ব্যর্থ ডবল ইঞ্জিন সরকার! গোয়েন্দা সতর্কতায় পাত্তা দেয়নি হরিয়ানা পুলিশ, মণিপুরে ৬ হাজারেরও বেশি Zero FIR

দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা, শিশু-সহ ২৫০০ জন স্থানীয় একটি মন্দিরে আশ্রয় নেন। একদিন পরে তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ।

একের পরে এক ব্যর্থতার ছবি বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে। মণিপুরের (Manipur) হিংসার মধ্যেই হরিয়ানায় (Haryana) বাড়ছে গোষ্ঠী সংঘর্ষ। এর মধ্যেই উঠে আসছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের চরম উদাসীনতা আর গাফিলতির চিত্র। কারণ, দুক্ষেত্রেই গোয়েন্দা সতর্কতা ছিল। কিন্তু পাত্তা দেয়নি রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। মঙ্গলবারই শীর্ষ আদালত বলে দিয়েছে, মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। একই পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে হরিয়ানাও। একটি ধর্মীয় মিছিল ঘিরে সংঘর্ষ থেকে হিংসা ছড়াচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। নতুন করে মঙ্গলবার রাতে গুরুগ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে। এর জেরে রাজধানী দিল্লিতেও (Delhi) সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মণিপুরের মতোই হরিয়ানার নুহ-তে ধর্মীয় মিছিল ঘিরে যে অশান্তি ছড়াতে পারে, সেই বিষয়ে আগেই গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু সেকথায় কান দেয়নি হরিয়ানার বিজেপি-পুলিশ।

হরিয়ানার নুহ-তে ধর্মীয় মিছিলকে ঘিরে অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ২জন হোমগার্ড ও এক ইমাম-সহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪১টি FIR দায়ের হয়েছে। সোমবার ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’র আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সম্প্রতি বজরং দলের স্বঘোষিত গোরক্ষক মনু মানেসার স্যোশাল মিডিয়ায় একটি ‘আপত্তিকর’ ভিডিও পোস্ট করেন। যা ভাইরাল হয়। গুজব রটে তিনি ওই মিছিলে থাকবেন। সেই কারণে ওই এলাকা দিয়ে মিছিল যেতে বাধা দেয় এক গোষ্ঠী। স্বঘোষিত গোরক্ষক মনু ও তাঁর সহযোগীরা একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত। গরুর ব্যবসায়ী দু জনকে খুনের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এহেন মনুর মিছিলে থাকার খবর স্বভাবতই উত্তেজনা ছড়ায়। কারণ, তিনি নিজেই স্যোশাল মিডিয়ার ভিডিওতে ধর্মীয় যাত্রায় থাকার চ্যালেঞ্জ ছোড়েন। উস্কানিমূলক ভিডিও ভাইরাল হলেও নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। এই পরিস্থিতির কথা নুহ এলাকার CID-র জেলা ইনস্পেক্টর বিশ্বজিৎ আগেই জানান স্থানীয় পুলিশকে। তাঁর কথায়, আগেই এই অশান্তির আঁচ করে সতর্ক করেছিল তাঁর দফতর। মিছিল ঘিরে সংঘর্ষ ছড়াতে পারে আশঙ্কা করে ১৩০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মোতায়েনের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। ১০দিন আগে থেকে পুলিশ-প্রশাসনকে এই নিয়ে সমস্ত তথ্য দিয়ে সতর্ক করা হয়। বিশ্বজিৎ জানান, তাঁদের দেওয়া তথ্যে গুরুত্ব না দিয়ে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা ভেবেছিলেন, সাধারণ ভিড় অনায়াসেই সামাল দেওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মনুকে মিছিলে দেখার পরেই অশান্তি ছড়ায় বলে সূত্রের খবর। মিছিল লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন একদল যুবক। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা, শিশু-সহ ২৫০০ জন স্থানীয় একটি মন্দিরে আশ্রয় নেন। একদিন পরে তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ।

নুহ-র কংগ্রেস বিধায়ক চৌধুরী আফতাব আহমেদ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। সঠিক সময় পদক্ষেপ করা হলে এই অবস্থা হত না।

এদিকে, গত ৩ মাসে মণিপুরে জাতি সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জন নিখোঁজ। তাঁরা জীবিত বা মৃত- কোনও হদিস নেই। পুলিশ সূত্রে খবর, নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের হওয়ার পর তল্লাশি চালিয়েও এখনও পর্যন্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। মণিপুরে ৬ হাজারেরও বেশি জিরো এফআইআর (Zero FIR) দায়ের হয়েছে। এই মণিপুরেও জাতি সংঘর্ষ নিয়ে আগাম গোয়েন্দা সতর্কতা ছিল। কিন্তু কান দেয়নি বিজেপি সরকার। তার মাশুল গত তিনমাস ধরে দিচ্ছেন মণিপুরের মানুষ। আর কবে টনক নড়বে! বিজেপির ডবল ইঞ্জিনের সরকারের ঢক্কানিনাদই যে সার, তা মণিপুরের পরে হরিয়ানায় প্রমাণিত। তারপরেও ‘নীরব’ মোদি।

 

 

 

 

 

Previous articleফের রাজ্যে বিনিয়োগ পিয়ারলেসের, এক ছাদের তলায় রিটেল-অফিস-আবাসন ‘ট্রায়াম’ বানানোর ভাবনা
Next articleপোশাক নিয়ে কটা*ক্ষের শি*কার একতা, কী পরে মন্দিরে গেলেন জিতেন্দ্র কন্যা!