সমকামী মেয়ে আর একটি মেয়ের সঙ্গে ঘর বাধতে চায়। তবে এই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাবা, মা। আপত্তির জেরে যুবতীর বাবা, মাকে কাউন্সেলিং করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তারপরও মেয়ের এমন সম্পর্ক মেনে নিতে নারাজ ছিলেন দম্পতি। এই পরিস্থিতিতে ওই দম্পতির আপত্তি উড়িয়ে সমকামী যুগলকে(Lesbian Couple) একত্রবাসের অনুমতি দিল দিল্লি হাইকোর্ট(Delhi HighCourt)। সম্প্রতি এমন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সুরেশকুমার কাইত এবং বিচারপতি নীনা বনসলের ডিভিশন বেঞ্চ। এ প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই তরুণী সাবালিকা। তাঁর বয়স ২২, তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আছে। নিজের পছন্দের মানুষের সঙ্গে বাঁচার অধিকার রয়েছে। এখানে বাবা মায়ের আপত্তি ঠিক নয়।
মেয়ে সমকামী এটা জানার পর তীব্র আপত্তি তুলেছিল মেয়েটির বাবা-মা। চেষ্টা চলছিল জোর খাটিয়ে ওই যুগলকে আলাদা করার। এই পরিস্থিতিতে সঙ্গীর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন অপর তরুণী। আদালতে তিনি জানান, বাবা-মায়ের জন্য তাঁর সঙ্গী পছন্দের মানুষের সঙ্গে থাকতে পারছেন না। এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় গত ২২ অগস্ট হাই কোর্ট রায় দেয়, মেয়ের ‘ইচ্ছে’ বোঝার জন্য ওই বাবা-মায়ের কাউন্সেলিং করানো হোক। পাশাপাশি ওই তরুণীকেও কাউন্সেলিং করানোর কথা বলে আদালত। কিন্তু ২৯ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানিতে ওই দম্পতি অভিযোগ করেন, তাঁদের মেয়েকে ক্রমাগত ভুল বোঝাচ্ছেন তাঁর ‘সঙ্গী’। তা ছাড়া তাঁরা এ-ও জানা যে, সমকামের বিষয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু এই বিষয়টি তাঁরা মেনে নিতে অক্ষম। অন্য দিকে, ওই তরুণী জানান, তিনি কোনও ভাবেই সঙ্গীকে ছেড়ে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাবেন না। তিনি সঙ্গীর সঙ্গেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে আদালত রায় দিয়েছে, ওই যুগল নিজেদের পছন্দ মাফিক মানুষের সঙ্গে থাকতে পারবেন। এবং তাঁরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারেন, তা দেখার জন্য স্থানীয় থানাকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এই প্রসঙ্গে দিল্লি হাই কোর্ট পর্যবেক্ষণ, “ওই যুগলের নিজেদের পছন্দের জীবন যাপন করার অধিকার আছে। তাঁদের অভিরুচি মাফিক তাঁরা থাকতে পারেন। পরিবার-পরিজন হোন বা বাইরের কেউ, জোর খাটিয়ে বা চাপ দিয়ে ওই যুগলকে আলাদা করতে পারেন না।”