একুশের সমাবেশ ঘিয়ে সরগরম শহর, অস্থায়ী ক্যাম্পে উপচে পড়া ভিড়

একুশে জুলাইয়ের সভার জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী সমর্থকরা কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন।

পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) তৃণমূলের (TMC) বিপুল জয়ের পর এখন পাখির চোখ চব্বিশের লোকসভা ভোট (Loksabha Election)। যেখানে দেশজুড়ে বিরোধী ঐক্য জমাট বেঁধেছে। আর তার আগে এটাই শেষ একুশে জুলাই। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) লোকসভা নিয়ে নতুন কী কর্মসূচি ঘোষণা করেন, নতুন কী বার্তা দেন, সেই দিকেই তাকিয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। রাজনৈতিক মহলের নজরও সেদিকে।

এদিকে একুশে জুলাইয়ের সভার জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী সমর্থকরা কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। তাঁদের জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্ত, যেমন আলিপুর উত্তীর্ণ, কসবা গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক সহ একাধিক স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প করে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাখা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্পও। প্রতিটি শিবির পরিদর্শন করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ নেতৃত্ব।

এক নজরে ২১ জুলাইয়ের জন্য তৈরি অস্থায়ী ক্যাম্পগুলি–

কসবা গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম

গত বেশ কয়েক বছর ধরে কসবা গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে উত্তর ও দূরের জেলাগুলি থেকে আসা কর্মী-সমর্থকদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়। দায়িত্বে থাকেন বোরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। এবারও স্টেডিয়ামের গ্যালারির নীচের অংশকে আলাদা করে চারটি ভাগ করা হয়েছে। ২টি ভাগ সংরক্ষিত মালদহ জেলার জন্য। বাকি ২টি মুর্শিদাবাদ জেলার জন্য। সব মিলিয়ে এই ২ জেলার মোট ২৫ হাজার দলীয় কর্মী সমর্থকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। রয়েছে মাস কিচেন। এককালীন ৬০০ জনের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ২টি মেডিক্যাল ক্যাম্প। তাতে ২ জন করে চিকিৎসক ও ৪ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী। আছে ৪টি মোবাইল চার্জ হাব। যার এক-একটিতে একসঙ্গে ৬০টি করে মোবাইল চার্জ দেওয়া যাবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পরিবারের সঙ্গে আসা বাচ্চাদের জন্য গরম দুধের একটি কাউন্টার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আগামিকাল গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম থেকে মেয়ো রোড ক্রসিং পর্যন্ত কর্মী সমর্থকদের পৌঁছে দিতে একাধিক বাসেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর চারটে থেকে সকল ৯টা পর্যন্ত বাসে সমর্থকদের সভাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়া হবে।

সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক

সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার এবং দার্জিলিং-৬ জেলার ৩০ হাজার কর্মীর থাকা-খাওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। প্রতি জেলার জন্য একেকটি পৃথক হ্যাঙ্গার। ক্যাম্পে মেগা কিচেন প্লাস ডাইনিং হল। একেকবারে সেখানে ২০০০ মানুষকে খাবার সরবরাহের জন্য ২০টি করে কাউন্টার। ডাইনিং ছাউনিতে ৪০০০ মানুষের বসে খাওয়ার জায়গা। মেডিক্যাল ক্যাম্প ২ টো। দিবারাত্র ডেডিকেটেড অ্যামবুল্যান্স তৈরি আছে ২০টা। অগ্নি নির্বাপক মোটরবাইক ১২টি। এসি সেমিনার হল ১ টা। এসি মিটিং রুম ১ টা। এককালীন ১২০০ জনের স্নানের ব্যবস্থা। ৫০০ অস্থায়ী বায়ো টয়লেট। দৈনিক ২০০০ শিশুর জন্য যারা কর্মী পরিবারের সঙ্গে এখানেই আছে, তাদের মাথাপিছু প্রতি বেলায় হাফ লিটার করে দুধের পাউচ, দৈনিক ২০০০ লিটার দুধের ব্যবস্থা।

ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র

ওদিকে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে যেমন ডিম-ভাতের পাশাপাশি, ৩ জেলার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য গরম গরম লুচি-আলুরদমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে ৪ পিস করে লুচি সঙ্গে আলুরদম। যা বাকি শিবিরগুলি থেকে আলাদা করেছে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রকে। লুচির সঙ্গে দুপুরের মেন্যুতে রয়েছে ভাত, ডাল, শাকের তরকারি, মিক্স ভেজ সবজি এবং ডিমের কারি। কিচেনের ভিতরে মূল পাচক হিসেবে কাজ করছেন ৮ জন। সহকারী হিসেবে আছেন আরও প্রায় জনা ১৫। এখানেও মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে আগত মোট ১২০০০ কর্মী সমর্থকের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন হাজার চারেক। অন্যান্য শিবিরের মত এখানেও রয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প।

শিয়ালদা-হাওড়া স্টেশন চত্বর

শিয়ালদা-হাওড়া স্টেশনেও কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ট্রেন থেকে নামা অগণিত দলীয় কর্মী সমর্থকের জন্য কর্পোরেট ধাঁচে আয়োজন করা হয়েছে কলকাতার দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রবেশ পথ শিয়ালদহ স্টেশনে। উত্তরবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের ফলাফল অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। তাই এবার উত্তরবঙ্গ থেকে বিগত ২-৩ বছরের তুলনায় অনেক বেশি কর্মী সমর্থক একুশের সভায় যোগ দিতে আসবেন বলে অনুমান তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের। তাই স্টেশনের মেইন এগজিট গেটের দু-প্রান্তে তৈরি হয়েছে বিশাল ২ সামিয়ানা। একটিতে আছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির জনপ্রতিনিধিরা আছেন। এটি কন্ট্রোল রুম। আরেকটি শিবিরে আছেন দল নিযুক্ত ভল্যান্টিয়াররা। যারা কর্মী সমর্থকদের বাসের নম্বর দিচ্ছেন।

 

 

Previous articleভারতের হয়ে অভিষেক বাংলার পেসার মুকেশ কুমারের
Next articleফের শহরে শু.টআউট! দুষ্কৃতীদের গু.লিতে ঝাঁ.ঝরা যুবকের দেহ