লন্ড.ভন্ড সেন্ট মার্টিন! মোকার দাপট মায়ানমারে, কিছুটা হলেও র.ক্ষা পেল বাংলাদেশ

তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল রিসোর্ট ও স্থানীয় প্রায় ছয় হাজার মানুষ আপাতত জায়গা নিয়েছেন।

খায়রুল আলম, ঢাকা

আশঙ্কা সত্যি করে রবিবারই ল্যান্ডফল হল অতিশক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকার (Cyclone Mocha)। বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal)সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকার দিক পরিবর্তিত হয়ে মূল অংশটি মায়ানমারের দক্ষিণাঞ্চল (Southern part of Myanmar) দিয়ে চলে গেছে। আর একারণেই বড় ধরণের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রেহাই পেল বাংলাদেশ (Bangladesh)। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা আজ দুপুর ৩ টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে (island of Saint Martin) আছড়ে পড়ে।সেন্ট মার্টিনের মূল ভূখণ্ডের কোথাও জলোচ্ছ্বাস না হলেও মোকার ধ্বংসলীলায় বিধ্বস্ত মায়ানমার। সূত্র মারফত জানা গেছে টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনে (Teknaf and Saint Martin) দশ হাজার ঘর বিধ্বস্ত ও ১১ জন আহত। ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার অন্তত ৩৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কয়েকশ গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল রিসোর্ট ও স্থানীয় প্রায় ছয় হাজার মানুষ আপাতত জায়গা নিয়েছেন।

সেন্ট মার্টিনের মতো টেকনাফের বাহারছরা, সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপ উপকূল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। গাছ পড়ে রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়েছে। তবে একটাই রক্ষে যে, সেন্ট মার্টিন ও টেকনাফের মতো বড় প্রভাব পড়েনি কক্সবাজার সদর, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায়। সেন্ট মার্টিনে দুপুর আড়াইটার সময় ঘূর্ণিঝড় মোকার সর্বোচ্চ ১৪৭ কিলোমিটার গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আজ রাতেই মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেওয়া হবে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর। সেক্ষেত্রে কাল যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে, তখন সিগন্যাল তুলে নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। জানা যাচ্ছে সেন্ট মার্টিনের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর দিয়ে মোখা অতিক্রম করেছে। তবে এর ৫০ শতাংশের বেশি অংশ মায়ানমারের ওপর দিয়ে গেছে। যদি সেন্ট মার্টিনে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অংশ এসে পড়তো তাহলে তার বড় ধরনের প্রভাব কক্সবাজার পর্যন্ত থাকত।

আবহাওয়া দফতর বলছে, রাত সাড়ে সাতটার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকার দ্বিতীয় ভাগ দেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। এরইমধ্যে ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ সেন্ট মার্টিন অতিক্রম করেছে।মোকা বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করার পরই রাতের মধ্যে কক্সবাজারসহ অন্যান্য বন্দরের মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।দেড় হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

একদিকে যখন এত দাপট তখন একেবারে বিপরীত অবস্থা খুলনার সুন্দরবন উপকূলে। আকাশে রোদের ঝলকানি আর মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এলেই সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকায় এক দিন আগেই বৃষ্টি শুরু হয়। সারাদেশে আর কোথাও মোকার তান্ডবের খবর নেই। এমনকি খোদ রাজধানী ঢাকায় আজকের তাপমাত্রা ছিলো ৪০ ডিগ্রির ওপরে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকেও ওই একই স্থানীয় সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

 

Previous articleরাজস্থানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে একাধিক রেকর্ড আরসিবি অধিনায়কের
Next article৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে ফের আদালতে চাকরিহারারা