দিঘার সমুদ্র সৈকতে জনসংযোগ, আপ্লুত পর্যটকরা: বুকস্টল উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর

জেলা সফরে গিয়ে বারবারই সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি। দিঘাতে গিয়েও তার ব্যতিক্রম হল না। মঙ্গলবার, কর্মী সম্মেলন সেরে নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির দর্শনের পরে সমুদ্রের পাড় ধরে বেশ কিছুটা জায়গা হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দিঘার (Digha) সমুদ্র সৈকতের সরণির দু দিকে তখন দাঁড়িয়ে হাজার হাজার পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বারবার স্লোগান উঠছে ‘মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ’, আবার কখনও ‘জয় বাংলা’। একটু কম বয়সীরা অতি উৎসাহে স্লোগান দিচ্ছে ‘খেলা হবে’।

মালদহ থেকে আসা মাঝ বয়সী এক পর্যটক হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে যান। কাতর আবেদন করলেন- “আপনাকে একটি বারের জন্য প্রণাম করতে চাই।” আর্জি শুনে হেসে ফেললেন তৃণমূল নেত্রী। ততক্ষণে সৈকত সরণির উপরেই, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের কাছে, কয়েক হাজার জনতার সামনেই একেবারে সাষ্টাঙ্গ প্রণামের ভঙ্গিতে শুয়ে পড়েন তিনি। তার দেখাদেখি আরও একজন একই ভঙ্গিতে প্রণাম সারেন। আবার কোচবিহার থেকে সপরিবারে বেড়াতে এসেছেন সুলতা রায়। পরিবারের সবাই মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেই ‘ দিদি জিন্দাবাদ’ বলে আবেগে লাফিয়ে উঠলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দিকে মুচকি হেসে হাত নাড়লেন।

সৈকতের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র। দলনেত্রীকে দেখেই হাতজোড় করে প্রণাম করতে এগিয়ে যান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীও হাত জোড় করে প্রণামের প্রত্যুত্তর দিলেন হাসিমুখে। মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীকে একেবারে হাতের নাগালে পেয়ে বেজায় খুশি দিঘায় আসা পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূল সুপ্রিমো যতবারই দিঘা এসেছেন, সমুদ্র সৈকত বরাবর কয়েক কিমি হেঁটেছেন। এবারও তিনি হাঁটলেন। আর সঙ্গে জনসংযোগ।

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে নিয়ে সৈকত বরাবর জগন্নাথ ঘাটের জগন্নাথ মন্দিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। আগে এখানেই তাঁর স্বপ্নের জগন্নাথ মন্দির গড়ার কথা ছিল। কিন্তু জায়গা সংকুলনের জন্য তা হয়ে ওঠেনি। মন্দিরে তখন পুরোহিত ছিলেন। তাঁকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নতুন মন্দিরে রথ রাখার বড় জায়গা করে দিচ্ছি। রথের সময় এই মন্দির কি মাসির বাড়ি হবে?”

তারপর তৃণমূল সুপ্রিমো যান সৈকতের দ্বিতীয় বিশ্ববাংলার পাশে ঘটের আকৃতি বিশিষ্ট একটি বুক স্টলে। সেই স্টলটির উদ্বোধন করেন। স্টলের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিভিন্ন বই স্তরেস্তরে সাজানো ছিল। তার মধ্যে থেকে ‘আজব কবিতা’ বইটা নিয়ে নিজের কবিতা পাঠ করে শোনান মমতা। তারপর ফের হাত জোড় করে একেবারে ওল্ড দিঘার ১ নম্বর ঘাট পর্যন্ত সরণির দুই দিকে দাঁড়ানো জনতার সঙ্গে জনসংযোগ করতে করতে হাঁটেন তিনি। সৈকতে রাখা নৌকা দেখে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সম্পর্কে জেলাশাসকের কাছ থেকে খোঁজখবরও নেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন- মমতা-অভিষেকের যৌথ চাপে নতিস্বীকার! গ্রামোন্নয়ন খাতে বকেয়া প্রায় ৯৭৯ কোটি দিল কেন্দ্র

Previous articleমমতা-অভিষেকের যৌথ চাপে নতিস্বীকার! গ্রামোন্নয়ন খাতে বকেয়া প্রায় ৯৭৯ কোটি দিল কেন্দ্র
Next articleলাল-হলুদের নতুন কোচ হচ্ছেন সার্জিও লোবেরা : সূত্র