শহিদ দিবসে ‘জাগো বাংলায়’ বার্তা অভিষেকের, কী লিখলেন তিনি!

৬০ দিন ব্যাপী তৃণমূলের নবজোয়ার যাত্রা সাফল্যের সঙ্গে শেষ করার পর পঞ্চায়েতে বিপুল আসন পেয়ে বিরোধীদের চূর্ণ করেছে তৃণমূল (TMC)। এই কর্মসূচির মূল উদ্যোগতা ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পঞ্চায়েতে (Panchayat Election) বিপুল সাফল্যের পর এবারের ২১ জুলাইয়ের যাত্রা নিশ্চিতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এমন বিশেষ দিনে দলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলায়’ (Jago Bangla) প্রতিবেদন লিখলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখে নেওয়া যাক দলীয় মুখপত্রে লেখা প্রতিবেদনে কী লিখলেন তিনি…

“বিপুল জনসমর্থন আমাদের আরও দায়িত্ববান করেছে” এই শিরোনামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, একুশে জুলাই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটি বাংলার মানুষের হৃদয়ে দগদগে ঘা-এর মতো আজও স্মরণীয়। উনিশশো তিরানব্বই সালে তৎকালীন যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর বাম অপশাসকের রাষ্ট্রীয় জান্তব সন্ত্রাস, গণহত্যা, নির্মম অত্যাচার, জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হত্যার চেষ্টা, তেরোজন নিরপরাধ রাজনৈতিক কর্মীকে সংগঠিতভাবে হত্যা, শতাধিক প্রতিবাদীকে জখম করা এক কলঙ্কিত দিন হল— একুশে জুলাই। এই মর্মন্তুদ ঘটনার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকেরা এবং বাংলার সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সচেতন নাগরিকেরা প্রতিবছর এই দিনটিকে পালন করেন সকল শহিদের প্রতি বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে। এই বছরের একুশে জুলাইয়ের মাহাত্ম্য আমাদের কাছে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

প্রতি বছর আজকের দিনটি, শহিদ-তর্পণ এবং যাঁরা বাংলার মানুষের ন্যায়বিচারের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন— তাঁদের পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালনের দায়বদ্ধতাকে অব্যাহত রাখতে উজ্জীবিত করে আমাদের। তদুপরি, কীভাবে বাম অপশাসনের জগদ্দল পাথরকে সরিয়ে, সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলায় নতুন ভোরের সূচনা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস তা মনে রাখা, মনে করানো এবং আগামী প্রজন্মকে জানানো— এই আশু কর্তব্যে শান দেওয়া।

সর্বোপরি, রাজনীতির অভিমুখ নির্ধারণে নব শপথ এবং দেশনেত্রীর বার্তা। একুশে জুলাই প্রতিবার এক-একটি প্রেক্ষাপটে দেশ তথা রাজ্য রাজনীতির দিকনির্দেশিকা হয়ে উঠেছে। এবারও আমাদের শপথ হবে একদিকে বাংলার মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন, অপার আশীবাদ এবং অফুরান ভালবাসাকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের জন্য পুনরায় অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া। উল্টোদিকে, বঙ্গ-বিরোধী, উন্নয়ন- বিরোধী, মানব-বিরোধী, অশুভ শক্তির চক্রান্তের মোকাবিলা করা। আর সেই সঙ্গে দিল্লির মসনদ থেকে জনবিরোধী, দলিত- বিরোধী, নারী-নিপীড়নকারী, কৃষক-বিরোধী বিভেদকামী শক্তির অবসান ঘটিয়ে জনমুখী শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বাংলার। ২৬টি উদারনৈতিক দল একজোট হয়ে ভারতের গণতন্ত্র থেকে সংবিধান রক্ষায় একত্রিত হয়ে নেমেছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই— ভারতের পুরুষ- নারী-মানুষ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সংস্কৃতি-কৃষ্টি-ঐতিহ্য রক্ষা। বিজেপির অর্থশক্তি-পেশিশক্তির বিরুদ্ধে ভারতের সাধারণ মানুষ এবার একজোট হয়েছেন। তাই বিজেপির স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে সমূলে উৎখাত করতে প্রস্তুত INDIA। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের

গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জন এবং গণতান্ত্রিক

অধিকার রক্ষার দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সুদক্ষ নেতৃত্বে বহু লড়াই, অসীম আত্মত্যাগ,

বিভিন্ন চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে দল আজও এগিয়ে চলেছে নিজের দুর্দমনীয় গতিতে। “তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা যেভাবে গ্রাম থেকে মফস্বল, প্রবীণ থেকে নবীন — সকলের সঙ্গে হৃদয়ের আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলাম, আগামিদিন এইভাবে আরও নিবিড় জনসংযোগ, আত্মবিশ্লেষণ এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে নব- নব পদ্ধতিতে তৃণমূল কংগ্রেস, প্রিয় বাংলা তথা প্রাণপ্রিয় রাজ্যবাসীর ভবিষ্যৎকে আরও সুন্দর ও উন্নততর করার লক্ষ্যে এগোতে থাকবে। আর তার কণ্ঠ হয়ে মানুষের দরবারে প্রভাতের প্রথম রশ্মির সঙ্গে উপস্থিত থাকবে ‘জাগোবাংলা’।

একুশে জুলাই শহিদ স্মরণের সঙ্গে সঙ্গে জননেত্রীর বার্তা নিয়ে গোটা তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার চরৈবেতির মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে এগিয়ে চলবে। মানুষের এই বিপুল সমর্থন আমাদের যেমন দায়িত্ববান করে তুলছে তেমনই কর্তব্যপালনে করছে বদ্ধপরিকর। তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার সর্বদা মা-মাটি- মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ।


 

 

Previous articleদেশকে নেতৃত্ব দেবেন মমতা, বাংলা চালাবেন অভিষেক, একুশের মঞ্চে বললেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
Next articleএকুশের মঞ্চ থেকে দিল্লির শাসনভার পরিবর্তনের ডাক প্রতিমা মণ্ডলের