‘আমি ভালো নেই’, ফোনে মাকে জানিয়েছিলেন যাদবপুরের ছাত্র স্বপ্নদীপ

বুধবার রাতেও ফোন করেছিলেন নদিয়ার বাড়িতে।মাকে বলেছিলেন, ‘আমি ভালো নেই।খুব ভয় করছে। তুমি শীঘ্রই এসো, তোমার সঙ্গে অনেক কথা রয়েছে’। ছেলের কথায় মায়ের ‘ভয়’ হয়। ফের ফোন করেন স্বপ্নদীপ মণ্ডলের ফোনে। কিন্তু আর ফোন তোলেননি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডু ।পরে ফোন যায় বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি স্বপ্নদীপ।

আরও পড়ুনঃযাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের রহস্যমৃ.ত্যু!আত্মহ.ত্যা নাকি খু.ন?

বৃহস্পতিবার সকালে যাদবপুরের একটি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর। এই মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মানতে নারাজ স্বপ্নদীপের মামা অরূপ কুণ্ডু। তিনি জানান, বুধবার রাতেও মাকে ফোন করে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন স্বপ্নদীপ।তারপরই এই ঘটনা। তাই ভাগ্নের রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে ‘র‌্যাগিং’-এর অভিযোগ তুলে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়েও অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার তদন্তে তৈরি করেছেন নিজস্ব কমিটি।

স্বপ্নদীপের মামা অরূপ কুণ্ডুর দাবি, ‘‘ও আত্মহত্যা করেনি। যে ভাল ছেলে, সে কী ভাবে হঠাৎ মারা যায়। ও পাগল নয়।’’ সেইসঙ্গে ‘র‌্যাগিং’-এর অভিযোগ উস্কে তিনি বলেন, “চিকিৎসক একটা কাগজে সই করালেন। তাতে লেখা, স্বপ্নদীপের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। র‌্যাগিং অবশ্যই হয়েছে। র‌্যাগিং না হলে কী করে হয়?’’ যদিও এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই স্বপ্নদীপের মামার।তিনি বলেন, সোমবারও ক্লাসে গিয়েছেন স্বপ্নদীপ।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় স্নাতকের ক্লাস করতে ভাল লাগছিল স্বপ্নদীপের। তিনি। বাবাকে ফোন করে সেকথা জানিয়েছিলেন স্বপ্নদীপ। তবে হস্টেলে রুম পাননি তিনি। তাই বন্ধুর সঙ্গেই একটা ঘরে থাকতে হচ্ছিল স্বপ্নদীপকে।

হস্টেলের অন্য পড়ুয়াদের দাবি, বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁরা ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান। তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বপ্নদীপ। উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কাছের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে। এর পর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ঘটনার তদন্ত চেয়েছেন অরূপ। তিনি চিঠিতে স্বপ্নদীপের মাকে ফোনের কথা জানিয়ে দোষীদের শাস্তিও দাবি করেছেন। অরূপের আবেদন, ‘‘আমাদের বাচ্চা চলে গেল, আর কোনও বাচ্চার মায়ের কোল যাতে খালি না হয়!’’
অরূপের অভিযোগের পরেই যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই মৃত্যু অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় হস্টেলের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Previous articleমুম্বইয়ে নামী সংস্থার CEO অপহরণ, অভিযুক্ত শিণ্ডের শিবসেনার বিধায়ক পুত্র
Next articleমধ্যরাতে ভিক্টোরিয়ার কাছে মডেলের গাড়িতে তাণ্ডব, ধৃত৫