যৌ.নাঙ্গ লি.ঙ্গ পরিচিতির মাপকাঠি নয়, শীর্ষ আদালতের শুনানিতে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির

আবেদনকারীদের যুক্তি শোনা এখনও শেষ হয়নি। আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার মুকুল রোহতগি আরও কিছু কথা বলতে চেয়েছেন।

সমলিঙ্গ বিবাহের (Same Sex Marriage) বৈধতা নিয়ে সোমবার শীর্ষ আদালত নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারল না। আগামিকাল চলবে শুনানি। যদিও আজ দিনভর উঠে এল একাধিক প্রসঙ্গ। সমকামী বিয়েতে (Homosexual Marriage) আইনি অনুমোদন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়েছিল। বিরোধিতায় সরব কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। সেই আবেদনের ভিত্তিতে আজ রায় ঘোষণার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের (Chief Justice) নেতৃত্বাধীন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট,বিচারপতি হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) সাংবিধানিক বেঞ্চ একাধিক সওয়াল জবাব প্রত্যক্ষ করার পর আজ রায়দান স্থগিত রেখেছে।

 

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আজ জানান যে যৌনাঙ্গ লিঙ্গ পরিচিতির মাপকাঠি নয়। কোনও ব্যক্তির শরীরে কোন যৌনাঙ্গ রয়েছে সেটা বড় কথা নয়। এটা অনেক বেশি জটিল। একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার ধারণা শুধুমাত্র যৌনাঙ্গের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ হয় না। সোমবারই এই মামলায় সরকার অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়ে দাবি করে, বিয়ের স্বীকৃতি সংক্রান্ত মামলা শোনারই অধিকার নেই সুপ্রিম কোর্টের। আজ মঙ্গলবার সলিসিটর জেনারেল হলফনামার সুরেই এই কথাকে সমর্থন করে জানান, কোনও সম্পর্কের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা কখনই আইন বা বিচারের উপর নির্ভর করে না। এরপরই সরব হন মুকুল রোহতগি। তিনি বলেন, অপর পক্ষের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, যেন এটা ১৯২০ বা ৩০ সাল। তাঁরা বলছেন সমকামীরা সমান নয়, ৩৭৭ ধারার রায় নিয়ে খুশি থাকুন, আপনারা ইতিমধ্যে যা অধিকার পেয়েছেন তাই নিয়ে খুশি হন। গত ৭০ বছর ধরে এই আদালত মৌলিক অধিকার রক্ষা করে আসছে। এই অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে আদালত কখনও সংসদের জন্য অপেক্ষা করেনি। ৩২ নম্বর ধারা একটা মৌলিক অধিকার। সংসদ কবে সমকামীদের এই অধিকার দেবে, তার জন্য অপেক্ষা করার কথা বলতে পারে না আদালত।এখানেই শেষ নয় মুকুল এদিন তুলে আনেন জাতি ভিত্তিক সংরক্ষণের প্রসঙ্গও । তিনি বলেন সামাজিক বৈষম্য থাকার জন্যই সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া LGBTQ সম্প্রদায়কে বিয়ের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার মানে তাঁদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। সেটা কি সমর্থন করবে সুপ্রিম আদালত? সমলিঙ্গের বিয়ের ক্ষেত্রে প্রজনন নিয়ে সমস্যার প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্র। মুকুল রোহতগি জানান, এখনকার দিনে এটা কোনও সমস্যা হতেই পারে না। দত্তক নেওয়া, আইভিএফ, সারোগেসির মতো প্রজননের অনেক প্রক্রিয়া আছে।

প্রসঙ্গত গত শুনানিতে কেন্দ্র বলেছে, বিয়ে নিয়ে ভারতীয় সমাজে একটা নির্দিষ্ট ধারণা গেঁথে রয়েছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী মুকুল রোহতগি (Mukul Rohatogi)সুপ্রিম কোর্টে বলেন, আমাদের সকলের বিয়ের করার অধিকার রয়েছে। আর সেই ঘোষণা আদালতের করা উছিত। বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে সেই বিয়েকে স্বীকৃতি দেবে রাষ্ট্র। আর কেবলমাত্র আদালতের এই ঘোষণার পরই এই বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এখনও ৩৭৭ অনুচ্ছেদ বাতিলের রায়ের পরও বাঁকা চোখে দেখা হয় বলেও এদিন উল্লেখ করেন রোহতগি । ২০১৮ সালে ৩৭৭ অনুচ্ছেদকে বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় সমকামিতা আর অপরাধ নয়। সোমবারের মামলায় রোহতাগি এই যুক্তি সামনে রেখে আজ সমকামী বিবাহের বৈধতা দাবি করেন। আবেদনকারীদের যুক্তি শোনা এখনও শেষ হয়নি। আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার মুকুল রোহতগি আরও কিছু কথা বলতে চেয়েছেন। আদালতের তরফে সেই অনুমতিও মিলেছে। কাল কি সত্যি কোনও ঐতিহাসিক রায় ঘোষিত হতে চলেছে। সবাই তাকিয়ে শীর্ষ আদালতের দিকে।

 

Previous articleখোঁজ মিলল পর্বতারোহী বলজিৎ কৌরের, বেঁচে আছেন তিনি
Next articleতীব্র দহনে রাজ্যে পানীয় জলের সরবরাহ ঠিক রাখতে জরুরি নির্দেশ মুখ্যসচিবের