রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার সকালে ধর্নায় বসেছেন প্রাক্তন উপাচার্যেরা। রাজভবনের উত্তর গেটের কাছে ধর্নায় বসেন উপাচার্যদের সংগঠন ‘দ্য এডুকেশনিস্ট’স ফোরাম’। রাজ্যপালের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন তাঁরা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শিক্ষায় নৈরাজ্য তৈরির চেষ্টার অভিযোগ প্রাক্তন উপাচার্যদের। প্রাক্তন উপাচার্যদের এই ধর্নায় সামিল সুবোধ সরকার, শিবাজিপ্রতীম বসুরাও।রাজ্যপালের বিরুদ্ধে উচ্চ শিক্ষায় অচলাবস্থা তৈরির অভিযোগ এনেছেন তাঁরা। এরই পাশাপাশি রাজ্যপালের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তেরও সমালোচনায় সরব হয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্যরা। গত ৩-৪ মাস ধরে উচ্চ শিক্ষায় অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে, এর জেরে পড়ুয়াদের ভর্তি প্রক্রিয়াও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে মনে করেন তাঁরা।

তাঁদের বক্তব্য, সংবিধান মেনে চলুন রাজ্যপাল। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘আইন মেনে কাজ করুন। আইন মেনে উপাচার্য নিয়োগ করুন।’’ পরে রাজভবনের উত্তর গেটে গিয়ে পুলিশের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা।

ধর্না কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবারই বিবৃতি দিয়েছিল ওই সংগঠন। তাতে জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনা প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি মিথ্যা কথা বলেছেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরমে উঠেছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যপালের একটি ভিডিও বার্তা এই দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজভবন থেকে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার জন্য চাই উপাচার্য। বাংলার শিক্ষা মন্ত্রক উপাচার্য নিয়োগ করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের নির্দেশের সমালোচনা করে সেই সিদ্ধান্তকে বেআইনি আখ্যা দেয়। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের পরই সমস্ত উপাচার্যকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে এক জন আচার্য হিসাবে আমি অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করি। যা নিয়ে সমস্যার শুরু। ওই নিয়োগকে শিক্ষা মন্ত্রক বলেছিল ভুল। কিন্তু হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, আমিই ঠিক।’’

ওই ভিডিও বার্তায় রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, কেন আমি সরকার মনোনীত উপাচার্যকে নিয়োগ করিনি। তাঁদের আমি পদত্যাগ করতে বলিনি। তাঁরাই ভয় পেয়ে পদত্যাগ করেছিলেন।’’ রাজ্যপালের এই বার্তা প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টা পরই একটি বিবৃতি দিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় উপাচার্যদের ফোরাম।
