কয়লা সংকটের জের! ১৮ দিন ধরে বন্ধ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

সূত্রের খবর, গত চার মাসে তিন দফায় মোট ৪৮ দিন কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ ছিল। আর সেকারণে ওই সময় কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।

খায়রুল আলম, ঢাকা

কয়লা সংকটের কারণে ১৮ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (Rampal Thermal Power Station)। গত ২৩ এপ্রিল রাত থেকে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কবে থেকে সেই উৎপাদন ফের স্বাভাবিক হবে তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, গত চার মাসে তিন দফায় মোট ৪৮ দিন কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ ছিল। আর সেকারণে ওই সময় কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ (Electric Distribution) বন্ধ হয়ে পড়ে।

এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে খবর, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আমদানীকৃত কয়লার স্বাভাবিক মজুত শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরেও সংরক্ষিত থাকা কয়লা দিয়ে আরও ৫ দিন উৎপাদন চালু রাখা হয়। পরে সংরক্ষিত কয়লার মজুত শেষ হয়ে গেলে ৪ জানুয়ারি সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার প্রথম ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কয়লা সরবরাহ (Coal Supply) স্বাভাবিক হলে প্রায় এক মাস পরে ফের উৎপাদন শুরু হয় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এরপর ১৫ এপ্রিল রাত থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফের বন্ধ হয় এই মেগা প্রকল্পের উৎপাদন। এরপর তিনদিন উৎপাদন বন্ধ থাকার পর ১৮ এপ্রিল সেটি সচল হলেও কয়লা সংকটে ২৩ এপ্রিল রাত থেকে ফের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটির। তবে টাকার অভাবে ঋণপত্র খুলতে না পারার কারণেই বারবার সংকটে পড়ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

তবে বারবার এই উৎপাদন বন্ধ হওয়ার কারণে চরম আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চলতি মাসের জুনেই চালু হওয়ার কথা দ্বিতীয় ইউনিটটিরও। অপরদিকে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। কারণ চুক্তি অনুযায়ী, রামপালের বিদ্যুৎ পিডিবিকে কিনতে হয়। আর সেকারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও পিডিবিকে ভাড়া দিতে হবে। কেন্দ্র সূত্রে আরও জানা যায়, নিয়মিত ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছিল রামপাল কেন্দ্র। উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছিল। নিয়মিত উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রটিতে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিকটন কয়লা লাগত। আর এসব কয়লা আসত ইন্দোনেশিয়া থেকে। এছাড়া দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে তখন প্রতিদিন কয়লা প্রয়োজন হবে দশ হাজার টন। যেখানে প্রতিদিন ৫ হাজার টনের যোগান দিতেই হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ, সেখানে প্রতিদিন দশ হাজার টন কয়লা সরবরাহ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। ফলে লোডশেডিংয়ের (Loadsheading) মাত্রা বেড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর মোংলা অঞ্চলের আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, উৎপাদনে আসার পর থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে খুলনাসহ এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। কিন্তু ঈদের পর থেকে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

 

Previous articleএখনই অন্তরবর্তী নির্দেশ নয়: অভিষেক মামলায় জানালেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা
Next articleবয়ান নেওয়া হল ব্রিজভূষণ সিং-এর, গঠন করা হল বিশেষ তদন্তকারী দল