১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার(Modi Govt)। অন্যদিকে, রাজ্যের ছোট বড় নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে বাংলা ভাগের গল্প। এই ইস্যুতেই ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে গিয়ে বুধবার কোচবিহার থেকে সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানালেন, “বিজেপির যারা নেতা আছে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা। এদের একজনও যদি বলার ক্ষমতা রাখে উত্তরবঙ্গ(North Bengal) আলাদা রাজ্য হবে। আমি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না।” একদিকে যখন লাগাতার অর্থনৈতিকভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করে চলেছে কেন্দ্র। অন্যদিকে তখন বিজেপি নেতাদের মুখে বাংলা ভাগের কথা আসলে নজর ঘরানোর পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে তৃণমূল।

নাটাবাড়ির তুফানগঞ্জ ফুটবল ময়দানে তৃণমূলের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কড়া সুরে বিজেপিকে তোপ দাগেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেখানেই তিনি বলেন, “আপনাদের ভোটে কোচবিহার থেকে একজন বিজেপির সাংসদ হয়েছেন। তারপর বিজেপির নেতারা আপনাদের বলল পৃথক রাজ্য গড়ব। এরা আপনাদের কাছে গিয়ে ছোট ছোট মিটিং করে বলে বাংলা ভাগ করব। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি বিজেপির যারা নেতা আছে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা। এদের একজনও যদি বলার ক্ষমতা রাখে উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য হবে। আমি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না। এদের পুরো পার্টিটাই দুনম্বরি। সারাদিন মিথ্যা কথা বলে। মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ফায়দা তোলে। আমি মনে করি কলকাতার যা অধিকার কোচবিহারেরও একই অধিকার। উত্তর-দক্ষিন সব মিলিয়ে একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমমবঙ্গ।”
একইসঙ্গে তিনি জানান, “নির্বাচনে ধর্মের নামে ভোট দেবেন না। নিজের স্বার্থে ভোট দেবেন। ৯ বছর মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেছে কোচবিহারের জন্য কী করেছে। একটাও প্রশাসনিক বৈঠক করেছে এখানকার মানুষের স্বার্থে। ৯ বছরের রিপোর্ট কার্ড আনুন, কোচবিহারের জন্য উনি কী করেছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন আমরা রিপোর্ট কার্ড আনব। হোক প্রতিযোগিতা। এখানকার সাংসদ ২ টো মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে। ৯ বছর ক্ষমতায় আছে এরা ১ টা মিটিং যদি দেখাতে পারে কোচবিহারের মানুষের স্বার্থে আমি যাত্রা এখনই বন্ধ করে দেব। আর রাজনীতির মাটিতে পা রাখব না।” এদিন অভিষেক বলেন, “ধর্মের নামে যারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন দেখুন আপনাদের টাকা আটকে রেখেছে। ২.৬৫ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজে যুক্ত তাঁদের প্রাপ্য ৭০০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার লোকের লিস্ট পাকা বাড়ির জন্য কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। ৬ মাস হয়ে গেছে এখনও আটকে রেখেছে। বালাকোট ও পুলওয়ামা নিয়ে যারা ভোট দিয়েছিলেন তারা দেখবেন সত্যপাল মালিক কি বলেছেন। এই মোদি সরকারের জন্য ৪০ জওয়ান মারা গেছে, তাঁদের মৃত্যু নিয়ে এরা ভোট চেয়েছে।”

এরপর কোচবিহারের সাংসদ ও স্থানিয় বিজেপি বিধায়ককে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “দায়িত্ব পালন না করে মিডিয়ায় বাজার গরম করে লাভ কী? একদিনও এখানকার মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে বিধানসভায় সরব হয়নি এখানকার বিধায়ক। শুধু গেরুয়া তিলক ও উত্তরীও পরে বিধানসভায় ঢোকে আর ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যায়। ৫ মিনিটও থাকে না। এদের যারা নির্বাচিত করেছেন তারা আপনাদের প্রাপ্য পরিষেবা বুঝে নিন। এদের বাড়ি ঘেরাও করুন। ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৫০ দিন কলকাতায় ফুর্তি করে। সন্ধ্যা ৭ টা বাজলে স্নো পাওডার মেখে সেজেগুজে বাবু হয়ে টিভির পর্দায় বসবে। এসব চলবে না।” নিশীথকে তোপ দেগে বলেন, “নিশীথের দিল্লির বাড়ি মার্বেল প্যালেস। মানুষের কত টাকা থাকলে এভাবে অপচয় করে। জেতার পর একদিনও মানুষের পাশে দাড়ায়নি। একটা মিটিং করেনি। ক্রিড়া মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী উনি। এতদিনে এখানে একটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স হয়েছে? হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফের ৪-৫ টা গাড়ি নিয়ে সারাদিন ঘুরছে। সেই বিএসএফ আবার রাজবংশীদের গুলি করে মারছে।”
