নতুন সংসদে ভবনের দেওয়ালে দক্ষিণেশ্বরের কালি মন্দির থেকে কোণার্কের চাকা!

আজ, রবিবার বিতর্কের মাঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধন করবেন নতুন সংসদ ভবনের। যে ভবন সেজে উঠেছে কৃতি বাঙালির কাজে । এক একটি তিন হাজার কিলো ওজনের পিতলের কোণার্কের চাকা, গান্ধীজির লবণ সত্যাগ্রহ, চাণক্যর ম্যুরাল থেকে শুরু করে ১৮৫১ সালে ফরাসি পদার্থবিদ লিওন ফোকোর আবিষ্কার ‘ফোকো পেন্ডুলামে’র অভিনব মডেল। কিংবা দেওয়ালে জ্বলজ্বল করা দক্ষিণেশ্বর কালিবাড়ি। যার পুরোটাই কৃতি বাঙালির মতিষ্কপ্রসূত।

আরও পড়ুন:নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনের আগে দেশবাসীকে টুইটবার্তা মোদির

নতুন সংসদ ভবনের তিন মূল দরজার (জ্ঞান, শক্তি, কর্ম) মধ্যে এখন স্রেফ উত্তর দিকের (শক্তি)টির উদ্বোধন হবে। যা মুখ করে রয়েছে নর্থব্লক, সাউথ ব্লকের দিকে। বাকি দু’টির একটি রেলভবনের দিকে (কর্মদ্বার), অন্যটি বর্তমান সংসদের দিকে (জ্ঞানদ্বার)। জানা গেছে, রবিবার উদ্বোধন পর্বের পরে ফের শুরু হবে কাজ। যা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্ন, তৈরিই যখন হয়নি, তখন কেন তড়িঘড়ি উদ্বোধন? হিন্দুত্বের পক্ষে সওয়াল করা বিনায়ক দামোদর সাভারকরের জন্মদিনটিকেই স্মরণীয় করতেই কি? নাকি এর পেছনেও রয়েছে ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচার?
তবে , নতুন সংসদ ভবন নিয়ে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন সংসদ ভবন তৈরিতে বাঙালির কীর্তি কিন্তু নজর কাড়বেই। তিন দরজার ভিতরে ঢুকেই  গৌরমোহন পাহাড়ির নেতৃত্বে তৈরি দু’পাশের দেওয়ালে লাগানো পিতলের ছ’টি ম্যুরাল। গত প্রায় এক বছর ধরে যা তৈরি হয়েছে গাজিয়াবাদের লোনির কর্মশালায়। নতুন ভবনে ‘কনস্টিটিউশনাল ফয়ারে’র দেওয়ালে ফ্রেসকোয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাম-লক্ষণ-সীতার পুষ্প বিমান, মহেঞ্জোদারো, গুরুকুল, নেতাজি-আজাদ হিন্দ, গান্ধীজির হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্বের মতো ১৫টি ছবি।
গৌরমোহনের‌ই পরামর্শে যা করেছেন কলকাতা আর্ট কলেজের বাঙালি শিল্পীরা। যা সংবিধানের পাতায় এঁকেছিলেন নন্দলাল বসু, হুবহু তাই ফুটেছে ফ্রেসকোয়। কলা, শিল্প, স্থাপত্য নামে তিন ‘ইন্ডিয়া গ্যালারি’র দুই দেওয়ালে ভারতীয় সংস্কৃতির নানা উদাহরণও হবে দৃশ্যমান। আর নতুন সংসদ ভবনের মাথায় যেখানে বসেছে সিংহের এমব্লেম, তার ঠিক নীচেই টাঙানো হয়েছে ফোকো পেন্ডুলাম।
অভিনব যে ঘুরন্ত পেন্ডুলামের দুলুনিই প্রমাণ করে পৃথিবী ঘুরছে নিজের চারদিকে। কলকাতার ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সায়েন্স মিউজিয়ামের ডিজি অরিজিৎ দত্ত চৌধুরী এবং সেন্ট্রাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর নটরাজ দাশগুপ্ত তৈরি করেছেন এই পেন্ডুলাম। ২৫ সেন্টিমিটার গোলাকার ৩০ কেজি ওজনের পিতলের ওই পেন্ডুলামের উপর সোনার পরত। যা প্রায় মাটি ছুঁয়ে ঘুরবে। নীচে শ্বেত পাথরের তৈরি ১৫ ফুট ব্যাসের পেন্ডুলাম ডায়াল চক্রাকারে ঘুরতে সময় নেবে ৫০ ঘন্টা। বাঙালি পদার্থবিদদের তৈরি এই অভিনব ফোকো পেন্ডুলাম থাকছে নতুন সংসদ ভবনের একেবারে কেন্দ্রে।

 

Previous articleমুসকিল আসান: অভিষেকের আশ্বাসের ৩দিনের মধ্যেই সাহায্যের চেক বিশেষভাবে সক্ষমের হাতে
Next article‘বেঁচে থাকুক স্বপ্ন’, উৎপল সিনহার কলম