Thursday, December 18, 2025

ফের বঞ্চনা! বাংলার ১ লক্ষ প্রবীণের বার্ধক্যভাতা বন্ধ করল মোদি সরকার

Date:

Share post:

ফের বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। ১০০ দিনের কাজ সহ অন্যান্য প্রকল্পে বিপুল টাকা আটকে রাখার পর এবার রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ প্রবীণের বার্ধক্য ভাতা বন্ধ করলো মোদি সরকার। নির্দিষ্ট কোটা মেনে এই অর্থ সাহায্য দেওয়া হতো কেন্দ্রের তরফে। তবে হঠাৎ কেন সেই টাকা বন্ধ করা হলো তার কোন ব্যাখ্যা দেয়নি কেন্দ্র। তবে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, কিছু উপভোক্তার এখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ না হওয়াকে ‘অজুহাত’ খাড়া করে কোটা কমিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।

গত তিন বছর ধরে রাজ্যের কয়েক কোটি মানুষকে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের অধীনে মাসে ১০০০ টাকা করে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পঞ্চায়েত, সমাজকল্যাণ, কৃষি সহ বিভিন্ন দফতরের আওতাধীন জয় জোহার, তফসিলি বন্ধু, বিধবা ভাতা, মানবিক, ওল্ড এজ পেনশন, বয়স্ক তাঁতিদের পেনশন, বয়স্ক শিল্পীদের পেনশন, বয়স্ক মৎস্যজীবীদের পেনশন এবং বয়স্ক কৃষকদের পেনশন প্রকল্পকে ‘জয় বাংলা’র মাধ্যমে এক ছাতার তলায় আনা হয়। যেখানে বেশিরভাগ খরচ হয় রাজ্যের কোষাগার থেকেই। এঁদের মধ্যে পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে যাঁরা বার্ধক্য, বিধবা এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ভাতা পান, সেই টাকার একাংশ দেয় কেন্দ্র।

কেন্দ্র অবশ্য রাজ্যগুলিকে এই টাকা দেয় ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের (এনএসএপি) অধীনে। সেক্ষেত্রে হিসেবটা হল বাংলার ক্ষেত্রে এক হাজার টাকার মধ্যে রাজ্য সরকার দেয় ৭০০ টাকা। বাকি ৩০০ টাকা দেয় কেন্দ্র। শুধুমাত্র ৮০ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য কেন্দ্র দেয় ৫০০ টাকা। গত কয়েক বছর ধরে এক্ষেত্রে রাজ্যের কোটা ছিল ২০.৬৭ লক্ষ। অর্থাৎ, এই সংখ্যক ভাতাপ্রাপক আছেন ধরে নিয়ে সেই হিসেবে অর্থ বরাদ্দ করত কেন্দ্র। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের একটি কিস্তি এবং ২০২৩-২৪’র প্রথম কিস্তি একসঙ্গে করে মোট ৪২২ কোটি টাকা এই খাতে সম্প্রতি রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের জন্য নতুন কোটা বেঁধে দিয়ে জানানো হয়েছে, এবার থেকে রাজ্যের ১৯.৭১ লক্ষ উপভোক্তার জন্য এনএসএপি’র টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ, এক ধাক্কায় রাজ্যের এক লক্ষ প্রবীণের বার্ধক্যভাতা বন্ধ করে দেওয়া হল কেন্দ্রের তরফে।

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবর্ষের শুরুতেই এনএসএপি’র উপভোক্তাদের আধারের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র। সেই নিয়মের জেরে সমস্যায় পড়েছেন কিছু উপভোক্তা। প্রায় পাঁচ শতাংশ উপভোক্তা এখনো আঁধার সংযুক্তি করেননি। তার জেরে এই উপভোক্তাদের ইন অ্যাক্টিভ উপভোক্তা বলে ধরে নিয়েছে কেন্দ্র। আর সেই অজুহাতেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কোটা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ রাজ্য। নবান্নের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা আগের কোটা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখব।” পাশাপাশি এই ঘটনাকে বাংলার প্রতি বৈমাতৃসুলভ আচরণ হিসেবে দেখছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষকে প্যাঁচে ফেলতে এটাও কেন্দ্রের এক কৌশল। মানুষই এর জবাব দেবে।”

spot_img

Related articles

নিউটাউনের ঝুপড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যার পর...

বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ: বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে...

২২ জানুয়ারি থেকে শুরু ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা, ভার্চুয়ালেও মিলবে মেলার স্বাদ

আর দেড় মাসের অপেক্ষা। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। বইপ্রেমীদের জন্য এ...

যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা-কাণ্ডে শোকজের জবাব জমা তিন শীর্ষ কর্তার

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শোকজের জবাব জমা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ক্রীড়া...