আসানসোলের মেয়ের হাতে রোভার প্রজ্ঞানের স্টিয়ারিং! উচ্ছ্বসিত রিমা ঘোষের পরিবার

রিমা জানালেন, "প্রজ্ঞান আমার সন্তানের মতো। নিজের সন্তানকে চাঁদের মাটিতে হাঁটতে দেখছি। এই অনুভূতি বলে বোঝানো যায় না।"

চাঁদমামার বাড়িতে কাজে ব্যস্ত ভারতের রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। প্রতিমুহূর্তে বিক্রম ল্যান্ডারের(Lander Vikram) সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে কাজ করে চলেছে সে। এই যন্ত্র পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় নয় বটে। ইসরোর (ISRO)গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। আর এই কাজের কাণ্ডারি আসানসোলের মেয়ে রিমা ঘোষ (Rima Ghosh)। তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-এর এক দায়িত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। রোভারটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঘোরাঘুরি শুরু করেছে, সেই প্রজ্ঞানকে কন্ট্রোল করছেন রিমা ও তাঁর টিম। মেয়ের এহেন কীর্তিতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত পরিবার। বাবা জানাচ্ছেন, মেয়ে বরাবরই দূরদর্শী, খুব বড় লক্ষ্য নিয়ে কেরিয়ারের পথে এগিয়েছে। চন্দ্রযান ৩-এর (Chandrayaan-3)সাফল্য তারই প্রমাণ।

ভারতের মুকুটে নয়া পালক জুড়েছে চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্য। বিক্রমের অবতরণ থেকে প্রজ্ঞানের বেরিয়ে আসা সবটাই নির্বিঘ্নে হয়েছে। সম্পূর্ণ অজানা অচেনা এই দক্ষিণ গোলার্ধ নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহলের কোনও শেষ নেই। তাই এখানে প্রতি পদে পদে কোন কোন বিপদ লুকিয়ে আছে সেই নিয়ে চাপা টেনশন কাজ করছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের মনে। রোভার কাজ শুরুর পর বেঙ্গালুরু থেকেই রিমা জানালেন, “প্রজ্ঞান আমার সন্তানের মতো। নিজের সন্তানকে চাঁদের মাটিতে হাঁটতে দেখছি। এই অনুভূতি বলে বোঝানো যায় না।” রিমা আসানসোলের হিলভিউ এলাকার বাসিন্দা। বাবা চন্দন কুমার ঘোষ কন্যাপুর পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষক ছিলেন। মা অসুস্থ। ভাই কুন্তল ঘোষ আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করেন। দিদিকে নিয়ে গর্বিত কুন্তল বলছেন, “এটা সারা দেশের গর্ব। আমার দিদি খুব কষ্ট করে কাজ করেছে। বিক্রম ল্যান্ডার (Lander Vikram) এবং প্রজ্ঞান রোভারের (Rover Pragyan) উপর বিশেষভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে এই ১৪ দিন ধরে প্রজ্ঞান রোভার যে ডাটা কালেক্ট করবে, মিনারেল কালেক্ট করবে, আরও নানা তথ্য সংগ্রহ করবে, তার নিয়ন্ত্রণ করছে দিদিদের টিম।”

রিমা বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় আসানসোলের মধ্যে সেকেন্ড টপার হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে লা মার্টিনিয়ার কলেজে পড়াশোনা করেন হায়ার সেকেন্ডারি পর্যন্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম টেক করেন। এরপর টেকনো ইন্ডিয়াতেও বেশ কিছুদিন চাকরি করছেন। তারপর পরীক্ষায় পাশ করে ইসরোতে যোগ দেন। এখন তিনি খুব ব্যস্ত। আগামী ১৪ দিন কঠিন সময়, সেই অধ্যায় পেরিয়ে পুজোর সময় আসানসোলে ফিরবেন রিমা।

 

Previous articleএশিয়া কাপ দেখতে কি পাকিস্তান যাচ্ছেন বিসিসিআই সভাপতি? মুখ খুললেন নিজেই
Next articleএকাধিকবার রাজ্যের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বাজি কারখানায় বি*স্ফোরণ, আরও কড়া হচ্ছে প্রশাসন