কুন্তল চিঠি-মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ! ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট যাবেন অভিষেক

তবে, দেশের নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার।” অভিষেক জানান, বিচার ব্যবস্থার উপর তাঁর পূর্ণ আস্থা আছে।

আদালতের রায় শিরোধার্য। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে তাঁর অধিকার আছে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার। কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায়ের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে একথা জানালেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি জানান, “আমাকে কোনও মামলায় যদি কোনও তদন্তকারী সংস্থা ডাকে, তাহলে আমি যাব। প্রয়োজনে জনসংযোগ যাত্রা থামিয়েও যাব। তবে, দেশের নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার।” অভিষেক জানান, বিচার ব্যবস্থার উপর তাঁর পূর্ণ আস্থা আছে।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, এর আগেও ইডি তাঁকে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। তিনি গিয়েছিলেন। তারপরে সেই জিজ্ঞাসাবাদ কলকাতায় করার জন্য তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। তাঁকে সেই অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। অভিষেক বলেন, “আদালতের রায় মাথা পেতে নিয়েছি। যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা ডাকলে যাব। দরকার হলে জনসংযোগ যাত্রা থামিয়েও আমি যাব।“ একই সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, দেশের নাগরিক হিসেবে তাঁর অধিকার আছে, আগামী দিনে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার। তিনি সেটা নিশ্চিত ভাবেই যাবেন। এখনও কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের কপি হাতে পাননি তিনি। পাওয়ার পরে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। অভিষেকের কথায়, বিচারপতি যে কোনও রায় দিতে পারেন। বিচার ব্যবস্থার উপর তাঁর আস্থা আছে। একই সঙ্গে রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার অধিকারও আছে।

২৯ মার্চ শহিদ মিনারের মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মদন মিত্রকে চাপ দেওয়া হয়েছে তাঁর নাম বলার জন্য। সেই বিষয় নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলা হয়েছে। অমিত শাহের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, যেদিন তিনি এই কথা বলেছিলেন, সেই দিনই একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাঁকেও নরেন্দ্র মোদির নাম বলতে চাপ দিয়েছিল CBI। অর্থাৎ অভিষেক যে অভিযোগ করছেন, তাকে কার্যত মান্যতা দিয়েছেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে, এই বিষয়ে তাঁকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে না।

এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, টিভি-র পর্দায় যাঁকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, ইডি-সিবিআইয়ের FIR Named তাঁকে ডাকা হয় না। যাঁর কনভয়ে চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যু হয়, তিনি আদালত থেকে রক্ষাকবচ পান। ED-CBI অনেকভাবে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে অভিষেক জানান, এভাবে তাঁকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে এই মুহূর্তে পশ্চিম বর্ধমানে আছেন অভিষেক। টানা ৬০দিন রাস্তায় থাকছেন। ঝড়-বৃষ্টি-দুর্যোগ উপেক্ষা করেই জনসংযোগ যাত্রা, রোড শো, সমাবেশ, অধিবেশন চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁরে সব রোড শো জনসুনামির চেহারা নিচ্ছে। তাহলে কী সেই জনয়প্রিয়তা দেখেই ভয় পেয়েছে বিজেপি? অভিষেক স্পষ্ট জানান, “ভয় দেখিয়ে যাত্রা আটকানো যাবে না।“

এদিন, কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় আগের রায় বহাল রাখে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ। আদালত জানায়, প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারবে CBI-ED। পাশাপাশি, কুন্তল ও অভিষেককে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত। ৯ জুনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে তদন্তকারী সংস্থাকে।

জরিমানার প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, রায়ে বলা হয়েছে, তিনি আদালতের সময় নষ্ট করেছেন! অথচ দিনের পর দিন যে কোনও ইস্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হচ্ছে। তাতে আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে না! প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে, আদালতের রায়ে মাথা পেতে নিয়েই তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে জানান অভিষেক।

 

Previous articleকলকাতাকে প্রেমপত্র দিতে ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ বড় পর্দায় বিক্রম -সোলাঙ্কি !
Next articleবিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গেলেন চাকরিহারা ববিতা