সংরক্ষণের আওতা থেকে বাদ মুসলিমরা! সুপ্রিম সিদ্ধান্তকে ‘অমান্য’ করেই বড় ঘোষণা কর্ণাটক সরকারের

আগে কর্নাটকে মুসলিমদের জন্য যে ৪ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে রাখা হত, তা এখন থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। ফলে এবার থেকে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য যে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে, সেই সংরক্ষণের অধীনেই রাজ্যের মুসলিমরা সংরক্ষণ পাবেন।

হাতে আর মাত্র এক মাসেরও কম সময়। আর মাস পেরোলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই বড় সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল কর্নাটক সরকার (Karnataka Government)। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের (Basavaraj Bommai) ক্যাবিনেট রাজ্যের সংরক্ষণে এবার বড়সড় বদল আনল। কর্নাটকে আসন সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৬ শতাংশ করা হল। তবে সবথেকে বড় যে পরিবর্তন নজর কেড়েছে, তা হল মুসলিমদের সংরক্ষণ (Muslim Reservation) প্রত্যাহার করে নেওয়া। আগে কর্নাটকে মুসলিমদের জন্য যে ৪ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে রাখা হত, তা এখন থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। ফলে এবার থেকে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য যে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে, সেই সংরক্ষণের অধীনেই রাজ্যের মুসলিমরা সংরক্ষণ পাবেন। শুক্রবার কর্নাটক সরকারের ক্যাবিনেট বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এমন সিদ্ধান্তের পরই সরকারের চরম সমালোচনায় মুখর মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। তাঁদের দাবি সবটাই কী ভোটের রাজনীতি? আমরা কিছুতেই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেব না। মুসলিম সংরক্ষণকে একেবারে শূন্য করে দেওয়াটা সত্যিই মেনে বেওয়া যাচ্ছে না।

তবে কর্ণাটক সরকারের (Karnataka Government) তরফে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্যে ওবিসি (OBC) মুসলিমদের জন্য যে ৪ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা থাকত শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। এবার থেকে এই সংরক্ষণ পাবেন ভোক্কালিগা ও লিঙ্গায়তরা। মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য যে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ থাকে, তার অন্তর্গত করা হয়েছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই সাফ জানিয়েছেন, আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্যাবিনেটের সাব-কমিটি রাজ্যের সংরক্ষণের বিভাজনে কিছু পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিল। আমরা সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে সমাজে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হবে। ধর্মীয় সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে নিয়ে তাদের আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির অন্তর্গত করা হয়েছে। তবে সংরক্ষণের শর্তে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।

তবে কর্নাটক সরকারের আসন সংরক্ষণে রদবদল আনার সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যে সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশকে অমান্য করে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে দেশের যেকোনও রাজ্যে সংরক্ষণের সর্বোচ্চ হার ৫০ শতাংশে বেধে দিয়েছিল। উল্লেখ্য, রাজ্যে সংরক্ষণের হার ৫০ শতাংশের নীচে কমিয়ে নিয়ে আসার আবেদন এখনও কর্নাটক হাইকোর্টে শুনানি হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কর্নাটকের ভোক্কালিগাদের জন্য সংরক্ষণ ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। পঞ্চমাসালি, লিঙ্গায়তদের জন্য সংরক্ষণও ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। জনজাতি বা শিডিউল কাস্টের জন্য সংরক্ষণও ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হয়েছে। উপজাতি বা শিডিউল ট্রাইবের জন্য আসন সংরক্ষণ ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

Previous articleদিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশে দিল্লির CBI দফতরে তেজস্বী, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
Next articleসুইস ওপেন থেকে ছিটকে গেলেন সিন্ধু