পায়ে পায়ে ২৫! লোকগানের ডালি নিয়ে ট্রামে চড়ে শহর পরিক্রমা দোহারের

এদিন গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোয় জমায়েতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদযাপন। তারপর গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে শ্যামবাজার পর্যন্ত চলে এই ট্রামযাত্রা।

মানুষের জন্য মানুষের গান। বরাবর এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে একের পর এক মাটির গান গেয়েছে তাঁরা। আর মাটির সেই গানই মন ছুঁয়েছে সমস্ত বাঙালির। না, শুধু বাঙালি বললে ভুল হবে। বাংলার আঙিনা ছাড়িয়ে বহু আগেই ভিন দেশের মানুষদের কাছেও যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে সেই দলের গান। আর মানুষের জন্য গান সেখানে মানুষের পাশাপাশি লোক সঙ্গীতে (Folk Song) ব্যবহারযোগ্য একাধিক ইন্সট্রুমেন্ট খুঁজে এনে মাটির গানকে আরও বেশি মনোগ্রাহী করে তুলেছে তাঁরা। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন বাংলা ব্যান্ড দোহারের (Dohar) কথা বলা হচ্ছে। দেখতে দেখতে অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ২৫-এ পা দিল বাংলার এই লোকগানের দলটি। আর এই বিশেষ দিনেই এবার বড় পদক্ষেপ দোহারের। তবে সোমবার দল ২৫ বছরে পদার্পণ করলেও দিনটি উদযাপনের তোড়জোড় শুরু আগেভাগেই হয়ে গিয়েছিল। এদিন মহানগর সাক্ষী থাকল সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। ট্রামে (Tram) চড়ে লোক গানের ডালি নিয়ে সফর শুরু ‘দোহার’-র।

এদিন গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোয় জমায়েতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদযাপন। তারপর গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে শ্যামবাজার পর্যন্ত চলে এই ট্রামযাত্রা। সঙ্গে ছিল দলের কলাকুশলীদের মন মাতানো একাধিক মাটির কাছের গান। তবে নিজেদের দলের ২৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে কেন ট্রামকে বেছে নেওয়া হল? উত্তরে দলের তরফে রাজীব দাস জানান, কলকাতায় এখন ট্রাম প্রায় বিলুপ্তির পথে। ট্রামের রুট ক্রমশ ছোট হতে হতে এখন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। তবে ট্রামের সঙ্গে ‘দোহার’-র এই যোগাযোগ যদিও নতুন নয়। ২০০২ সালে ‘বাংলার গান, শিকড়ের টান’ অ্যালবাম উদ্বোধনের সময়েও একটি সুসজ্জিত ট্রামেই যাত্রা করেছিল ‘দোহার’। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী তথা বিধায়ক অদিতি মুন্সি, বাউল, ফকির ও লোক শিল্পীরা।

তবে লোকসঙ্গীতের মূল ধারাকে বিগত দু’যুগ ধরে সাধারণ মানুষের মন ছুঁয়েছে দোহার। বলা ভালো একেবারে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। তবে সাধারণ মানুষ এখনও পর্যন্ত দোহারকে ‘কালিকাদার গানের দল’ বলেই চেনেন। বছর ছয়েক আগেই কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যের অকাল মৃত্যুতে বাংলার পাশাপাশি শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা রাজ্য। এরপর দোহারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তারপরই তারপর রাজীবের নেতৃত্বে কালিকাপ্রসাদের পতাকা কাঁধে তুলে এগিয়ে চলেন বাকি সদস্যরা। এদিন দোহারের অভিভাবক পূরবী ভট্টাচার্য বলেন, বাংলার লোকসঙ্গীতের আন্দোলনে দোহার একটি বিশেষ নাম। লোকসঙ্গীতের প্রাণপুরুষ কালিকাপ্রসাদ যে মহান কাজ শুরু করেছিলেন সেই কাজ অর্ধসমাপ্ত করে রেখে গেলেও তাঁর তৈরি করা দোহার ২৫ বছরে পদার্পণ করল। আমি আগামীদিনে দোহারের সাফল্য কামনা করি।

 

 

 

Previous articleভেবে দেখেছেন সব কোম্পানির ব্লেডের নকশা কেন একইরকম?
Next articleবেলেঘাটা শুঁড়া সার্বজনীনে ৮২ বছরের চমক ‘দ্য এড্রেস’