বুধে অভিষেকের নেতৃত্বে গিরিরাজের কাছে তৃণমূল সাংসদরা, দাবি আদায়ে ধর্নার পরিকল্পনা

একা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নন, বুধবার কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের (Giriraj Singh) সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূল (TMC) সাংসদদরা। দাবি না মিটলে ওই মন্ত্রকেই ধর্নায় বসবেন তাঁরা। সোমবার, সংসদের দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত জানান ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক। বলেন, রাজ্যের বকেয়া আদায়ের দাবি নিয়ে তিনি নিজে যাবেন গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে।

সোমবার খেজুরির সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, কোনও দুর্নীতি হয়নি, কিছু পেন্ডিংও নেই তাও অন্যায়ভাবে গরিব মানুষের টাকা আটকেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। সেদিনই সংসদে গিয়ে অভিষেক জানান, এবার একজন সাংসদ হিসেবে তিনি দাবি আদায়ে দরবার করবেন। বুধবার ৫ এপ্রিল রাজ্যের বকেয়া পাওনা আদায়ের দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত মন্ত্রকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। দাবি না মেটালে ধর্নাও দেবে তৃণমূল। থাকবেন দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সব সাংসদ। সেই অনুযায়ী দলের নির্দেশ সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বকেয়া পাওনা আদায়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পেলে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত পঞ্চায়েত মন্ত্রকের সামনে ধর্না অবস্থান করবেন তৃণমূল সাংসদরা।

সোমবার সংসদে এসে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ সংসদ ভবনে দলীয় কার্যালয়ে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেখানেই লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে পরবর্তী রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যের বকেয়া আদায়ের দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত মন্ত্রকে যাবেন দলের সাংসদরা।

২০২২ সালের জুন মাসে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া আদায়ের দাবিতে সাক্ষাৎ করেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তখন তাঁকে ৩ পাতার জবাব দিয়েছিলেন। সুদীপ বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম এরপর সমস্যা মিটবে। ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত দরিদ্র পরিবারের লোকজনের আয় বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। এমন একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে দেখা করতে যাব।”

কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের খাতে রাজ্যকে কোনও টাকা দেয়নি। বকেয়া আদায়ের দাবিতে এর আগে প্রধানমন্ত্রীকেও স্মারকলিপি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই বঞ্চনার অভিযোগে কলকাতায় ধর্নার পর এবার দিল্লিতেও পথে নামছে তৃণমূল।

আগেই বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার, রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরব হয়েছেন অভিষেক। শহিদ মিনারের সমাবেশ থেকেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বাংলার প্রতি বঞ্চনা আর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক।

আরও পড়ুন- রামনবমীর অশা*ন্তিতে শি*শুরা! হাওড়া পুলিশকে নোটিশ NCPCR-এর

Previous articleশীঘ্রই অমর হবে মানুষ! দিনক্ষণ জানালেন গুগলের বিজ্ঞানী
Next articleনয়া সাংসদ ভবনে ঝোলানো উচিত ওটা: মোদির ডিগ্রি নিয়ে কটাক্ষ সঞ্জয়ের