‘কুড়মি’ আন্দোলনের নামে গু.ণ্ডামি বরদাস্ত নয়, ঝাড়গ্রামে কড়া বার্তা অভিষেকের

সোমনাথ বিশ্বাস, ঝাড়গ্রাম: কুড়মি আন্দোলনের নামে কার্যত জঙ্গিপনা দেখা গেল ঝাড়গ্রামে। গড় শালবনিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করল একদল কুড়মি। এই ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এই হামলার পিছনে রাজ্যের বিরোধী দলের যোগ রয়েছে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত করলেন তৃণমূল সাংসদ। জানালেন, “ইট ছুঁড়ে আন্দোলনের নামে জল্লাদদের উল্লাস ঝাড়গ্রামকে অশান্ত করছে। সবাই একজোট হোন। কারা পিছনে আছে জানি। খুঁজে বার করব। তাদের মুখে জয় শ্রীরাম স্লোগান কেন?”

শুক্রবার ছিল তৃণমূলের নবজোয়ারের ৩০তম দিন। এদিন ঝাড়গ্রামে কর্মসূচি ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জনজোয়ারে ভাসতে ভাসতে অভিষেক যখন অধিবেশন মঞ্চ ও জনসভার এলাকায় ঢুকছেন, ঠিক তার কয়েক কিলোমিটার আগে গড় শালবনিতে একদম কুড়মি আন্দোলনকারী তাঁর কনভয়ের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। অভিষেকের গাড়ি অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও তাঁর কনভয়ের পিছনের একটি গাড়িতে ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহ হাঁসদা। তাঁর গাড়িতে এলোপাতাড়ি ইঁট-পাটকেল ছোঁড়ে কুড়মি আন্দোলনকারীদের একাংশ। চোট পান বীরবাহ। তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে চোখে ঢুকে যায় চালকের। ওই গাড়িতেই ছিলেন বীরবাহার বয়স্ক বাবা। তিনিও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভাঙচুর করা হয় সংবাদ মাধ্যমের গাড়িও। আহত হয়েছেন সাংবাদিকরাও। পুলিশের উপরও হামলা চালানো হয়।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অভিষেক বলেন, “কুড়মি আন্দোলনের নামে কিছু লোক বর্বরতা করেছে। একজন এসটি মহিলা বীরবাহা হাঁসদা রাজ্যের মন্ত্রী। তাঁর উপর আক্রমণ হয়েছে। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি হয়েছে।” পাশাপাশি এর পিছনে বিজেপি যোগের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে অভিষেক বলেন, “দাবি একটি, দশটি গ্রুপ কেন। ইট ছুঁড়ে আন্দোলনের নামে জল্লাদদের উল্লাস ঝাড়গ্রামকে অশান্ত করছে। সবাই একজোট হোন। কারা পিছনে আছে জানি। খুঁজে বার করব। তাদের মুখে জয় শ্রীরাম স্লোগান কেন? মদের বোতল ছোড়া হয়েছে। এই আন্দোলনের মাথায় যাঁরা আছেন তাঁরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ্যে জানান, এই ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ আছে নাকি নেই। যদি সেটা না করেন, তাহলে বুঝবো এতে তাদের মদত আছে।”

আরও পড়ুন- কুড়মি আন্দোলনের নামে গু.ন্ডামি, জখম বীরবাহা! ক্ষু.ব্ধ মমতা-অভিষেক

পাশাপাশি কুড়মিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি এই ঘটনায় আদিবাদী কুড়মিরা নেই। বিজেপির মুখোশধারীরা রয়েছে। বিজেপির লোকেরা মুখ লুকিয়ে আপনাদের আন্দোলনকে হিংসায় পরিণত করেছে কিনা জানান।” তবে নিজের দলকে সতর্ক করে অভিষেক জানান, “তৃণমূলের কেউ যেন প্ররোচনায় পা না দেয়। যে বিজেপি নেতাদের মদত আছে তাদের চিহ্নিত করেছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি রাস্তায় নেমে হাঁটছিলাম। তখন কেউ তো এলো না। বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতে আমি কুড়মি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু ঝাড়গ্রামে কাদের মদতে হল? অধিকার নিয়ে আন্দোলন করুন, কিন্তু এই ঘটনা তো সিপিএমের হার্মাদরা করে, বিজেপির জল্লাদরা করে।”

অভিষেক আরও বলেন, ঝড়, জল, বৃষ্টির প্রতিকূলতা কাটিয়ে মানুষের জোয়ার। এক জেলা অন্য জেলাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। রাত ১০টার সময় মিটিং হচ্ছে গোপীবল্লভপুরে, সেটা কেউ ভাবতে পেরেছিল। একটা সময়ে এখানে ছিল মাওবাদীদের ডাকা বনধ আর মৃত্যু মিছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি পুরো বদলে গিয়েছে।” একইসঙ্গে জানান, “আজ কর্মসূচির ৩০ দিন। অনেকেই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছে। ৬দিন পারবে না। মাঠে ঘাটে রাত কাটিয়েছি। আমাদের দলের কর্মীরাই দলের আসল সম্পদ। বুথ সভাপতিদের ডেকেছি। আগামীদিনে বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে কাজ করতে পারি তার জন্যই এই নবজোয়ার কর্মসূচি।”

 

 

Previous articleআইপিএল ফাইনালে পৌঁছে গেল গুজরাত, মুম্বইকে হারাল ৬২ রানে
Next articleঝাড়গ্রামে তৃণমূলের নবজোয়ারে জনসুনামিতে ভাসলেন অভিষেক