Thursday, August 28, 2025

শকুনের বাসস্থানে মা শকুন্তলা! কোন্নগরের জাগ্রত পুজো ঘিরে বাড়ছে উন্মাদনা

Date:

সুমন করাতি, হুগলি

আগামী ১৩ মে শনিবার হুগলি জেলার কোন্নগরে (Konnagar, Hooghly) ঐতিহ্যবাহী এবং জাগ্রত মা শকুন্তলার (Shankuntala Kali Puja)১৩৪ তম বার্ষিক উৎসব। পুজো উপলক্ষে এলাকার তো বটেই এমনকি পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকেও মানুষ ভিড় জামান মন্দির প্রাঙ্গণে। হাতে মাত্র একটা দিন তাই শেষ পর্যায়ে প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে কোন্নগরকে (Konnagar) ।

মহামারী ও মানুষের বিপদ কাটাতে শকুনদের বাসস্থানে মা শকুন্তলা কালীর আবির্ভাব। পুজোকে ঘিরে প্রাচীন কাল থেকেই একাধিক বিশ্বাস চলে আসছে এলাকার মানুষের মনে । এই দেবী নাকি সূর্যের মুখ দেখেন না। কোন্নগরের শকুন্তলা পুজোর ইতিহাস সম্বন্ধে জানা যায়, বর্তমানে এস সি চ্যাটার্জি (S C Chatterjee) স্ট্রিটের যে রাস্তাটি রয়েছে কয়েকশবছর আগে সেই রাস্তার দু ধার ছিল জঙ্গলে ভরা। কথিত আছে একদিন সন্ধ্যায় এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ ওই স্থানে একটি অল্প বয়সী মেয়েকে দেখেন যে গঙ্গা স্নান করে একটি অশ্বত্থ গাছের তলায় দাঁড়ায়। এরপর সেই নারী মূর্তিটি হঠাৎই উধাও হয়ে যায় । তারপর সেই রাতেই ওই ব্রাহ্মণ স্বপ্নে মায়ের নির্দেশ পান এবং মা বলেন,” তুমি এখানে আমার মন্দির করে পূজোর ব্যবস্থা কর।” মায়ের সেই আদেশ মেনে সেই ব্রাহ্মণ ওখানে একটি ছোট্ট কুঁড়েঘর করে শকুন্তলা মায়ের পূজা শুরু করেন। যেহেতু এই জঙ্গলে গাছে প্রচুর শকুন, চিল সহ পাখিদের বাসা ছিল তাই এখানকার মা শকুন্তলা মা নামে বিখ্যাত।

পুজো কমিটির সম্পাদক পাঁচু গোপাল গরান (Panchu Gopal Goran) জানান যে এই পুজোর একটা দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা কোন্নগরবাসীর মুখে মুখে ফেরে। এবার ১৩ মে শনিবার পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে শকুন্তলা মা পল্লীবাসীকে বিপদে রক্ষা করেন। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের অমাবস্যা তিথিতে মায়ের পুজো হয়। এই পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে পুজোর দিন যখন সূর্য অস্ত যায় সেই সময় মাকে এখানকার সমস্ত ভক্তরা কাঁধে করে নিয়ে এসে মন্দিরে স্থাপন করেন তারপর সারারাত পুজোর পর সেই মাতৃ প্রতিমা সূর্যোদয়ের আগেই গঙ্গায় বিসর্জিত হন। এইটাই এখানকার রীতি।পুজোর দিন সকাল থেকেই শুধু হুগলি জেলা নয়, আশেপাশের এলাকা থেকেও কয়েক লক্ষ মানুষ এসে এখানে এসে গঙ্গায় স্নান করে মন্দিরে মায়ের বেদিতে জল ঢালেন।

প্রতিবছর মায়ের উৎসব উপলক্ষে এখানে আট থেকে দশ দিনব্যাপী বিশাল মেলা বসে। সেই মেলায় প্রচুর মানুষ আসেন । গত দুবছর করোনার কারণে এখানে ঘট পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল কিন্তু এ বছর মায়ের আশীর্বাদে আবার মূর্তি নিয়ে এসে মায়ের আরাধনা হবে।

 

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...
Exit mobile version