সামনে ২০ লক্ষ কোটি টাকার সোনার ভল্ট, থমকে গেল চোর, তারপর…

ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর আশি হাজার পাউন্ড পুরস্কার দিয়েছিলেন ওই সাফাই কর্মীকে। নিরাপত্তার স্বার্থে গোটা ব্যাপারটাই গোপন রাখা হয়।

লোভ সামলানো খুব একটা সহজ কথা নয়। কিন্তু চোখের সামনে কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার সোনার ভল্ট (gold vault) দেখেও কেউ নিজেকে সামলাতে পারে ? ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের (Bank of England) ইতিহাসে সবথেকে কালো অধ্যায় হতে পারতো এই ঘটনা। অথচ সামান্য এক সাফাই কর্মী বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশের নিরাপত্তা (Security) ব্যবস্থার বড় গলদকে চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরল। একটা ব্যাঙ্ককে দেউলিয়া করতে পারত একটা মাত্র মানুষ। অথচ তিনি সেখান থেকে একটা ইটও সরাননি। অনেকটা সিনেমার গল্পের মতো মনে হলেও এটা আসলে বাস্তব কাহিনী।

গোটা ব্যাপারটা জানতে হলে ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে ১৬৯৪ সালে। ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড (Bank of England) তখন তৈরি হয়। সেই সময় একটা ভাড়া বাড়িতেই লেনদেনের কাজকর্ম চলত। ১৭৩৪ সালে নিজস্ব ভবন তৈরি করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তখন প্রযুক্তি এত উন্নত না হলেও ব্যাঙ্কের আটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কারোর মনে কোন প্রশ্ন ছিল না। এখানে মোট ৮টি ভল্ট আছে। ইংল্যান্ডের সবথেকে বেশি সোনা এখানে মজুদ আছে তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সুনিশ্চিত করা হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার ১৩৪ টন সোনা চারলক্ষ ইটের আকারে এখানে গচ্ছিত আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম কুড়ি লক্ষ কোটি টাকা। থ্রেডনিডল স্ট্রিটের এই ব্যাঙ্কের আশেপাশে অনেক অফিস রয়েছে। একদিন ব্যাঙ্কের কাজ চলার সময় আচমটাই একটি চিঠি পান কর্তারা। যেখানে লেখা ছিল, যে এক ব্যক্তি ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের ভল্টে রয়েছেন এবং তিনি ইচ্ছে করলেই সব সোনা এখান থেকে নিমিষে সরিয়ে ফেলতে পারেন। প্রথমে ব্যাপারটাকে গুরুত্ব না দিলেও পরে কয়েকজন আধিকারিক সেই ভল্টে গিয়ে দেখেন সত্যি সত্যি এক অচেনা ব্যক্তি সেখান থেকে বেরিয়ে আসছেন। জানা যায় তিনি পেশায় একজন সাফাই কর্মী। তিনি জানান, ম্যানহোল পরিষ্কার করতে গিয়ে মাটির নিচের এক সুরঙ্গ পথ আবিষ্কার করেন তিনি ,যা সোজা চলে গেছে ওই ব্যাঙ্কের ভল্টে। এর আগে দু-তিনবার ওই পথে ভল্ট পর্যন্ত যাতায়াত করেছেন বলে সেই সাফাই কর্মী জানাবার পর হুঁশ ফেরে কর্তাদের। তাঁরা বুঝতে পারেন উপর থেকে যতই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হোক না কেন মাটির নীচে দিয়েও যেমন কান্ড ঘটতে পারে সেটা তাঁরা ভেবেও দেখেননি। কিন্তু কী আশ্চর্য, সুযোগ থাকে সত্বেও ভল্ট থেকে একটা সোনার ইটও সরাননি সেই কর্মী! এমন মানুষ বিশ্বের বুকে বিরল তো বটেই। এরপরই ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর আশি হাজার পাউন্ড পুরস্কার দিয়েছিলেন ওই সাফাই কর্মীকে। নিরাপত্তার স্বার্থে গোটা ব্যাপারটাই গোপন রাখা হয়।

 

Previous articleইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো ডাক্তারিতেও ডিপ্লোমা কোর্স চালুর প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীর, দ্রুত নিয়োগ পুলিশে
Next articleলক্ষ্য মহাজোট: ২৪-এর রণকৌশল সাজাতে বৈঠক পাওয়ার-নীতীশের