“বিরোধীরা টিভিতে আছে, তৃণমূল মানুষের হৃদয়ে”, হাওড়া স্টেশন চত্বরে বললেন অরূপ রায়

মন্ত্রী অরূপ রায় তাঁর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন সম্মিলিত বিরোধীদের কুৎসা-অপপ্রচারের জবাব দেন, তেমনই বিজেপির কাছে বিকিয়ে যাওয়া একাংশের সংবাদমাধ্যমকে তুলোধনা করেন

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে গত সপ্তাহে শিয়ালদহের পর আজ, সোমবার হাওড়ায় সভা করল তৃণমূল কংগ্রেস। হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি স্টান্ডের পাশে মঞ্চ করে তৃণমূলের ভোটপ্রচার। লক্ষ্য প্রতিদিন যে নিত্যযাত্রীরা জেলা থেকে শহরে কর্মসূত্রে যাতায়াত করেন, তাঁদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের বার্তা ফের একবার পৌঁছে দেওয়া। গোটা কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্বে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়। এদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সকাল ১০টায় হাওড়া স্টেশনের বাইরে শুরু হয় প্রচার।

হাওড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরিজিৎ বটব্যালের উদ্যোগে সভার আয়োজন। মূলত হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, মেদিনীপুর প্রভৃতি আশপাশের জেলার পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আসা নিত্যযাত্রী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার চালাতেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। যেখানে বক্তব্য রাখেন হাওড়া জেলা নেতৃত্ব। মন্ত্রী অরূপ রায় ছাড়াও উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা সদর তৃণমূল সভাপতি কল্যান ঘোষ। যুবনেতা কৈলাস মিশ্র, বিধায়ক গৌতম চৌধুরী সহ আরও অনেকে।

এদিন মন্ত্রী অরূপ রায় তাঁর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন সম্মিলিত বিরোধীদের কুৎসা-অপপ্রচারের জবাব দেন, তেমনই বিজেপির কাছে বিকিয়ে যাওয়া একাংশের সংবাদমাধ্যমকে তুলোধনা করেন। মন্ত্রী দাবি, বিরোধীদের কুৎসা নয়, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখেই ভোট দেবেন।

*হাওড়া সভায় যা বললেন মন্ত্রী অরূপ রায়*

“পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক রকম লাফালাফি, নাচানাচি আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভোট আসতেই বিরোধীরা নাটক শুরু করেছে। টিভিতে আর খবর দেখি না। সিনেমা দেখি। কারণ, খবরে পালা করে করে শুধু আমাদের গালাগালি দেওয়া হয়। যারা অন্যায় করেছে, তারা শাস্তি পাক, সেটা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু মিথ্যা-অপপ্রচার-কুৎসা-ষড়যন্ত্র করে আমাদের নেত্রী, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, নেতা-মন্ত্রীদের গালাগাল করা হচ্ছে। এসব করে ভোটে জেতা যায় না অতীতেও তা আমরা দেখেছি। বিগত দিনের নির্বাচনগুলি প্রমাণ করেছে, বিরোধীরা সম্মিলিত ভাবে যত কুৎসা করেছে, আমাদের ভোট, আসন সংখ্যা তত বেড়েছে।

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে অনেক ঘটনা ঘটেছিল। দল ছেড়ে তাবড় তাবড় নেতারা চলে গিয়েছিল। চারিদিকে গেল গেল রব। কিন্তু আপদরা বিদায় হয়েছিল, ফলাফল আরও ভাল হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে মানুষ ভোট দেয়, কুৎসা-অপপ্রচার দেখে নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষের হৃদয়ে বিরাজ করেন। বিরোধীরা টিভিতে আছে, তৃণমূল মানুষের হৃদয়ে আছে। তাই শুধু আগামীর নির্বাচন নয়, আরও অন্তত ২৫ বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখে মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, তৃণমূল বাংলায় ক্ষমতায় থাকবে। বিরোধীরা কুৎসা করে, আমরা লক্ষীর ভাণ্ডার করি, কন্যাশ্রী করি, যুবশ্রী করি, সবুজ সাথী করি…!

আমরা সিপিএমের দীর্ঘ ৩৪ বছরের ভয়ঙ্কর অত্যাচার, সন্ত্রাস দেখেছি, এই হাওড়াজুড়ে লাল সন্ত্রাস এখনও মানুষ ভুলে যাননি। বাংলার মানুষ আর কখনও সিপিএমকে ক্ষমতায় আনবে না। এখন বাংলায় নতুন একটি দলের উৎপাত বেড়েছে। যারা বাংলার ইতিহাস-ভূগোল-কৃষ্টি-সংস্কৃতি জানে না। যারা রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন জানে না, তারা বাংলা দখলের চেষ্টা করছে, তাদের স্বপ্ন কোনওদিন পূরণ হবে না। মানুষের রায়ে বাংলার মাটিতে কোনওদিন ক্ষমতায় আসবে না বিজেপি। সুতরাং, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখে আমরা এগিয়ে যাবে, আমাদের জয় হবে। পঞ্চায়েতেও বিপুলভাবে আমাদের প্রার্থীরা জিতবে।

ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। তাই যত ইচ্ছা বাহিনী আসুন, যত ইচ্ছা সেনা আসুক অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত। আবার বাংলার মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে গ্রামবাংলার মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করবে তৃণমূল।”

আরও পড়ুন:ট্রায়াল রানেই কাঁচ ভাঙল পাটনা-রাঁচি রুটের বন্দে ভারতের!


 

 

Previous article‘আন্দোলন চলবে, তবে আর রাস্তায় নয়’, সিদ্ধান্ত আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের
Next articleলেকটাউনে দাঁড়িয়ে থাকা চারচাকা গাড়িতে ধাক্কা বাসের! মর্মা.ন্তিকভাবে মৃত ৩