Friday, August 22, 2025

হাই-মাদ্রাসায় দুর্দান্ত ফল নিশা মাঝির! মুদিখানার কর্মীর মেয়ের সাফল্যে খুশি আগড়ডাঙা

Date:

Share post:

দারিদ্রতা (Poverty) সাময়িকভাবে পড়াশোনায় বিপত্তি তৈরি করতে পারে, কিন্তু লক্ষ্য স্থির থাকলে মানুষ কখনই পথ হারায় না। দরিদ্র পরিবারের মেয়েটা ছোট থেকেই ভালো রেজাল্ট করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাবা মুদির দোকানের কর্মী (grocery store worker), দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটাই একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সেখানে চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট করে নজির গড়লেন নিশা মাঝি (Nisha Majhi)।

হিন্দু পরিবারের মেয়েটা হাইমাদ্রাসায় (High Madrasah)পড়াশোনা করছেন জেনে চোখ কপালে উঠেছিল পড়শিদের। অভাবের সংসারে মেয়ের পড়ার খরচ সাশ্রয় আর ভাল ফল। জোড়া লক্ষ্যভেদে মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়তে পাঠিয়েছিলেন মুদির দোকানের কর্মী দিলীপ মাঝি। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কেতুগ্রামের আগড়ডাঙা গ্রামের হতদরিদ্র বাসিন্দা দিলীপের। হাই-মাদ্রাসার ফল বেরতে দেখা যায়, আগড়ডাঙা হাই-মাদ্রাসার ছাত্রী অভাবী মেধাবী নিশা মাঝি দুর্দান্ত ফল করেছেন। ৮০০-র মধ্যে ৬৪৫ পেয়েছেন নিশা। বিষয়ভিত্তিক নম্বর

বাংলা—৯২
ইংরেজি—৮৬
অঙ্ক— ৭২
ভৌত বিজ্ঞান ও পরিবেশ—৬৮
জীবন বিজ্ঞান— ৯০
ইতিহাস— ৮০
ভূগোল— ৭৬
ইসলাম পরিচয়— ৮১।

এত ভাল রেজাল্টের পর আগড়ডাঙা মাদ্রাসাতেই উচ্চমাধ্যমিকে পড়বেন নিশা। ভবিষ্যতে নার্স হতে চান নিশা। প্রধানশিক্ষিক আবদুল ওয়াহাব, করণিক শিবরাম সাহারা জানান, নিশা বরাবর পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই তৎপর। ক্লাসের পরীক্ষাতে বরাবর ভাল ফল করেছেন। ওর একটা শারীরিক সমস্যা রয়েছে। না হলে আরও বেশি নম্বর হত। কিন্তু নিশাকে হাইমাদ্রাসায় ভর্তি করালেন কেন? নিশার বাবা গ্রামেরই একটি মুদিখানার কর্মী দিলীপ মাঝি, মা জবা মাঝি জানালেন, “ওখানে পড়াশোনা ভাল হয়। শিক্ষকরা খুবই যত্ন করে একেবারে সন্তানস্নেহে পড়ান শুধু নয়, নিশা গরিব জেনে বিনা পয়সায় অনেক শিক্ষক দেখিয়ে দিয়েছেন। না হলে ওর পড়ানোর খরচ টানতে পারতাম না। তাই শুধু আমরাই নয়, এলাকার বহু হিন্দু পরিবারের ছেলেমেয়ে এই মাদ্রাসায় পড়েন।” আগড়ডাঙা গ্রামের গায়েই রয়েছে খাঁড়েরা হাইস্কুল। তবু এলাকার বহু পড়ুয়ার গন্তব্য আগড়ডাঙা হাই-মাদ্রাসা। পয়সা দিয়ে মেয়েকে পড়ানোর সাধ্যি নেই নিশার পরিবারের। সেই অভাব বুঝতে দেননি মাদ্রাসার শিক্ষকরা ও এলাকার ২ গৃহশিক্ষক। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয়দের সাহায্যই নয়, নিশার পড়াশোনা চালানোর ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে রাজ্য সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। সবুজসাথীর সাইকেল পাওয়াটাও সুবিধে করে দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন নিশা।

 

spot_img

Related articles

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...