ২৬৭ ধারার আওতায় ১১ টি নোটিশ পেয়েছেন। তবে সেগুলি গৃহীত হয়নি। তারই মধ্যে রাজ্যসভায় মল্লিকার্জুন খাড়গেকে কথা বলতে না দেওয়ায় প্রতিবাদে সামিল হন কংগ্রেসের সাংসদরা।

এদিন সংসদের কাজ শুরু হওয়ার পরই বিরোধীরা দল বেঁধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অবিলম্বে আদানি ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্ত এবং জেপিসি তদন্তের দাবি জানায় তারা। যতদিন না এই দাবি কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নিচ্ছে ততদিন আন্দোলন চলবে। সংসদ ভবনের প্রথমতলে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (SBI) শাখার বাইরে জড়ো হন তৃণমূল-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। প্ল্যাকার্ড নিয়ে তদন্তের দাবিতে স্লোগান দেন তাঁরা। বড় ব্যানারও টাঙানো হয়।

এদিন সংসদের বাইরেও বিজয় চকে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদেরা। মাথায় সাদা টুপি পরে ,”অ্যারেস্ট আদানি”, “দেশ কা হুয়া বুরা হাল আদানিকাল-আদানিকাল” এই স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা বিজয় চক পর্যন্ত হেঁটে আসেন। আদানি, এলআইসি ,এসবিআই সংসদে এই ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে না, তা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দু শেখর রায় ,কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায়, দোলা সেন, জহর সরকাররা।

বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এলআইসি, এসবিআই সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের জায়গা। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে এলআইসি, এসবিআই-তে টাকা রাখে। ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা উচিত কেন্দ্রের। মোদি ও আদানির মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তার জন্য পার্লামেন্ট চলছে না। আমাদের নেত্রী সব সময় দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্র ইচ্ছাকৃতভাবে আদানির ইস্যু এড়িয়ে যাচ্ছে।” আদানির সঙ্গে কেন্দ্র বোঝাপড়া করেছে অভিযোগ তুলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এলআইসি, এসবিআই। কিন্তু এগুলি নিয়ে আলোচনা করছে না। আমরা সাধারণ মানুষের স্বার্থে আলোচনা চাই।” তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “এক লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বিজেপি সরকার এই দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। তদন্ত তাদের করতেই হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সমস্ত অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকেও আহ্বান জানানো হচ্ছে তারাও যেন নিজেদের রাজ্যে নিজেদের মতো করে তদন্ত করে।”