অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় জনপ্লাবনে ভাসল নন্দীগ্রাম

মণীশ কীর্তনিয়া, নন্দীগ্রাম

অধিকারী গড় বলে কিছু নেই। মেদিনীপুর এখন মা-মাটি-মানুষের। বুধবার রাতেই চণ্ডীপুরের অধিবেশনে এই মন্তব্য করেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর রাত পোহাতেই বৃহস্পতিবারের মহামিছিল প্রমাণ করে দিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথা একশো শতাংশ ঠিক। ৪৩ ডিগ্রির তীব্র গরমে চণ্ডীপুরের (Chandipur) ক্যাম্প থেকে অভিষেক যখন হাঁটা শুরু করেন তাঁর দুঘণ্টা আগে থেকেই জমায়েত হয়ে যায়।

এরপরে বেলা যত গড়ায়, পদযাত্রা যত এগোয়, তত বোঝা যায় জনপ্লাবন কাকে বলে। এই ভিড় এর আগে দেখেনি পূর্ব মেদিনীপুর (East Mednapur)। স্থানীয় মহিলারা কেউ ফুল হাতে, কেউ মালা হাতে বেরিয়ে আসেন। অভিষেককে নিজের হাতে দিতে চান। বাড়িতে রান্না করেও এসেছিলেন কেউ কেউ। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে খাওয়াতে চান তাঁরা। এই আবেগ এর আগে দেখেনি চণ্ডীপুর-নন্দীগ্রাম।

চণ্ডীপুর বাসস্টান্ড থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে হাঁসছড়া মোড়ে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থামেন। সেখানে পটচিত্র শিল্পীরা তাঁকে কিছু পটচিত্র উপহার দেন। এরপর আরও ১২ কিমি হেঁটে টেঙ্গুয়া মোড় হয়ে অভিষেক পৌঁছন নন্দীগ্রাম।

চণ্ডীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে ঢুকে একটু এগোতেই রেয়া পাড়া। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেখানে গিয়েই একটি বাড়িতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অভিষেক সেখানে পৌঁছতেই সেই স্মৃতি তখন ভিড় করে আসছে স্থানীয়দের মনে। স্লোগানের সুর আরও চড়া হয়।

কনভয় এগিয়ে চলে। যতদূর চোখ যায়, শুধু মানুষের মাথা। কাতারে কাতারে ভিড়। টেঙ্গুয়া মোড় ও পরে আরও দুয়েকটি জায়গায় দাঁড়ান অভিষেক। বলা ভালো দাঁড়াতে হল তাঁকে। কারণ, জনতার আবদার। তাঁরা একটিবার অভিষেকের সঙ্গে কথা বলতে চান। প্রচণ্ড রোদের তাপ মাথায় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুরু এই সময়ের জন্যই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা।

বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁকে সামনে পেয়ে সমাস্যার কথা জানান স্থানীয়রা। এরপর একটি চায়ের দোকানে বসেন। চা পানের সঙ্গে চলে জনসংযোগ। মোট ২০ কিলোমিটার পদযাত্রায় মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

নবজোয়ার কর্মসূচি প্রতিদিনই কোনো না কোন রেকর্ড ভাঙছে। বৃহস্পতিবার আবারও রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল এই কর্মসূচি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ব মেদিনীপুরের যে পদযাত্রা করেন আর তাঁকে ঘিরে যে জনজোয়ার হয়েছে তা সেখানে আগে কবে হয়েছে মনে করতে পারছেন না কেই। গোটা পথে আনজনতাকে অভিবাদন জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। রাস্তা তো বটেই প্রতিটি বাড়ির বারান্দা-ছাদে ভর্তি মানুষ দীর্ঘক্ষণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন একবার অভিষেককে দেখার জন্য। জনপ্লাবনে ভেসে নন্দীগ্রামে পৌঁছন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ভেঙে খান খান হয়ে গেল অধিকারী পরিবারের মিথ।

আরও পড়ুন- এবার বাড়ি বসেই মিলবে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ব্লু বুক

 

Previous articleএবার বাড়ি বসেই মিলবে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ব্লু বুক
Next articleপ্রেসিডেন্সিতে স্নাতকস্তরে ফের ভর্তি প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর