কাটেনি প্র.স্রাবকাণ্ডের রেশ! মধ্যপ্রদেশে ফের দ.লিত নি.গ্রহের ব.র্বরোচিত পুনরাবৃত্তি

চলতি বছরের শেষেই মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে এমন ঘটনায় মুখ লোকানোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না গেরুয়া শিবির।

আদিবাসী শ্রমিকের মুখে প্রস্রাবের ঘটনা নিয়ে উত্তাল মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh)। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান (Shivraj Singh Chouhan) সেই আদিবাসী শ্রমিক দশমত রাওয়তকে বাসভবনে ঢেকে পা ধুইয়ে ক্ষমা চান। কিন্তু তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মধ্যপ্রদেশেরই (Madhya Pradesh) অন্য প্রান্তে দুই দলিত যুবককে (Dalit Boy) মারধর করে নোংরা খাওয়ানোর অভিযোগ যেমন সামনে এল পাশাপাশি দলিত পরিবারের সঙ্গে বৈষম্যের অভিযোগ উঠল মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, এক দলিত পরিবারকে মন্দিরের ভোজের আসরে বসতেই দেওয়া হয়নি। উল্টে ঠাকুরের প্রসাদও দূর থেকে তাঁদের হাতে ছুড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই ফের মুখ পুড়ল শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক। কীভাবে লাগাতার দলিতদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে বিজেপি পরিচালিত মধ্যপ্রদেশ সরকার তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চলতি বছরের শেষেই মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election)। আর তার আগে এমন ঘটনায় মুখ লোকানোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না গেরুয়া শিবির।

মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলার ঘটনা। গ্রামের মহিলাদের হেনস্থার অভিযোগে দলিত সম্প্রদায়ের দুই যুবককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, তাঁদের মুখে কালি মাখিয়ে, জুতোর মালা পরিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। এছাড়া দুই যুবককে নোংরা খেতেও বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি গত ৩০ জুন ঘটলেও সম্প্রতি সেই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। পরে পুলিশের হাতে সেই ভিডিয়ো ফুটেজ পৌঁছলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয় প্রশাসন। পরে পুলিশ একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যে দুই মহিলা সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের অপর একটি জায়গাতেও দলিত পরিবারের সঙ্গে বৈষম্যের অভিযোগ মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, গ্রাম থেকে আসা এক দলিত পরিবারকে মন্দিরের ভোজের আসরে বসতেই দেওয়া হয়নি। এমনকি ঠাকুরের প্রসাদও দূর থেকে তাঁদের হাতে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার ঘটনা। গত মঙ্গলবার সেখানে সেমরা গ্রামের রাম জানকি মন্দিরে ভোজসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ধর্মীয় উৎসবে দূরদূরান্ত থেকে সেখানে আসেন সকলে। কিন্তু ওই গ্রামেরই দলিত পরিবারের কয়েক জন ভোজের দিন প্রসাদ পাওয়ার আশায় মন্দিরে যান। কিন্তু অভিযোগ, ভোজের কাছেও তাঁদের ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। উল্টে কয়েক জন তথাকথিত ‘উচ্চবর্ণের’ মানুষ তাঁদের দিকে দূর থেকে প্রসাদ ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ। এই বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে মন্দিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন।

জানা গিয়েছে, গত ৪ জুন এত আদিবাসী শ্রমিকের মুখে এবং গায়ে প্রস্রাবের অভিযোগ উঠেছিল প্রবেশ শুক্ল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর শোরগোল পড়ে যায় গোটা মধ্যপ্রদেশে। বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শেষমেশ প্রশাসন তৎপর হয়। অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ বৃহস্পতিবার ওই আদিবাসী শ্রমিককে নিজের বাসভবনে ডেকে নিয়ে এসে পা ধুইয়ে দেন নিজের হাতে, খাবারও খাইয়ে দেন নিজের হাতেই। সব শেষে তিনি ক্ষমাও চান।

 

 

Previous articleকরমন্ডল এক্সপ্রেস দু.র্ঘটনায় রেলের তিন জন কর্মচারী গ্রেফতার
Next articleশখ পূরণে বিমানে চড়ে অন্য রাজ্যে চু.রি! গ্রেফতার অভিযুক্ত