Friday, November 7, 2025

হাই-মাদ্রাসায় দুর্দান্ত ফল নিশা মাঝির! মুদিখানার কর্মীর মেয়ের সাফল্যে খুশি আগড়ডাঙা

Date:

Share post:

দারিদ্রতা (Poverty) সাময়িকভাবে পড়াশোনায় বিপত্তি তৈরি করতে পারে, কিন্তু লক্ষ্য স্থির থাকলে মানুষ কখনই পথ হারায় না। দরিদ্র পরিবারের মেয়েটা ছোট থেকেই ভালো রেজাল্ট করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাবা মুদির দোকানের কর্মী (grocery store worker), দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটাই একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সেখানে চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট করে নজির গড়লেন নিশা মাঝি (Nisha Majhi)।

হিন্দু পরিবারের মেয়েটা হাইমাদ্রাসায় (High Madrasah)পড়াশোনা করছেন জেনে চোখ কপালে উঠেছিল পড়শিদের। অভাবের সংসারে মেয়ের পড়ার খরচ সাশ্রয় আর ভাল ফল। জোড়া লক্ষ্যভেদে মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়তে পাঠিয়েছিলেন মুদির দোকানের কর্মী দিলীপ মাঝি। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কেতুগ্রামের আগড়ডাঙা গ্রামের হতদরিদ্র বাসিন্দা দিলীপের। হাই-মাদ্রাসার ফল বেরতে দেখা যায়, আগড়ডাঙা হাই-মাদ্রাসার ছাত্রী অভাবী মেধাবী নিশা মাঝি দুর্দান্ত ফল করেছেন। ৮০০-র মধ্যে ৬৪৫ পেয়েছেন নিশা। বিষয়ভিত্তিক নম্বর

বাংলা—৯২
ইংরেজি—৮৬
অঙ্ক— ৭২
ভৌত বিজ্ঞান ও পরিবেশ—৬৮
জীবন বিজ্ঞান— ৯০
ইতিহাস— ৮০
ভূগোল— ৭৬
ইসলাম পরিচয়— ৮১।

এত ভাল রেজাল্টের পর আগড়ডাঙা মাদ্রাসাতেই উচ্চমাধ্যমিকে পড়বেন নিশা। ভবিষ্যতে নার্স হতে চান নিশা। প্রধানশিক্ষিক আবদুল ওয়াহাব, করণিক শিবরাম সাহারা জানান, নিশা বরাবর পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই তৎপর। ক্লাসের পরীক্ষাতে বরাবর ভাল ফল করেছেন। ওর একটা শারীরিক সমস্যা রয়েছে। না হলে আরও বেশি নম্বর হত। কিন্তু নিশাকে হাইমাদ্রাসায় ভর্তি করালেন কেন? নিশার বাবা গ্রামেরই একটি মুদিখানার কর্মী দিলীপ মাঝি, মা জবা মাঝি জানালেন, “ওখানে পড়াশোনা ভাল হয়। শিক্ষকরা খুবই যত্ন করে একেবারে সন্তানস্নেহে পড়ান শুধু নয়, নিশা গরিব জেনে বিনা পয়সায় অনেক শিক্ষক দেখিয়ে দিয়েছেন। না হলে ওর পড়ানোর খরচ টানতে পারতাম না। তাই শুধু আমরাই নয়, এলাকার বহু হিন্দু পরিবারের ছেলেমেয়ে এই মাদ্রাসায় পড়েন।” আগড়ডাঙা গ্রামের গায়েই রয়েছে খাঁড়েরা হাইস্কুল। তবু এলাকার বহু পড়ুয়ার গন্তব্য আগড়ডাঙা হাই-মাদ্রাসা। পয়সা দিয়ে মেয়েকে পড়ানোর সাধ্যি নেই নিশার পরিবারের। সেই অভাব বুঝতে দেননি মাদ্রাসার শিক্ষকরা ও এলাকার ২ গৃহশিক্ষক। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয়দের সাহায্যই নয়, নিশার পড়াশোনা চালানোর ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে রাজ্য সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। সবুজসাথীর সাইকেল পাওয়াটাও সুবিধে করে দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন নিশা।

 

spot_img

Related articles

ব্রিটিশ-তোষণে লেখা ‘জন গণ মন’! বিজেপি সাংসদের অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

ব্রিটিশদের তোষণ করতেই নাকি লেখা হয়েছিল ‘জন গণ মন’। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই ন্যক্কারজনক মন্তব্য করে ফের...

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...