বিশ্বের বিরল ঘটনা, গর্ভ.স্থিত শিশুর মস্তিষ্কে জটিল অপারেশন!

সফল অস্ত্রোপচারের দুদিন পর ওই নারীর সন্তান প্রসব করান চিকিৎসকরা। ডেনভার নামের ওই শিশুকন্যার এমআরআই স্ক্যানেও মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক রক্তপ্রবাহের কোনও লক্ষণ মেলেনি।

জন্ম নেওয়ার পর শিশুর দেহে বা মস্তিষ্কে সমস্যা হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেইমতো চিকিৎসা পদ্ধতিও বহুল প্রচলিত। কিন্তু সে যে তখনও পৃথিবীর আলো দেখেনি, অথচ বিজ্ঞান বলল ভ্রূণের মস্তিষ্কে এক বিরল বিকৃতি (A rare malformation in the fetal brain)রয়েছে তার। এবার? গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হলেও মস্তিষ্কে এই প্রথম অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হল। গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার (Fetal brain surgery) শুধু বিরল নয় বরং বিশ্বের বুকে প্রথম এই ঘটনা। ম্যাসাচুসেটসের ব্রিঘাম অ্যান্ড উওমেনস হসপিটাল অ্যান্ড বোস্টন চিলড্রেনস হসপিটালে (Brigham and Women’s Hospital and Boston Children’s Hospital in Massachusetts) এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন মার্কিন চিকিৎসকেরা। ‘ভেনাস অফ গ্যালেন ম্যালইনফরমেশন’ (Venus of Galen’s Malformation) নামের এক বিরল রোগ ধরা পড়ে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কে। সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে মস্তিষ্কের রক্তজালকের বিরল সমস্যা এটি। মস্তিষ্ক থেকে যেসব রক্তনালী হৃৎপিণ্ডে রক্ত পৌঁছে দেয়, সেগুলো সঠিকভাবে গঠিত না হলে এই সমস্যা তৈরি হয়। এর ফলে রক্তনালী এবং হৃৎপিণ্ডে চাপ পড়ে, যা একাধিক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এবার সেই রোগের সফল অপারেশন করে নজির গড়লেন চিকিৎসকেরা।

জানা যাচ্ছে ওই শিশুকন্যা মাতৃগর্ভে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছিল। আলট্রা সাউন্ড পরীক্ষায় ধরা পড়ে শিশুর মস্তিষ্কের সমস্যার কথা। অনেক শিশুই গর্ভস্থ থাকার সময় এই রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সেই শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তাই দেরি না করে দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইউটেরাসে থাকা অবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ডের সাহায্য নিয়ে রক্তনালীর অস্ত্রোপচার করা হয়। ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটের ভিতরে সূচ ঢুকিয়ে অপারেশন হয়েছে বলে জানা যায়। সফল অস্ত্রোপচারের দুদিন পর ওই নারীর সন্তান প্রসব করান চিকিৎসকরা। ডেনভার নামের ওই শিশুকন্যার এমআরআই স্ক্যানেও মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক রক্তপ্রবাহের কোনও লক্ষণ মেলেনি।

ভ্রূণ অবস্থাতেই অস্ত্রোপচার অবশ্যই জটিল বিষয়। বিশ্বের বুকে নতুন ইতিহাস তৈরি করলেন চিকিৎসকেরা। এই বিরল রোগ সারানোর পদ্ধতি আপাতত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে (Clinical trial) আছে। জন্মের আগে গ্যালেনের বিকৃতির শিরাকে সুস্থ করে তুলতে আলট্রা সাউন্ড নির্দেশিত ট্রান্সউটারিন এমবোলাইজেশন পদ্ধতি (Transuterine embolization procedure)ব্যবহার করছেন চিকিৎসকেরা।


 

Previous articleট্রেনে ফেরার পথে রামপুরহাট স্টেশনে আবেগপ্রবণ মমতা, সাঁইথিয়ায় জনসংযোগ
Next articleমাদ্রাসার ১৭২৯টি পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি কমিশনের